নিজস্ব প্রতিবেদক : টঙ্গীতে র্যাবের নির্যাতনে আসাদুল ইসলাম আসাদ (৪৫) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। মুন্সিগঞ্জের টঙ্গীবাড়ি থানার হাসাইল গ্রামের এই বাসিন্দা এরশাদনগর ৫নং ব্লকের পরিবার নিয়ে বসবাস করে স্থানীয় একটি গাড়ির গ্যারেজ পরিচালনা করতেন।
নিহতের স্ত্রী জেসমিন আক্তার জানান, দুপুর ১টার দিকে র্যাব পরিচয়ে ৬-৭জন ব্যক্তি এরশাদনগর ৫নং ব্লক কবরস্থানসংলগ্ন তাদের টিনশেড বাড়িতে প্রবেশ করে। পরে মাদক আছে এমন সংবাদে পুরো বাড়িতে তল্লাশি চালায় র্যাব সদস্যরা। এর কিছুক্ষণ পর বাড়িতে র্যাবের পোশাক পরিহিত আরও একটি দল প্রবেশ করে। মাদকের তথ্য জানতে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত ঘরের ভেতর আসাদকে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা নির্যাতনের পর আমার স্বামী অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে নিয়ে যায় তারা।
নিহতের ছেলে নিহাদ বলেন, বাবাকে যখন মারধর করা হচ্ছিলো তখন আমাকে পাশের রুমে আটকে রাখা হয়। র্যাব সদস্যরা আমাকে মেরে ফেলবে এমন হুমকি দিয়ে বাবার কাছ থেকে তথ্য জানতে চায়। কিন্তু আমার বাবা বরাবরই মাদকের সঙ্গে জড়িত না বলে র্যাব সদস্যদের জানান। এ সময় র্যাবের সদস্যরা পাশের রুম থেকে আমাকে চিৎকার করার পরামর্শ দেয় যেন বাবা ভয়ে স্বীকারোক্তি দেয়। নির্যাতনের একপর্যায়ে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে অচেতন অবস্থায় বাবাকে র্যাব গাড়িতে করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
এদিকে আসাদের মরদেহ টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে আনা নেওয়া হলে নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী বিক্ষোভ করে র্যাব সদস্যদের বিচার দাবি করেন।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসক নুসরাত বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। এ সংক্রান্ত বিষয়ে এখনই কিছু বলা যাবেনা। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে আসাদুল মারা গেছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। নিহত ব্যক্তির শরীরে বাহ্যিক কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তবে ময়নাতদন্তের পর তাঁর মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
র্যাব-১ এর সিইও আব্দুল্লাহ আল মোমেন বলেন, আসাদুল ইসলাম আসাদ একজন মাদক বিক্রেতা। তিনি একজনের কাছে মাদক বিক্রি করেছেন সেই সূত্রে তার বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। অভিযানের সময় তিনি র্যাব সদস্যদের সঙ্গে হাতাহাতির চেষ্টা করেন। র্যাবের দুই জন সদস্যও আহত হয়েছে। হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন আসাদুল।
আপনার মতামত লিখুন :