মো. দীন ইসলাম,ঢাকাঃ র্যাব-৪ এর অভিযানে ঢাকার সাভার থানার রাজাশন এলাকা থেকে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে পোশাক পরিহিত ভুয়া পুলিশসহ ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে গ্রেফতারকৃত হলেন মো. শামীম রেজা (৩০), মো. হেলাল উদ্দিন (৩৫), মো. পারভেজ (২৫), ওয়াসিম ইসলাম (২৫), মো. নাইম খান (২৭) ও মো. ফেরদৌস আহমেদ রাজু (২৯)।
এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারা যায় যে, ঢাকার সাভার মডেল থানারএলাকায় একটি চক্র মাদক ব্যবসা, ডাকাতি, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপারাধ কার্যক্রম পরিচালিত করে আসছে। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৪ এর একটি গোয়েন্দ দল উক্ত চক্রটিকে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য ছায়া তদন্ত শুরু করে।
গত ২৮ অক্টোবর গোপন সংবাদ ও স্থানীয় সোর্সের মাধ্যমে জানা যায় যে, সাভার মডেল থানার পশ্চিম রাজাশন এলাকায় সংঘবদ্ধ ডাকাতদলের কিছু সদস্য ডাকাতির উদ্দেশ্যে অবস্থান করছে। উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল বিকাল ৪ টা থেকে আজ (২৯ অক্টোবর) গভীর রাত পর্যন্ত একটি আভিযানিক দল উক্ত এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাদের কাছে থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত ১ টি পিস্তল, ১ রাউন্ড গুলি, ১ টি নকল পিস্তল, ১ টি পিস্তল টাইপ লাইটার, ১ টি কভারসহ হ্যান্ডকাফ, ১ টি ওয়াকিটকি, ২ সেট পুলিশ ইউনিফর্ম, পুলিশ জ্যাকেট, পুলিশ বেল্ট, ভূয়া পুলিশ আইডি কার্ড, ২ টি রামদা, ১ টি ডেগার, ১ টি চাপাতি, ২ টি ছুড়ি, ২ টি টর্চলাইট, ২ টি রশি, ৪৬৭ পিস ইয়াবা, ৩০ বোতল ফেন্সিডিল, ১.৫ কেজি গাঁজা, ০৭ গ্রাম হেরোইন, ৫ লিটার চোলাই মদ, ১৯ টি মোবাইলসহ নগদ ৪৪,৫৭০/-টাকা উদ্ধার করা হয়। এ বিষয়ে নিশ্চিত করেন র্যাব-৪ এর অধিনায়ক মো. মোজাম্মেল হক।
প্রসঙ্গে, গ্রেফতরকৃত ১ নং আসামী মো. শামীম রেজা কিশোর বয়স থেকেই অপরাধ কার্যক্রমের সাথে জড়িত। তার গ্রামের বাড়ি রাজশাহী। সে গ্রামের একটি স্থানীয় স্কুল থেকে ৮ম শ্রেনী পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে। সে কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে ২০০৫ সালে ঢাকায় আসে। একপর্যায়ে সে নিজে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে এবং মাদক কারবারিদের সাথে মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে সে পর্যায়ক্রমে তার নেতৃত্বে একটি ডাকাত বাহিনী গড়ে তুলে। সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রটি রাতের আধারে পুলিশের ভুয়া ইউনিফর্ম পরিহিত অবস্থায় টর্চ লাইট দিয়ে গাড়ি থামিয়ে টাকা-পয়সা, স্বর্ণ-অলংকার, মোবাইল এবং দামি জিনিসপত্র তার বাহিনীর সদস্যদেরকে নিয়ে লুটপাট করত। জিঞ্জাসাবাদে জানা যায় যে, সে ২৫-৩০ টি অটো রিক্সা ও সিএনজির মালিক। তার নামে অস্ত্র, মাদক ও ছিনতাইসহ একাধিক মামলা রয়েছে। সে নিজেকে পুলিশ বাহিনীর একজন সাব-ইন্সপেক্টর হিসেবে পরিচয় দিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র, দেশীয় অস্ত্র, নকল আগ্নেয়াস্ত্র, নকল আইডি কার্ড, ইউনিফর্ম, ওয়াকি টকি সেট ব্যবহার করে বিভিন্ন মানুষের সাথে প্রতারণা ও চাঁদাবাজি করত। সে সাভার এলাকায় একটি সক্রিয় ডাকাত বাহিনী ও সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছে। জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায়, সে বিভিন্ন সময়ে ভূয়া পুলিশ অফিসার সেজে তার গুন্ডা বাহিনী দিয়ে সাধারণ মানুষকে মিথ্যা ও বানোয়াট ভাবে ফাঁসানোর ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজি করত। গ্রেফতারকৃত সকল আসামীর নামে সাভারসহ বিভিন্ন থানায় চাঁদাবাজি, মাদকসহ একাধিক মামলা রয়েছে।
উল্লেখ্য, র্যাব সুত্রে জানান যায়, গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে ডাকাতির প্রস্তুতি, অস্ত্র, ভুয়া পুলিশ পরিচয়ে প্রতারনা এবং মাদক মামলা প্রক্রিয়াধীন।
আপনার মতামত লিখুন :