• ঢাকা
  • বুধবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ০২:০১ পূর্বাহ্ন

ঢাকার নবাবগঞ্জে অতর্কিত হামলায় কলেজ শিক্ষার্থী আহত


প্রকাশের সময় : ফেব্রুয়ারী ১৫, ২০২৩, ৮:৪৫ অপরাহ্ন / ৭৬
ঢাকার নবাবগঞ্জে অতর্কিত হামলায় কলেজ শিক্ষার্থী আহত

মো.মাইনুল ইসলাম,নবাবগঞ্জ,ঢাকাঃ ঢাকার নবাবগঞ্জের শিকারিপাড়া গ্রামের নিজ বাড়ীতে ফাহিম ইয়াসির (১৮) নামের এক কলেজ শিক্ষার্থী পূর্ব শত্রুতার জেরে মারধরের শিকার হয়।তার বাবা আমজাদ হোসেন নবাবগঞ্জ তোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী কলেজের সহকারী অধ্যাপক। ফাহিম তোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী কলেজের মানবিক শাখার দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত ১৭ জানুয়ারি মঙ্গলবার ঘটনার সময় তার বাবা বাড়িতে ছিল না। ফাহিম বাড়িঘর পরিষ্কার করছিল এ সময় পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ফাহিমের চাচাতো দাদা আকবর আলী ও চাচাতো ভাই ইমরান হোসেন দীপ্ত সহ অজ্ঞাতনামা আরো দুই তিন জন মিলে ফাহিমের ওপর অতর্কিতভাবে হামলা চালায়। ভারী অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে বেধড়ক মারধর করে। ফাহিমের আর্তচিৎকারে আশেপাশের লোকজন ছুটে এসে তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে নবাবগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ ভর্তি করে। খবর পেয়ে তার মা-বাবা বাড়িতে ছুটে আসেন। আমজাদ হোসেন তার চাচা আকবর আলীর কাছে তার ছেলেকে মারধরের বিষয় জানতে চাইলে তাকে নিজ ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখেন। পরবর্তীতে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় আমজাদ হোসেন উদ্ধার হয়। এ ঘটনায় নবাবগঞ্জ থানার বারুয়াখালী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে মৌখিক অভিযোগ করেন আমজাদ হোসেন। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঘটনার সত্যতা পান। ফাহিমের বাবা আমজাদ হোসেন জানান, শিকারি পাড়া তার পৈতৃক ভিটা বাড়ি। আমার পার্শ্ববর্তী এলাকার লস্কর কান্দা গ্রামে আমার আরেকটি বাড়ি রয়েছে। আমার পরিবারসহ আমি উভয় বাড়িতে বসবাস করে আসছি। এমতাবস্থায় আমার বড় ভাই ইমারত হোসেন ও আমার চাচা আকবর আলী হিংসা ও লোভের বশবর্তী হয়ে দীর্ঘদিন ধরে আমার পৈতৃক ভিটা বাড়ি দখলের অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এরই জের ধরে আমার চাচা আকবর আলি ও আমার বড় ভাইয়ের ছেলে ইমরান হোসেন দীপ্ত আমার ছেলে ফাহিম এর উপর অতর্কিত হামলা চালায়। আমি অন্যত্র বাড়ি করায় আমার ভাই এমারত হোসেন ও চাচা আকবর আলী আমার সম্পত্তি দখলের উদ্দেশ্যে বিভিন্নভাবে আমাকে হয়রানি করে আসছে। এ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে উপজেলা ও ইউপি চেয়ারম্যান সহ গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে কয়েক দফা বিচার সালিশ বৈঠক হয়। কিন্তু আকবর আলী বিচার সালিশের কোন তোয়াক্কা করে না। আকবর আলী একজন দুষ্ট প্রকৃতির লোক। তিনি আমাদের ভাইদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে আসছে। এমন কি আমাকে আকবর আলী বিভিন্ন মাধ্যমে প্রাণনাশের হুমকি ধামকি দিয়ে আসছে।এবং সবশেষে আমার ছেলেকে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যেই সঙ্ঘবদ্ধভাবে হামলা চালিয়েছে। এমতাবস্থায় আমি সপরিবারে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমজাদ হোসেনের মা ফারজানা বেগম কান্না স্বরে এই প্রতিবেদককে বলেন, আমার বড় ছেলে এমারত হোসেন আমার স্বামী ইছব আলীকে অসুস্থ অবস্থায় ডাক্তার দেখানোর নাম করে নিয়ে গিয়ে আমাদের বসত বাড়ীর সাত শতাংশ জমি প্রতারণামূলকভাবে নিজ নামে দলিল করে নেয়। আমার স্বামী বয়োবৃদ্ধ, সহজ সরল ও অসুস্থ হওয়াতে তখন কিছুই বুঝে উঠতে পারেনি। জমি লিখে নেয়ার পর থেকে আমার ও আমার স্বামীর উপরে আরো অবহেলা, লাঞ্ছনা ও তুচ্ছ তাচ্ছিল্যতা শুরু করে এমারত হোসেন ও তার স্ত্রী। আমার স্বামীর কোন চিকিৎসাও করায়নি। অবশেষে আমজাদ আমাদের কষ্ট দেখে তার কাছে নিয়ে আসে এবং আমজাদ ও তার স্ত্রী আমাদের ভরণ পোষণ,সেবা যত্ন ও চিকিৎসার দায় দায়িত্ব গ্রহণ করেন। আজ পর্যন্ত আমি আমজাদ এর কাছেই আছি। মেয়েরা বলেছে,আমার মা যার কাছে আছে তাকেই আমরা আমাদের সম্পত্তি দলিল করে দিয়ে গেলাম। আমার চাচা আকবর আলী সমস্ত ঝামেলার মূল কারণ। আমজাদের সম্পত্তি দখলের উদ্দেশ্যেই ১৭ই জানুয়ারি আমার ভাতিজা ফাহিমকে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে আক্রমণ করে আহত করেন আমার চাচা আকবর আলী। আহত ফাহিম বলেন, আমার উপর আমার চাচাতো দাদা আকবর আলী ও চাচাতো ভাই ইমরান হোসেন দীপ্ত অতর্কিতভাবে হামলা করে আমাদের ঘর থেকে কাগজপত্রের একটা বাক্স ছিনিয়ে নেয়। যার ভেতর বাড়ির মূল দলিল, নামজারির কপি, অনলাইন খাজনার কপি সহ আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টস ছিল। এ ব্যাপারে আমার বাবা আমজাদ হোসেন বাদী হয়ে বিজ্ঞ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (নবাবগঞ্জ) আদালত, ঢাকা সি.আর মামলা নং ৫৭/২০২৩ রুজু করেন। আমার পরিবার ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে আমার উপর হামলাকারী আসামিদেরকে আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত বিচারের দাবি জানান। এই প্রতিবেদক এই সমস্ত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আকবর আলী ও ইমরান হোসেন দীপ্ত কে সরেজমিনে ও মুঠোফোনে বারবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করতে পারেনি। অবশেষে তারা নিজেরাই সাক্ষাৎ করে প্রতিবেদককে বিভিন্নভাবে ম্যানেজ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। এ ঘটনার ব্যাপারে নবাবগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন আহমেদ জিলু কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ঘটনাটি শুনেছি আমি শিকারি পাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলিমুর রহমান খান পেয়ারার সাথে এবিষয়ে কথা বলেছি পেরায়া বলেন, আকবর আলী কারো কথাই শুনতে চায় না এবং কোন সালিশ মীমাংসার ওয়াক্কা তোয়াক্কা করেন না। তারা কারো বিচার সালিশ মানতে চায় না।।