বিশেষ প্রতিবেদকঃ দূর্নীতির দায়ে বরখাস্ত হওয়া রাজউক কর্মচারী ও দালালদের হামলায় রক্তাক্ত হয় কর্মকর্তারা।
গত ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর প্রতিষ্ঠানটিতে ব্যাপক তান্ডব চালায় কিছু দুস্কৃতিকারী। তাদের হামলা ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাত্রা এখন চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে।
রাজউক সূত্রে জানা যায় আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৬আগস্ট মঙ্গলবার রাজউক কর্মকর্তাদের দপ্তরে ধারাবাহিক হামলা ও ভাংচুর চালানো হয়। দালাল ও দূর্নীতিপরায়ন কর্মচারীরা বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের টার্গেট করে প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। হামলার প্রথম শিকার হন রাজউকের উপপরিচালক (প্রশাসন-২) এর উপর।
এই হামলায় নেতৃত্ব দেন দুদকের মামলায় বরখাস্তকৃত রাজউকের অফিস সহকারী বেলাল হোসেন চৌধুরী রিপন। রাজউকের উপপরিচালক প্রশাসন-২ এর ওপর হামলা করে তাকে মারাত্মকভাবে আহত করে। হামলায় তার মূখ , চোখ ও মেরুদন্ড মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিষয়টি রাজউক কর্তৃপক্ষকে জানানো হলে কর্তৃপক্ষের নির্দেশে উক্ত কর্মকর্তার চিকিৎসার জন্য অন্য কর্মকর্তাদের সহায়তায় রাজউক ভবন ত্যাগ করার ব্যবস্থা করেন। বর্তমান তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
হামলাকারী কর্মচারী বেলাল হোসেন চৌধুরী রিপন তার পেটোয়া বাহিনী নিয়ে পরবর্তিতে বিভিন্ন দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের অফিস কক্ষে হামলা করে ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে।
এছাড়া প্রতিটি দপ্তরে অকথ্য ভাষায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গালিগালাজ করে। এ ঘটনায় রাজউকে প্রত্যেক পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে আতংক ছড়িয়ে পরেছে। রিপনের হামলায় গুরুতর আহত কর্মকর্তা একজন সংখ্যালঘু সম্পদায়ের। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বলেন, “আমাকে মালাউন আখ্যা দিয়ে রিপন তাকে দেশ ত্যাগ করতে বলেছে। বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বেলাল হোসেন চৌধুরী রিপন বলেন, আমি ছাত্রদল করেছি।
২০২৪ এর নির্বাচনের আগে আমাকে বিএনপি-জামায়াতের লোক হিসেবে তালিকায় নাম দিয়েছেন ওই কর্মকর্তা। তার জন্য দালালি না করতে সাংবাদিককে সাবধান করেন রিপন। নিজেকে বিএনপি নেতা রফিকুল আলম মজনুর অনুসারী দাবি করে রিপন আরো বলেন, আমার জন্ম পল্টনে। আমি ছাত্রদল করা লোক। ওরে মারছি এজন্য তিনশো লোক আমার জন্য দোয়া করেছে”। পরে তিনি আবার দাবি করেন, ” ওই কর্মকর্তাকে মারছে জনগন”। রিপনের অভিযোগ, ওই কর্মকর্তা দুদকের ওপর প্রভাব খাটিয়ে দুর্নীতির মামলায় তার বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে। এজন্যই তাকে শাস্তি দিয়েছেন বলেও স্বীকার করেন রিপন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বেলাল হোসেন রিপনের আতংকে তারা অফিসে যেতে পারছেন না। তাদের নিরাপত্তা না দিলে এই রাজউকের মতো প্রতিষ্ঠানে কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়বে। এতে সদ্য শপথ নেয়া অন্তর্বতীকালীন সরকারের মহৎ উদ্দেশ্য ভেস্তে যেতে পারে বলেও মনে করেন তারা।
আপনার মতামত লিখুন :