• ঢাকা
  • সোমবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ১১:০৬ অপরাহ্ন

ঘুষ নিয়েও ঘরভেঙে দেওয়ার অভিযোগ সহকারী বন সংরক্ষকের বিরুদ্ধে


প্রকাশের সময় : ফেব্রুয়ারী ২২, ২০২৩, ১০:২৯ অপরাহ্ন / ৫৩
ঘুষ নিয়েও ঘরভেঙে দেওয়ার অভিযোগ সহকারী বন সংরক্ষকের বিরুদ্ধে

নিজস্ব প্রতিবেদক,কক্সবাজারঃ ঘুষের টাকা ফেরত দিতে ভুক্তভোগোদের আল্টিমেটাম। কক্সবাজার উখিয়া উপজেলার জালিয়া পালং ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের জুম্মা পাড়া এলাকায় ৩০ বছরে পুরনো বশত ঘর ভেঙে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে সহকারী বন সংরক্ষক আনিসুর রহমানের বিরুদ্ধে।

কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের ইনানী রেঞ্জের জালিয়া পালং জুম্মা পাড়া এলাকায় সহকারী বন সংরক্ষক আনিসুর রহমানের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।

ভোক্তভোগীদের অভিযোগ, সহকারী বন সংরক্ষক আনিসুর রহমানের কথা বলে দুই লক্ষাধিক টাকা নিয়ে যায় বিট কর্মকর্তা এবং রেঞ্জ কর্মকর্তার মাধ্যমে।

তারা বলেন, দীর্ঘ ৩০ বছর যাবত বসত করে আসছি এই জায়গায়। বিনা নোটিশে অভিযানের নামে সন্ত্রাসী কায়দায় আমাদের পুরোনো বসতবাড়ি ভেঙে দেয় সহকারী বনসংরক্ষক আনিসুর রহমান। তারা আরো বলেন, আমাদের আশপাশে কোন ধরনের পাহাড় ও কাটা হয়নাই। যেখানে দিনেদুপুরে পাহাড় কেটে বিরান ভূমিতে পরিনত করা হচ্ছে সেই খানে বনবিভাগের কোন ভুমিকা নেই। পাহাড় কাটতে দেখলে মাঝেমধ্যে আমরা ফোন করে বলতে গেলে উল্টো ধমকি দেয় সহকারী বনসংরক্ষক আনিসুর রহমান। স্হানীরা জানান, নিয়মিত পাহাড় খেকোদের কাছথেকে মাসোহারা নেয় বনবিভাগের কর্তারা। পাহাড় খেকোদের কথা মতে কাজ করেন সহকারী বনসংরক্ষক আনিসু রহমান। উখিয়া উপজেলার জুম্মা পাড়া এলাকায় গত (১৩ ফেব্রুয়ারী) অভিযানের নামে সন্ত্রাসী কায়দায় তান্ডবের কথা বলেন, শাহা আলমের স্ত্রী সেলিনা আক্তার, দীর্ঘ ৩০ বছরের পুরোনো ভিটা আমাদের, এই জায়গায় আমার শাশুড় ১৯৯০ সনের দিকে ঘর করে বসত করে আসছে। কোনদিন বনবিভাগের পক্ষ থেকে আমাদেরকে নোটিশ করা হয়নাই? হঠাৎ সহকারী বনসংরক্ষক আনিসুর রহমানের নেতৃত্বে একদল বন করমী এসে আমদের বসতঘর ভেঙে দেয়।

ভোক্তভোগী ছৈয়দ আহমেদের ছেলে আব্দু জব্বার বলেন, আমারা বাপদাদার দখলিয় ভিটা, আমরা সবসময় বনবিভাগকে সহযোগীতা করে আসছি, কে-বা কাদের প্ররোচনায় দীর্ঘ ৩৫ বছরের পুরোনো বসতঘর ভেঙে ফেলে।
আব্দুর রহিমের স্ত্রী রহিমাখাতুন বলেন, আমারা বিগত ৩০ বছর যাবত বসতি করে আসছি। কিছুদিন পূর্বেও মৌখিক ভাবে অভিযানের কথা বলে ৫০ হাজার টাকা নেয় সহকারী বনসংরক্ষক আনিসুর রহমান।

আব্দুল মজিদের স্ত্রী সোফিয়া খাতুন বলেন, আমাদের কত বছরের বসতি সেটা গাছ পালা দেখলে বোঝার কথা, সুপারি বাগানেই প্রমাণিত হচ্ছে কত বছর ধরে বসত করে আসছি।
আব্দুল করিমের স্ত্রী খোরশিদা বেগম বলেন, মাস যাবত (এসিএফ) স্যারের কথা বলে বারবার টাকার প্রস্তাব দিয়ে যাচ্ছে রেঞ্জ কর্মকর্তা এবং বিট কর্মকর্তার মাধ্যমে। হাতে কোন জমা টাকা না-থাকার কারণে দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে। হঠাৎ বনবিভাগের স্টাফরা সহ স্হানীয় কিছু পাহাড় খেকোদের সাথে নিয়ে আমাদের ঘরবাড়ি ভেঙে তসনস করে ফেলে। শাবুকুনাহার বলেব, আমি একজন স্টুডেন্ট, বনবিভাগের দলবল নিয়ে যখন আমাদের বাড়ির উঠানে আসেন, আমি সহকারী বনসংরক্ষক আনিসুর রহমানের পাইয়ে ধরে অনুরোধ করলেও কোনো ধরনের মানবতা দেখান নাই তিনি।

রোজিনা খাতুন বলেন, আমি একজন কলেজ শিক্ষার্থী, আমাদের এই ঘরটা ছাড়া মাথা গুজার জায়গায় নেই কোথাও, উখিয়া উপজেলার জালিয়া পালং ইউনিয়নের জুম্মা পাড়ায় হাজার-হাজার বসতি থাকলেও কেন বেঁচে বেঁচে কয়কটি ঘরে অভিযান করা প্রশ্নবিদ্ধ। রুবি আক্তার বলেন,শত-শত পোরানো ঘেরের মধ্যে এভাবে কয়েকটা ঘরে অভিযান এগুলো উদেশ্য মূলক। হামিদা খাতুন বলেন, আমার পঁচিশ বছর বয়সে আমি এরকম অভিযান করছে কোথাও দেখি নাই, শুধু বেঁচে বেঁচে কয়কটি ঘরে অভিযান। আব্দু জলিল বলেন, আমি নিজেও সাক্ষী বনবিভাগের লোকজন এসে টাকা নিয়ে যাচ্ছে। এরপরও বিনা নোটিশে কোনধরনের অভিযান, উর্ধতন কতৃপক্ষের কাছে এইগুলার বিচার চাই। জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমরা কত টাকা দিয়ে তাদেকে খুশি করতে পারবো? টাকা দিলে পাহাড় কাটা, গাছ কাটা, নতুন করে ঘর করা সবি যায়? আমাদের এত বছরের পোরানো ঘর বেঁচে বেঁচে ভেঙে দেয়ার পিছনে অনেক কারণ লুকিয়ে রয়েছে। স্হানীয় সচেতন মহল এবং ভুক্তভোগী পরিবারের একমাত্র জোর দাবি হচ্ছে , মাননীয় বনমন্ত্রী ও বনবিভাগের উর্ধতন কতৃপক্ষের কাছে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সহকারী বনসংরক্ষক আনিসুর রহমানের ঘুষ বানিজ্য থেকে যেন গ্রামের সাধারণ মানুষেকে রক্ষা করেন।

এ বিষয়ে জালিয়া পালং ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হোসাইন সিকদার বলেন, আমি মনে করি বিনা নোটিশে অভিযান করাটা প্রশ্নবিদ্ধ, জালিয়া পালং ১নং ওয়ার্ডের অভিভাবক হিসেব আমার কাছ থেকে কোন ধরনের সহযোগিতাও চাওয়া হয়নাই। সেখানে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সম্মুখীন হতেও পারতেন।

এ বিষয়ে সহকারী বন সংরক্ষক আনিসুর রহমান বলেন, কোনধরনের নোটিশ ছড়ায় অভিযান করেছি, টাকা নেওয়ার বিষয়টা সত্যি নয়।

এ বিষয়ে কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা সরোয়ার আলম বলেন, অভিযানের বিষয়ে আমি অবগত নয়, রেঞ্জ কর্মকর্তা এবং সহকারী বন সংরক্ষক জানেন।