নোয়াখালী প্রতিনিধিঃ নোয়াখালীর সদর উপজেলায় এক বিএনপির নেতাকে গুলি করে কুপিয়ে নির্মম ভাবে মধ্যযুগীয় কায়দায় হত্যার অভিযোগ উঠেছে ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় কিছু নেতাকর্মির বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় আরও অন্তত দুইজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
নিহত হারুনুর রশীদ মোল্লা (৪৫) উপজেলার আন্ডারচর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এবং একই ইউনিয়নের ৩নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম মাইজচরা গ্রামের মৃত নছিবুল হকের ছেলে।
শুক্রবার (১৩ আগস্ট) রাত টার দিকে উপজেলার আন্ডারচর ইউনিয়নের ৩নম্বর ওয়ার্ডের চৌকিদার হাটের পশ্চিমে তালতলা নামক স্থানে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতের ভাই আমিনুল হক জানান, গত কয়েক দিন আগে নিহতের ছেলে সজিবের সাথে ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় কয়েকজন যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মির সাথে বাকবিতন্ডা হয়। এ তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে ১৫-২০ জনের সংঘবদ্ধ অস্ত্রধারীরা আজকে সন্ধ্যার পর থেকে স্থানীয় চৌকিদার বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে সজিবকে হত্যার উদ্দেশ্যে খুঁজতে তাকে। সজিবের বাবা বিএনপি নেতা হারুনুর রশীদ মোল্লা এ খবর পেয়ে ছেলেকে বাঁচানের জন্য মোটরসাইকেল নিয়ে রাত পৌনে ৮টার দিকে স্থানীয় চৌকিদার বাজারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। যাত্রা পথে তিনি স্থানীয় তালতলা নামকস্থানে পৌঁছলে অস্ত্রধারীদের মুখোমুখি পড়ে যান। এ সময় অস্ত্রধারী রিয়াদ,নাফিস,ইউসুফসহ ১৫-২০জন সন্ত্রাসী তাকে গুলি করে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে পেটের নাড়ি ভুড়ি বের করে হত্যা করে। এ সময় তার সাথে তার ভাতিজা রমিজ উদ্দিনকে (২৫) এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে সন্ত্রাসীরা। তবে তার আরেক ভাই ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে প্রাণে রক্ষা পায়। এরপর স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক বিএনপি নেতা মোল্লাকে মৃত ঘোষণা করে। মারাত্মক আহত অবস্থায় তার ভাতিজা রমিজ নোয়াখালী সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
জানা যায়, গিয়াস উদ্দিন নামে এক হামলাকারীও আহত অবস্থায় নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তবে সে কিভাবে আহত হয়েছে এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক কিছু জানা যায়নি।
উল্লেখ্য, নিহত হারুনুর রশীদ মোল্লা ২০১১ সালে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে আন্ডারচর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ছিলেন এবং ২০১৬ সালে তিনি ধানের শীষ প্রতিক নিয়ে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেন।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক সৈয়দ মহিউদ্দিন আবদুল আজিম বলেন, হারুনুর রশিদ মোল্লাকে নিহত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। ওই ঘটনায় আরো দুই জন আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
নোয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো.আকরামুল হাসান হত্যাকান্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি আরও জানান, বিষয়টি পুলিশ খতিয়ে দেখছে। পরে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।
আপনার মতামত লিখুন :