সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ ছাতক দোয়ারার মানুষের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত সুরমা ব্রিজ উদ্বোধনের আগেই ফাটল সৃষ্টি হয়েছে। ১৪০ কুটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত ব্রিজটির ফাটল দেখে এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্টদের নির্মাণকাজে ত্রুটির অভিযোগ তুলে এলাকাবাসী এরইমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্রিজের ফাটলের ছবি দিয়ে সংশ্লিষ্টদের বিচার দাবি করছেন। ব্রিজ নির্মাণের ক্ষেত্রে সাধারণত পিলারগুলো উচ্চক্রম অনুসারে সাজানো হয়ে থাকে। কিন্তু সুরমা সেতুর ক্ষেত্রে মনে হয় এর বিপরীত সূত্র ধরে নির্মাণকাজ করা হচ্ছে। সেতুর ১ম পিলার থেকে নদীর দিকে অগ্রসর ২য় ফিলারের উচ্চতা অন্তত এক থেকে দেড় ফুট নিচে থাকায় এমনটাই মনে হচ্ছে। অভিজ্ঞ প্রকৌশলীদের মতে প্রকৌশল শাস্ত্রের বিপরীতে চলছে সুরমা সেতুর নির্মাণকাজ। প্রকৌশল শাস্ত্র অনুযায়ী একটি ব্রিজ নির্মাণের ক্ষেত্রে ১ম পিলার থেকে ২য় পিলার ক্রম উচ্চতায় অবস্থান করবে। দু’য়ের অধিক পিলার দ্বারা নির্মিত ব্রিজের ক্ষেত্রে ১ম পিলার থেকে ২য় পিলার অন্তত ১ ফুট উচ্চতায় থাকবে। সম্প্রতি এমন ত্রুটি ধরা পড়লে ত্রুটিযুক্ত পিলারের শীর্ষ মুখে গার্ডারের নিচে সিসি ঢালাই দিয়ে ব্রিজের লেভেল করা হয়েছে । ব্রিজের কাজ চলা অবস্থায় জন্মভূমি নির্মাতা’ নামক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ঠিকাদার লুৎফুর রহমান বলেন (২৪-০১-২০১৯ইং) ত্রুটির কথা স্বীকার করে জানান, দুটি প্ল্যানে সুরমা সেতুর প্ল্যানিং করা হয়েছে। যে কারণে সামান্য ত্রুটি দেখা দিয়েছে। গার্ডারের নিচে ঢালাই দিয়ে লেভেল ঠিক করা হয়েছে। বর্তমানে ১ম টি থেকে দ্বিতীয়টি অন্তত ৬ ইঞ্চি উচ্চতায় রয়েছে। এ ত্রুটির জন্য দু’টি ধাপে তৈরি ব্রিজের প্ল্যানিংকেই দায়ী করছেন তিনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রকৌশলী জানান, ইঞ্জিনিয়ারিং প্ল্যান অনুযায়ী ব্রিজের পিলার মিডল পর্যন্ত ক্রমান্বয়ে উঁচু হয়ে যাবে। এ ক্ষেত্রে ১ম পিলার থেকে ২য় পিলারের উচ্চতা হবে নুন্যতম ১ ফুট ৩ ইঞ্চি। গার্ডারের নিচে সিসি ঢালাই দিয়ে লেভেল পূর্ণ করা অনেকটাই ঝুঁকিপূর্ণ। স্থানীয়রা জানান, সস্তা ও নিম্ন মানের কাঁচা মাল এবং প্রকৌশলী / বুয়েটের পরামর্শ ছাড়া কাজ না করায় উদ্বোধনের আগেই ব্রিজে ফাটল সৃষ্টি হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :