নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগে’র কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক লায়ন শেখ আজগর নস্কর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটে ভোট দিয়ে তা নিজের মোবাইল ফোনে ধারন করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আপলোড করে ভোটের গোপনীয়তা ভঙ্গ করেছেন।
আজগর নস্কর ফেসবুকে পোস্টে লিখেন (স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট ইকনোমি, স্মার্ট গভারমেন্ট, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আমার ভোট নৌকায় দিয়েছি, আপনারাও নৌকা মার্কায় ভোট দিন উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখুন.আমাদের দেশ আমরাই গড়বো.)।
নির্বাচনে প্রকাশ্যে ব্যালট পেপার প্রদর্শনের ঘটনা বাংলাদেশের নির্বাচনী ইতিহাসে বিরল। আইনে ব্যালটের গোপনীয়তা রক্ষায় কেউ ব্যর্থ হলে তাঁর ছয় মাস থেকে সাত বছরের কারাদন্ডের বিধান থাকলেও শেখ আজগর নস্কর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিজের ভোটকেন্দ্রে ব্যালট পেপার প্রদর্শন করে আইন ভঙ্গ করেছেন। ৭৭ বিধিতে মনোনয়নপত্র, ব্যালট পেপার ইত্যাদি বিকৃত বা নষ্ট করার শাস্তি সম্পর্কে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি অন্যূন ছয় মাস অনধিক সাত বছর কারাদন্ড দন্ডনীয় হবেন যদি তিনি ভোট কেন্দ্রের বাইরে কোনো ব্যালট পেপার বা ব্যালট পেপার বহি নিজ দখলে রাখেন বা জনসাধারণে উহা প্রদর্শন করেন।
নৌকায় ভোট দেওয়া মৎস্যজীবী লীগের সাধারণ সম্পাদক লায়ন শেখ আজগর নস্করের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে। ৭৮ বিধিতে ভোটের গোপনীয়তা রক্ষায় ব্যর্থতার শাস্তি বর্ণিত আছে। এতে দেখা যায়, ভোট গ্রহণকারী কর্মকর্তারাও অভিযুক্ত হতে পারেন। কারণ, বিধিতে বলা হয়েছে, কোনো রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসার, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার বা পোলিং অফিসার বা ভোট কেন্দ্রে উপস্থিত কোনো প্রার্থী, নির্বাচনী এজেন্ট বা পোলিং এজেন্ট বা ভোট গণনায় উপস্থিত কোনো ব্যক্তি অন্যূন ছয় মাস কারাদন্ডে দন্ডিত হবেন যদি তিনি ভোটের গোপনীয়তা রক্ষা করতে বা তা রক্ষায় সাহায্য করতে ব্যর্থ হন।
আজগর নস্করের এহেন কর্মকান্ডে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধসহ টিআইবিসহ বেশ কিছু সংস্থাকে সরকারের সমালোচনায় সাহায্য যুগিয়েছে। এতে করে বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে বলে মনে করেন সুশীল সমাজ।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে মৎস্যজীবী লীগের কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, আজগর নস্কর সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর থেকেই সংগঠনে একের পর এক বিতর্কের জন্ম দিয়ে যাচ্ছেন এবং ব্যাপক সমালোচনার মুখে রয়েছে সংগঠনটি। তারা আরও বলেন, আজগরের রাজনৈতিক জ্ঞান নেই, বিগত দিনে আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে কোনো সম্পর্ক ছিলনা। আমরা তাকে নিয়ে খুবই বিব্রত।
এ ব্যাপারে আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজগর নস্করের মুঠোফোনে বার বার কল দিলেও তিনি ফোনটি রিসিভ করেননি।
আপনার মতামত লিখুন :