নিজস্ব প্রতিবেদক,নারায়ণগঞ্জঃ নারায়ণগঞ্জ জেলায় প্রশাসকের কার্যালয়ের রাজস্ব প্রশাসন বিভাগে মিউটেশন/নাজির/সায়রাত সহকারী/অফিস সহকারী/সাটিফিকেট পেশকার/সার্টিফিকেট সহকারী/ড্রাইভার পদে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারী তারিখে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবার কথা। কিন্তু জেলা প্রশাসক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এই নিয়োগে প্রায় ১০ (দশ) কোটি টাকার বাণিজ্য করতে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
একটি সূত্র থেকে জানা গেছে, ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে কর্মরত নাজির কামরুল ইসলাম ও সিএ আনোয়ার হোসেন এর মাধ্যমে এরই মধ্যে এই অর্থ গ্রহণ করতে শুরু করেছেন। এটি চলতে থাকলে জেলা প্রশাসক বদলী হওয়ার পূর্বে এই নিয়োগ হতে প্রায় ১০ (দশ) কোটি টাকা হাতিয়ে নেবার সুযোগ গ্রহণ করতে পারেন তারা। সূত্র থেকে জানাগেছে ৬ জন ড্রাইভার পদেও প্রায় ৭০ থেকে ৮০ লক্ষ টাকা বাণিজ্য করছেন এই সিন্ডিকেট।
এসিল্যান্ড অফিসে যে সব ড্রাইভার কাজ করছেন তাদের কাছ থেকে ১০লক্ষ টাকা করে নাজির কামরুল ও আনোয়ারের মাধ্যমে গ্রহণ করার কথা জানিয়েছে সূত্রটি।
জানা গেছে, নিয়োগ পরীক্ষার মূল কেন্দ্র নারায়ণগঞ্জ কালেক্টরেট প্রিপারেটরী স্কুল এবং নারায়ণগঞ্জ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি জেলা প্রশাসক নিজে হওয়ার কারণে উক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের সহযোগিতায় নির্ধারিত প্রার্থীদের লিখিত পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নাম্বার দিয়ে এবং ব্যবহারিক পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নাম্বার দিয়ে ভাইবা বোর্ডে প্রেরণ করবেন। আর এর মূল দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব)/ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক)/ডিডিএলজি/আরডিসি এবং এনডিসি সহ নেজারত শাখার নাজির কামরুল এবং সিএ আনোয়ার।
অভিযোগ উঠেছে, নিয়োগ বোর্ডের সদস্যসচিবকে ইতিমধ্যে তারা ম্যানেজ করে ফেলেছেন এবং যেহেতু নিয়োগ বোর্ডের সদস্যসচিব জুনিয়র অফিসার তাই এই চক্রের কাজ করতে কোন সমস্যা হবেনা। রাজস্ব বিভাগের সিএ আনোয়ার এর বড় ভাই আক্তার হোসেন বিভাগীয় কমিশনার যিনি ঢাকা বিভাগের সিএ হিসেবে কর্মরত রয়েছেন; যার ফলে কাজ করতে আরও সহজ হবে বলে জানা গেছে।
প্রশ্ন উঠেছে যে, যারা ৩০/৪০ লক্ষ টাকা দিয়ে চাকুরী নিবেন তাদের দিয়ে সাধারণ মানুষ কি সুবিধা পাবেন। বিজ্ঞমহল মনে করেন, নিয়োগ প্রক্রিয়াটি স্বচ্ছ ও দুর্নীতিমূক্ত করতে হলে পরীক্ষাগুলো কমিশনার, ঢাকা বিভাগ, ঢাকার কার্যালয়ে গ্রহণ করতে হবে। তা না হলে এই নিয়োগে জেলা প্রশাসকের চক্রটি সফল হবে। অভিযোগ রয়েছে, ইতিপূর্বে রাজস্ব প্রশাসনে ৪জন অফিস সহায়ক নিয়োগে এই চক্র ৩০ লক্ষ টাকা করে নিয়ে প্রায় দেড় কোটি টাকা বানিজ্য করেছেন। গত জানুয়ারি ২০২৩ মাসে এই চক্রটিই ডিডিএলজি ও কামরুল নাজিরে মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ৩জনকে নিয়োগ দিয়ে প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। অনুসন্ধান করলেই এর সত্যতা বেরিয়ে আসবে বলে বিজ্ঞ মহল মনে করছেন।
সঠিক তদন্তের জন্য উক্ত সূত্র থেকে দেওয়া একটি চিঠিতে বিভাগীয় কমিশনার নিজে তদারকি করে দুইজন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনারকে দায়িত্ব প্রদানের মাধ্যমে ঢাকায় পরীক্ষা গ্রহণ এবং উক্ত নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বচ্ছ এবং সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করে যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়ার অনুরোধ করা হয়। এ বিষয়ে জানতে বিভাগীয় কমিশনার মোঃ খলিলুর রহমান এবং তাঁর একান্ত সচিব এসএম আবু দারদাকে মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করলেও ফোন রিসিভ করেননি।