এম রাসেল সরকারঃ প্রবাসে বসে ঝগড়াকে কেন্দ্র করে কুয়েত প্রবাসী মোসলেম সরকার (৪২) দেশে আসার পর তার ঢাকার কেরানীগঞ্জের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে ৩ জন।
সোমবার ভোর সাড়ে পাঁচটায় দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানাধীন কোন্ডা ইউনিয়নের ঘোষকান্দা প্রাইমারি স্কুলের সামনে এ ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন, মোসলেম উদ্দিনের ছেলে মুরাদ হাসান (১৯), তার ছোট বোন মুসলিমা (৩২) ও তার বড় ভাবি বিলকিস (৫০)। মুরাদ হাসান বর্তমানে ইকুরিয়া এলাকায় একটি বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন।
জানা যায়, ঘোষকান্দা এলাকার বাসিন্দা আনোয়ারের ছোট ভাই ইসমাইল ও মোসলেম কুয়েতে একসাথে চাকরি করতো। কিছুদিন আগে ইসমাইল দেশে আসার পর পুনরায় কুয়েতে ফিরে গেলে মালিক তাকে আর কাজে রাখিনি। এ ঘটনায় ইসমাইল মোসলেমকে দায়ী করলে, কুয়েতে বসে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এক সপ্তাহ আগে মোসলেম বাংলাদেশে ছুটিতে এসেছে এই খবর পেয়ে ইসমাইলের ভাই আনোয়ার মোসলেমকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে।
এ ঘটনায় মোসলেম আদালতে মামলা দায়ের করলে পুলিশ আনোয়ারকে গ্রেফতার করে। এরপর আনোয়ার জামিনে বেরিয়ে এসে রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে মোসলেমের বাড়িতে গিয়ে হামলা চালায়। এ সময় মোসলেম ট্রিপল নাইনে ফোন করে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে হামলার সত্যতা পেয়ে থানায় পুনরায় অভিযোগ করতে বলে। কিন্তু সকালে থানায় যাওয়ার আগেই ভোর সাড়ে পাঁচটায় পুনরায় আরেক দফা হামলা চালানো হয়। এ সময় মোসলেমের ছেলেকে ছুরিকাঘাত এবং তার বোন ও বড় ভাবিকে মেরে আহত করা হয়।
ভুক্তভোগী মোসলেম বলেন, হামলার সময় আমি ও আমার স্ত্রী এক ঘরে দরজা বন্ধ করেছিলাম। পাশের ঘর থেকে দরজা ভেঙে আনোয়ার ও তার গুন্ডা বাহিনী আমার ছেলেকে বাইরে বের করে এনে রড ও হকিস্টিক দিয়ে মারাত্মক আহত করে এবং সর্বশেষ ছুরিকাঘাত করে। আমার ছেলের চিৎকারে ছোট বোন ও ভাবি তাকে বাঁচাতে গেলে তাদেরকেও মেরে রক্তাক্ত করে। এরপর আমি বাইরে আসলে তারা আমাকে ও আমার স্ত্রীকে মারধর করে এবং ঘরের আসবাবপত্র লুট করে স্টীলের আলমারি ভেঙ্গে সেখানে থাকা এক লক্ষ টাকা ও তিন ভরি স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় সকাল দশটায় থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করলেও দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত কোন পুলিশ ঘটনাস্থলে আসেনি। আনোয়ার এলাকার চিহ্নিত মাদক কারবারি। পুলিশের সাথে সখ্যতা থাকায় পুলিশ কোন ব্যবস্থা নেয়নি। উল্টো জাজিরা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এস আই আনোয়ারকে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানালে মোবাইল ফোনে তিনি রূঢ় আচরণ করেন।
মোসলেম আরও বলেন, রোববার রাতে হামলার পর রাত সাড়ে ১২টায় থানায় গেলে পুলিশ পরদিন সকালে আসতে বলে। রাতের বেলা পুলিশ ব্যবস্থা নিলে হয়তো সোমবার ভোরে এই হামলা হতো না।
এ বিষয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শাহ-জামান জানান, এ ঘটনায় থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আনোয়ার একজন চিহ্নিত মাদক কারবারি। তার নামে একাধিক মামলা রয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :