চট্টগ্রাম অফিসঃ চট্টগ্রামে পরিবহন শ্রমিক ও মালিক সংগঠনের নামে বিভিন্ন পরিবহন থেকে লাখ লাখ টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগ অনেক পুরোনো। সংগঠনগুলোও এত দিন এভাবে চাঁদা নেওয়াকে বৈধতা দিয়ে আসছিল। তবে র্যাব সম্প্রতি কয়েকটি অভিযানে এ ধরনের চাঁদা আদায়ের সঙ্গে জড়িত কয়েকজনকে আটক করে। এর পর থেকে শ্রমিক সংগঠনগুলো চাঁদা তোলা নিয়ে আতঙ্কে রয়েছে।
জানা গেছে, লাইন খরচ, ওয়েবিল ও শ্রমিক কল্যাণের কথা বলে নগরীতে বাস-মিনিবাস, হিউম্যান হলার, টেম্পো, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যানসহ বিভিন্ন পরিবহন থেকে দৈনিক চাঁদা আদায় চলে আসছিল বিভিন্ন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের নামে।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ মুছা বলেন, সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে একটি সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে মালিক-শ্রমিক সংগঠনগুলো নিজেদের খরচ চালানোর জন্য সংগঠনের সদস্যদের কাছ থেকে একটি ন্যূনতম সার্ভিস চার্জ আদায় করতে পারবেন। আমাদের ফেডারেশনভুক্ত ৪৫টি শ্রমিক সংগঠনে ইতিমধ্যে এ নিয়ম চালু করা হয়েছে। এগুলোর বাইরে যাঁরা অন্যায়ভাবে চাঁদা আদায়ে জড়িত তাঁদের দায়ভার আমরা নেব না।
বৃহত্তর চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহন শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সদস্যসচিব উজ্জ্বল বিশ্বাস বলেন, জাতীয়ভিত্তিক শ্রমিক ফেডারেশনের অন্তর্ভুক্ত সংগঠনগুলোই দীর্ঘ সময় ধরে নগরীতে চাঁদাবাজি করে আসছে।
র্যাবের তথ্যমতে, ২১ ও ২৩ আগস্ট বাকলিয়া ও পতেঙ্গায় পৃথক অভিযানে সাতজনকে আটক করা হয়েছে। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে চাঁদা উত্তোলনের তালিকা ও নগদ টাকা জব্দ করা হয়।
সর্বশেষ পতেঙ্গায় অভিযানের বিষয়ে র্যাব-৭-এর মেজর নাসির গতকাল বলেন, প্রতিদিনই কনটেইনার ডিপোগুলোতে ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, মিনি ট্রাকসহ অন্য যানবাহনগুলো মালামাল আনা-নেওয়া করে। এসব যানবাহন যখন আসে তখন পার্কিংয়ের নামে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা চালকদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করছেন।
মেজর নাসির বলেন, তবে তাঁরা কোনো সংগঠন কিংবা প্রভাবশালীর হয়ে চাঁদা আদায় করছে কি না, তা পরবর্তী তদন্তে উঠে আসবে। এ ঘটনায় মামলা করে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে ২১ আগস্ট বাকলিয়া থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও অটো টেম্পোতে চাঁদা-বাণিজ্যে জড়িত পাঁচজনকে আটক করে র্যাব।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আটক ব্যক্তিরা চট্টগ্রাম অটো টেম্পো শ্রমিক ইউনিয়ন নামে একটি সংগঠনের হয়ে চাঁদা উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
মেজর নাসির বলেন, আমাদের সামনে যখনই অপরাধের ঘটনা ঘটছে, তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিচ্ছি।
আপনার মতামত লিখুন :