নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাঃ বর্তমানে পুরোনো গাড়িবহর দিয়ে প্রতিমাসে প্রায় ১২ কোটি টাকা বেতন-ভাতা নিয়মিত পরিশোধ করে অন্যান্য উন্নয়নমূলক কাজসহ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করার কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন-বিআরটিসি চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম। সোমবার (১৯ আগস্ট) বিআরটিসি ভবনে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময়কালে তিনি এ তথ্য জানান।
প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় চার চ্যালেঞ্জের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, দুর্নীতিবিরোধী চলমান প্রয়াস অব্যাহত রাখার মাধ্যমে তা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা, বিআরটিসি বহরে থাকা সকল গাড়ি সচল রাখা, নিয়মিত বেতন-ভাতা দেওয়া এবং প্রতিষ্ঠানের ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা বাড়াতে চাই। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ৩৪০টি অত্যাধুনিক এসি বাস আসার প্রক্রিয়া কিছুটা বিলম্বিত হতে পারে বলে জানিয়ে বিআরটিসি চেয়ারম্যান বলেন, প্রকল্পটির পরামর্শক নিয়োগের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
সাম্প্রতিক ক্ষয়ক্ষতির হিসাব তুলে ধরে তিনি বলেন, দুটি ইউনিট ভাঙচুরের কারণে আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৪২টি বাস ও ১১টি ট্রাক ভাঙচুর করায় আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত। ৪টি বাসে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে গত ৫ আগস্ট পর্যন্ত মোট আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৩ কোটি ৮০ লাখ ৮৩ হাজার ৫০০ টাকা।
গত ৭ আগস্ট থেকে সকল বাস অনরুট করার কথা জানিয়ে প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান মোঃ তাজুল ইসলাম বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেও যথাসময়ে বেতন পরিশোধ করা হয়েছে। সার্বিক বিবেচনায় বিআরটিসিতে কোন শ্রমিক অসন্তোষ না থাকার কথাও জানান তিনি।
বিআরটিসি চেয়ারম্যান মোঃ তাজুল ইসলাম আরো জানান, গত তিন বছরে মেরামতকৃত গাড়ির সংখ্যা বাড়লেও এ খাতে প্রায় ২৬ কোটি টাকা ব্যয় সাশ্রয় করা হয়েছে। এই সময়ে সিপিএফ বাবদ ২৮ কোটি ৮১ লাখ ৩৯ হাজার টাকা, গ্র্যাচুইটি বাবদ ৩৭ কোটি ২৭ লাখ ৬৮ হাজার টাকা ও ছুটি নগদায়ন বাবদ ২ কোটি ৭৩ লাখ ১১ হাজার টাকা নিজস্ব তহবিল থেকে শোধ করা হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানের সকল ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে দুর্নীতি আগের তুলনায় বহুলাংশে নামিয়ে প্রায় শূণ্যের কোঠায় আনা হয়েছে এমন দাবি করে বিআরটিসি চেয়ারম্যান প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা ও সেবা খাতের সক্ষমতার বিভিন্ন দিকসহ ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরেন। ৫ ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার মধ্য রয়েছে, নতুন বাস ও ট্রাক বহরে যুক্ত করা, সকল জেলায় বিআরটিসির বাস পরিচালনা, চেসিস ক্রয় করে প্রতিষ্টানের নিজস্ব কারখানায় গাড়ি তৈরী, ডিপো ও ট্রেনিং সেন্টার ব্যবস্থাপনায় অটোমেশন সিস্টেম চালু করাসহ প্রশিক্ষণ ও ওয়ার্কশপের কার্যক্রম আরও আধুনিকায়ন করা। ৩ বছরে গাড়ির সংখ্যা ৮৮৫ থেকে এক হাজার ১৯৮ টিতে উন্নীত করা হয়েছে বলেও মতবিনিময়কালে জানান বিআরটিসি চেয়ারম্যান মোঃ তাজুল ইসলাম।
আপনার মতামত লিখুন :