মোঃ মানছুর রহমান জাহিদ, পাইকগাছা, খুলনাঃ খুলনার পাইকগাছায় লঘুচাপে টানা বৃষ্টিপাত অন্যদিকে অস্বাভাবিক জোয়ারে আলমতলা ও খুতখালী’র ভাঙন কবলিত পাউবোর বেড়িবাঁধ চরম ঝুকিপূর্ন অবস্থায়। দু’স্থানের ঝুকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ ভেঙে গেলে প্লাবিত হয়ে এলাকাজুড়ে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি’র আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
এ পরিস্থিতিতে বুধবার দুপুরে লস্করের আলমতলা ও গড়ই খালীর খুতখালী’র ভাঙন কবলিত বেড়িবাধ ও শান্তার ঝুকিপূর্ন স্লুইস গেট পরিদর্শন করেন পাউবোর খুলনা বিভাগীয় নির্বাহী প্রকৌশলী-২ মোঃ আশরাফুল আলম, উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ার ইকবাল মন্টু, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আল-আমিন।
এসময় আরোও উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় উপ-সহকারি প্রকৌশলী রাজু হাওলাদার, গড়ইখালী ইউপি চেয়ারম্যান জিএম আব্দুস ছালাম কেরু ও লস্করের ইউপি চেয়ারম্যান কেএম আরিফুজ্জামান তুহিনসহ অনেকে।
পরিদর্শনকালে নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আশরাফুল আলম সংশ্লিষ্ঠ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ডিজাইন অনুযায়ী জরুরি ভিত্তিতে কাজ শুরু করার নির্দেশনা দেন। একই সাথে তিনি আরোও বলেন, এ সময়ের মধ্যে কোন ক্ষয়-ক্ষতি ঘটলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে এর দায়-দায়িত্ব নিতে হবে।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানাগেছে, পাউবোর ১০/১২ পোল্ডারের সুন্দরবন সংলগ্ন শিবসা নদীর ভাঙ্গনে গড়ইখালীর খুদখালীর ৮’শ মিটার বেড়িবাধ ও লস্কর ইউনিয়নের আলমতলায় ৭’শ মিটার বেড়িবাধ দীর্ঘদিনের ভাঙ্গন কবলিত। এর মধ্যে খুদখালির ১০০মিঃ ও আলমতলার ২০০ মিঃ বাঁধ এ মুহুর্তে খুবই ঝুকিপূর্ন অবস্থায় রয়েছে। ইতিপূর্বে ভাঙনের স্থানে সরকারী অর্থায়নে কর্তৃপক্ষ মাটির কাজ, পাইলিং, পাকা ব্লক স্থাপন করলেও তা টেকসই হয়নি। চলিত পূর্নিমায় অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধির ফলে উপজেলার হরিঢালীর মাহমুদকাটি, গদাইপুর ও রাড়ুলীর জেলেপল্লী কপোতাক্ষ নদের ভাঙনে ভেড়িবাধ ভেঙে এলাকা প্লাবিত হয়ে ক্ষয়-ক্ষতি’র ঘটনাও ঘটেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য মোঃ আক্তারুজ্জামান বাবু’র প্রচেষ্টায় চলতি বছরের জানুয়ারিতে জাইকা’র ৫২ কোটি টাকা ব্যয়ে খুতখালি ও আলমতলার নদী ভাঙন রোধ ও টেকসই বাঁধসহ বাইনতলা স্লুইচ গেট নির্মানে টেন্ডার সম্পন্ন হয়। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে এ পর্যন্ত এ প্রকল্পের দৃশ্যমান কোন অগ্রগতি হয়নি। যার ফলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সাধারন মানুষের মধ্যে ক্ষোভ বৃদ্ধি পেয়েছে।
তবে সংশ্লিষ্ঠরা বলছেন, ২০২৪ সালের মধ্যে এ প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আর-রাদ কর্পোরেশনের প্রজেক্ট ইঞ্জিনিয়ার আরাফাত জাহান বলেন, এ মুহুর্তে জরুরি ভিত্তিতে ভাঙ্গন কবলিত খুতখালী ও আলমতলার বেড়িবাঁধে মাটি ও বালুর বস্তা ফেলে ডাম্পিং করা হচ্ছে। তিনি আরোও বলেন, টেন্ডারের পর ভাঙনের দু’টি স্থানে এখন পানির গভীরতা ৩/৪ গুন বৃদ্ধি পেয়েছে। এ পরিস্থিতি’তে বাঁধের কাজ করে ক্ষতি হলে দায়ভার কে নিবে? কাজেই পাউবো’র নতূন ডিজাইন হাতে পেলে দ্রুত কাজ করার কথা বলেন তিনি।
খুলনা-৬ (কয়রা-পাইকগাছা) আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মোঃ আক্তারুজ্জামান বাবু জানান, পরিস্থিতি সম্পর্কে সংশ্লিষ্ঠ মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী মহোদয় ও সচিব’কে অবগত করেছি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাজে ধীরগতি’র কথা তুললে এমপি-বাবু আরোও বলেন, মন্ত্রী ও সচিব দু’জনে ভাঙন ঠেকাতে জরুরী ভিত্তিতে সংশ্লিষ্টদের কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
আপনার মতামত লিখুন :