চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : টেকনাফ মডেল থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও তার স্ত্রী চুমকির বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলার অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। একইসঙ্গে পলাতক চুমকি কারণের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেয়া হয়েছে।
বুধবার চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মুনসী আবদুল মজিদ এ আদেশ দিয়েছেন। দুদকের আইনজীবী মাহমুদুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, বুধবার দুদকের মামলায় প্রদীপ কুমার দাশ ও তার স্ত্রী চুমকির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি চুমকি পলাতক থাকায় নতুন করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হবে। প্রদীপের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন বিচারক। আগামী ১৭ জানুয়ারি সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। এ সময় প্রদীপ কুমার দাশ আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, প্রদীপ ও তার স্ত্রীর নামে থাকা সম্পত্তি ইতিপূর্বে আদালত ক্রোক করেছেন। চট্টগ্রাম নগরীর পাথরঘাটায় থাকা ছয়তলা বাড়ি, ষোলশহরের বাড়ি, একটি করে কার ও মাইক্রোবাস এবং কক্সবাজারের একটি ফ্ল্যাটে রাষ্ট্রের তত্ত্বাবধানে রিসিভার নিয়োগ করা হোক।
গত বছরের ২০ সেপ্টেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রদীপ-চুমকির মালিকানায় থাকা চার কোটি টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন আদালত। প্রদীপ ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে চার কোটি ছয় লাখ ৭৮ হাজার ৭৯ টাকার সম্পদ অর্জন করে স্ত্রীর নামে হস্তান্তর ও স্থানান্তর করেছেন- এ অভিযোগে দুদক তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিল।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৩১ জুলাই টেকনাফের বাহারছড়া তল্লাশি চৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান। এ ঘটনায় তার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস বাদী হয়ে কক্সবাজারের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রদীপসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এরপর অসুস্থতার কথা বলে থানা থেকে ছুটি নিয়ে চলে যান প্রদীপ। তিনি চট্টগ্রামে আত্মগোপনে থাকেন। সেখান থেকে ৬ আগস্ট কক্সবাজার আদালতে গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন তিনি। তারপর থেকে প্রদীপ কারাগারে আছেন।
সিনহা হত্যা মামলায় প্রদীপসহ ১৫ আসামির বিরুদ্ধে রোববার অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আদালত। বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের নির্দেশে প্রদীপ, তার স্ত্রী, কক্সবাজারের পুলিশ সুপারসহ আটজনের ব্যাংক হিসাব স্থগিত করা হয়েছে।
গত ২৩ আগস্ট দুদক চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক রিয়াজ উদ্দিন বাদী হয়ে প্রদীপ ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করেন।
এজাহারে বলা হয়, প্রদীপের বাবা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (চউক) একজন নিরাপত্তাপ্রহরী ছিলেন। ১৯৯৫ সালে উপ-পরিদর্শক (এসআই) পদে যোগ দেন প্রদীপ। ২০০২ সাল থেকে তার সম্পদগুলো দৃশ্যমান হতে থাকে। নানা কারণে তিনি আলোচিত হতে থাকেন।
আপনার মতামত লিখুন :