ঢাকা : রাজধানী ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে কক্সবাজার বেড়াতে গিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক নারী। স্বামী-সন্তানকে জিম্মি করে হত্যার ভয় দেখিয়ে তাকে ধর্ষণ করেন তিন যুবক। ওই ঘটনায় হোটেলের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে দুজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। যখন ওই নারীকে ছুরির ভয় দেখিয়ে টেনে সিএনজিতে তোলা হয় তখন তিনি চিৎকার করেন। আশপাশে লোকজনও ছিল। সেই অবস্থায় মুখ চেপে ধরে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে তিন যুবক। এগিয়ে আসেনি কেউ। প্রকাশ্যে দেশের অন্যতম পর্যটন এলাকায় এমন ঘটনায় ক্ষোভ আর নিন্দায় সোশ্যাল মিডিয়া ফুঁসে উঠেছে। অনেকের বক্তব্য এক বিন্দুতে এসে ঠেকছে আর তা হলো “বয়কটকক্সবাজার” দেশের অন্যতম পর্যটন এলাকা অনিরাপদ কেন? কক্সবাজারের নিরাপত্তাব্যবস্থা এমন কেন?’।
ভ্রমণ গ্রুম্প ট্র্যাভেলার্স অফ বাংলাদেশে হাসান রাকিব নামে একজন লিখেছে, আমাদের দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটন স্পটের কথা বলতে গেলে সবার প্রথমেই আসবে কক্সবাজারের নাম। সেই হিসেবে সবচেয়ে নিরাপদ জায়গার নাম হওয়ার কথা ছিলো কক্সবাজার এবং সেন্টমার্টিন, যদি আমার ভুল না হয় কিছুদিন আগেও সেন্টমার্টিনে স্থানীয় লোকজন দ্বারা কিছু ইয়াং ছেলেদের মারা হইছে। আমরা যারা টুকটাক ট্রাভেল করি তাদের মেইন প্রায়োরিটি থাকে যদি নিরাপত্তা বর্তমানে সেই নিরাপত্তা স্পষ্ট নয় । আমাদের নিরাপত্তার দায়িত্ব যেমন প্রশাসনের তেমনি সেখানকার স্থানীয় মানুষদের। নিজের/ নিজের ফ্যামিলির নিরাপত্তার চেয়ে ভ্রমণ জরুরি না। যে স্থানে স্থানীয় মানুষ (সবাই না) ক্ষমতা দেখায় সেইটা আর যাই হোক পর্যটন স্পট হইতে পারে না।
আজ যারা পর্যটকদের সাথে এমন কুকুরের মত আচরন করতেছে তাদেরও পেট চলে আল্লাহর রহমতে আমাদের মত পর্যটকের টাকায়। আর তারা আমাদের অভ্যর্থনা জানায় ৪০০ টাকায় আলু ভর্তা ভাত দিয়ে। তারা আমাদের হেনস্থার শিকার করতেছে, চাইলে আপনিও পারেন তাদেরকে মানুষের মত মানুষ করে দিতে। কক্সবাজারে সরাসরি পর্যটন শিল্পের ব্যবসার সাথে যারা জড়িত তাদের সারা বছর চলে নভেম্বর টু মার্চের ইনকাম দিয়ে, এখন চিন্তা করেন যদি এই সিজন টায় আমরা ১৫ টা দিন কক্সবাজার ভ্রমণ বন্ধ রাখি তাদের কি অবস্থা হবে!! এই ১৫ টা দিনেই আমরা পাইতে পারি ভবিষ্যতের নিরাপদ কক্সবাজার। কাউকে যখন দিতেই থাকবেন সে ব্যাকষ্টোরি ভুলে যাবে একটু প্লেট টা টান দিয়ে ষ্টোরিটা মনে করিয়ে দেওয়া আমাদেরই দায়িত্ব। অনেকেরই এখানে ভালো অভিজ্ঞতা থাকতে পারে কক্সবাজার নিয়ে তারা প্লিজ কিছু বলতে আইসেন না কারন পরবর্তিবার হয়তো আমি/ আপনি!
প্রকৌশলী রাফিউজ্জামান সিফাত নামে একজন লিখেছে,যদি সত্যি কিছু করতে চান, প্রাথমিক ধাপে কক্সবাজার বয়কট করুন। ছয় মাসের জন্য। কেউ যাবেন না। কেউ না। দেশের কোন পর্যটক আগামী কয়েক ছয় মাস কক্সবাজার ভ্রমনে যাবেন না।বিশ্বাস করেন পরিস্থিতির খানিকটা সমাধান হবে। মায়ের ভালোবাসা ছাড়া পৃথিবীর আর সব কিছুই অর্থনৈতিক। টাকার ফ্ল বন্ধ করে দিন। কক্সবাজার হোটেল মালিক, রেস্টুরেন্টস ব্যবসায়ী, বিচ তদারকির ইজারাদার, পরিচ্ছন্ন কর্মী, ফটোগ্রাফার, পরিবহন শ্রমিক, কক্সবাজার গামী বাস, বিমান সেক্টর , কক্সবাজারের নেতাখেতা, ওদের প্রশাসন একদম সিদা হয়ে যাবে। করোনার সময় হাতে পায়ে ধরে ৫০-৭০% ছাড়ে লোক ডেকেছে,একবার পরিবারের নিরাপত্তার ইস্যুতে কক্সবাজার বয়কট করুন।ছয়টা মাস। কেউ কক্সবাজার যাবেন না।কক্সবাজারের হোটেল মালিক নিজে হারিকেন হাতে দাঁড়িয়ে পর্যটকদের নিরাপত্তা দিবে।নিজেদের ব্যবসার স্বার্থে ওদের স্টাফরা রাস্তার মোড়ে মোড়ে দাঁড়িয়ে পর্যটকদের সেফটি নিশ্চিত করবে।কক্সবাজার প্রশাসনকে ওরা বাধ্য করবে দায়িত্ব পালনের। ঢাকা টু কক্সবাজার গামি বাস, প্লেন মালিক, হোটেল সায়মন, টিউলিপ থেকে শুরু করে বিচের চেয়ার ব্যবসায়ী, ঘোড়ার মালিক, বাটপার ফটোগ্রাফার, কলাতলি লাবনির ছোট ছোট দোকানদার সব পাগল হয়ে যাবে।
ওরাই বাধ্য করবে প্রশাসনকে নিরাপত্তার। আপনার স্ত্রী সন্তান ওদের হোটেল রুমে কিংবা হোটেলের পাশে একশবার রেপড হইলে ওদের কোন বিকার হবে না, কিন্তু এক সিজনে এক লাখ কম পর্যটক হইলে ব্যবসায়ীদের পিছনের লাল সুতা বেরিয়ে যাবে।ব্যর্থ প্রশাসনকে তারাই তখন বাধ্য করবে প্রশাসনিক দায়িত্বটা ঠিকঠাক পালন করতে। ওদের পেটের নিজেদের তাগিদে ওরা আপনার নিরাপত্তার নিশ্চিত করবে। কিন্তু কাজটা এক বা দুইজনের করলে হবে না, দলগত ভাবে সবার সিদ্ধান্তে আসতে হবে। আমার পরিবারের নিরাপত্তা সবার আগে। আগে আমার নিরাপত্তা নিশ্চিত করো, তারপর আমি তোমার স্থানে আসব। এর আগে না। একবার যদি উদ্যোগটা নেয়া যায় কেবল কক্সবাজার না, অন্যান্য পর্যটন স্পটগুলো একটা সতর্ক বার্তা পেয়ে যাবে। ছয়মাস “বয়কট কক্সবাজার ” না গেলে তো আপনি আর মারা যাবেন না, আর যদি গিয়ে থাকেন তবে পরবর্তী আপনার পরিবার কিংবা আমার পরিবার স্বীকার হবে নাহ আর নিশ্চয়তা কিহ….! পেটে লাথি পড়লে যত বড় তালেবর হোক জিব্বা এক হাত বের করে ক্যোঁৎ ক্যোঁৎ শব্দ করে। পরিবারের সেফটির জন্য ওদের টাকার ফ্লোতে একটা কষে লাথি লাগাতে পারবেন না!।
শামিম নামে একজন লিখেছে, জানুয়ারীতে প্লান ছিলো বন্ধুরা মিলে কক্সবাজার যাবো কিন্তু না!।মেহেরপুরের যারা প্লান করেছেন ফ্যামেলী নিয়ে কক্সবাজারে যাবেন তারা আজই পরিবর্তন করুন ঘুরতে যাওয়ার স্থান কক্সবাজার সিন্ডিকেট কে রুখে দিন। বয়কট করুন যেখানে আপনার ও আপনার ফ্যামেলীর নিরাপত্তা নেই। বিজয়ের ৫০ বছরে এসেও,বিজয়ের মাসে স্বামীর সাথে কক্সবাজারে ঘুরতে গিয়ে ধর্ষিত হয় ।তাও পালাক্রমে ধর্ষণ করে।।যেখানে ডাল – ভাত এর দাম ৪০০ যেখানে ৫০০ টাকার হোটেল ভাড়া ১৫ হাজার। ১০ টাকার আটো ভাড়া ১০০ টাকা ১৫ টাকার পানি ২৫ টাকা আমরা সকলে মিলে বয়কট করি কক্সবাজার কে। লজ্জিত বাংলাদেশ।
চট্টগ্রামে বসবাসকারী একজন নারী ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, যেই হোটেলে তাদের চেক ইন ছিল, তাদেরও আওতায় আনা দরকার। ইনফরমেশন সেখান থেকেই গেছে। ধাক্কার ব্যাপারটা সম্পূর্ণ নাটক। আর কক্সবাজার এখন মাদকের স্বর্গরাজ্য। এমন অনেক ঘটনা অহরহ ঘটছে সেখানে। লাইমলাইটের আড়ালে থাকে বলে উঠে আসছে না।
একজন লিখেছেন, দেশটা ধর্ষকের স্বর্গরাজ্য হয়ে গেছে। বিচারহীনতার সংস্কৃতি এভাবেই দেশকে গ্রাস করে ফেলে। ইয়াবা সম্রাট বদিরা যখন আমাদের আইনপ্রণেতা হন, তখন দেশের কাছে আমাদের আর কী-ই বা চাইবার আছে!।
অধিকাংশ নেটিজেনই মন্তব্য করছেন, ‘কোন দেশে আছি।’ অনেকেই বলছেন, ‘পর্যটন এলাকায় যদি ভালো নিরাপত্তাব্যবস্থা না থাকে তাহলে মানুষ যাবে না। পর্যটনশিল্প মুখ থুবড়ে পড়বে। গণমাধ্যমের ‘সংবাদ’ লিংক নিজেদের ফেসবুকে শেয়ার দিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন নেট নাগরিকরা।
একজন লিখেছেন, ‘গায়ে ধাক্কা দিয়ে ঝগড়া, তারপর ছিনতাই এটা বহু বছর ধরে চলছে। এটা এখন ধর্ষণ পর্যন্ত চলে গেছে। এভাবে চলার চেয়ে বন্ধ করে দেউলিয়া হোক পর্যটনশিল্প।
আরেকজন লিখেছেন, কক্সবাজার একটা ডাকাতির বাজার, মানুষ দেশের বাইরে যাবে না তো কী করবে। এ দেশের পর্যটন সুবিধা বস্তির মানের।
ভুক্তভোগী ওই নারী বলেন, আমার স্বামী হাতে-পায়ে ধরে মাফ চাইছে। কারণ আমার স্বামী অতটা চালাক-চতুর না, সরল-সোজা মানুষ। আমার স্বামী কইছে, ভাই আমরা অন্য জায়গা থেইকা আইছি আমারে মাফ কইরা দেন। তার ৫ মিনিট পর একটি সিএনজি নিয়া আইসা তারা আমারে টাইনা উঠায়ে ফেলাইছে। তখন বাস থিকা অনেকগুলা লোক নামছে। দুইবার চিৎকার করছি। করার সময় একজন মুখ ধরছে, আরেকজন হাত ধরছে, তারপরে মুখ বাইন্ধা ফেলছে। তারপর ভাঙ্গচোরা রাস্তা দিয়া চিপাচাপার মধ্যে নিয়া গিয়ে তিনজন আমারে রেপ করছে।
এরপর তাকে নেওয়া হয় জিয়া গেস্ট ইন নামে একটি হোটেলে। সেখানে ইয়াবা সেবনের পর আরেক দফা তাকে ধর্ষণ করে ওই তিন যুবক। ঘটনা কাউকে জানালে সন্তান ও স্বামীকে হত্যা করা হবে জানিয়ে রুম বাইরে থেকে বন্ধ করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে তারা।
ওই নারী আরো জানান, জিয়া গেস্ট ইনের তৃতীয় তলার জানালা দিয়ে এক যুবকের সহায়তায় কক্ষের দরজা খোলেন তিনি। তারপর ফোন দেন ৯৯৯-এ। পুলিশ তাকে থানায় সাধারণ ডায়রি করার পরামর্শ দেয়। পরে তাদের র্যাব উদ্ধার করে।
আপনার মতামত লিখুন :