• ঢাকা
  • শনিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৭ অপরাহ্ন

গোপালগঞ্জে সড়ক থেকে বৈদ্যুতিক খূঁটি সড়ানো নিয়ে দুই বিভাগের মধ্যে চলছে রশি টানাটানি


প্রকাশের সময় : ফেব্রুয়ারী ৭, ২০২৩, ৯:৩৩ পূর্বাহ্ন / ১৯১
গোপালগঞ্জে সড়ক থেকে বৈদ্যুতিক খূঁটি সড়ানো নিয়ে দুই বিভাগের মধ্যে চলছে রশি টানাটানি

নিজস্ব প্রতিবেদক,গোপালগঞ্জঃ টেকেরহাট-গোপালগঞ্জ ঘোনাপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়কের খুঁটি অপসারন নিয়ে সড়ক ও বিদ্যুত বিভাগের মধ্যে চলছে রশি টানাটানি। দুই বিভাগের রশি টানাটানিতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করা নিয়ে দেখা দিয়েছে শংকা। এ মহাসড়কের মাঝখানে রয়েছে প্রায় ২’শ বৈদ্যুতিক খুঁটি। সব খুঁটি রেখেই চলছে মহাসড়ক প্রশস্তকরন ও উন্নয়নমূলক কাজ। এতে রাস্তা প্রশস্ত হলেও যানবাহন ও সাধারন মানুষের চালাচলে পড়তে হবে দূর্ভোগে।

সড়ক ও জনপথ বিভাগ বলছে, বিদ্যুত বিভাগকে (ওজোপাডিকো) খুঁটি সরানোর জন্য চিঠি দেয়া হলেও তারা খুঁটি সরানোর কোন উদ্যোগ নিচ্ছেনা। তবে বিদ্যুত বিভাগ (ওজোপাডিকো)বলছে অর্থ বরাদ্দ না থাকার কারনে খুঁটি সড়ানো যাচ্ছে না। অর্থ বরাদ্দ পেলেই তারা খুঁটি সরানোর কাজ করবে।

২০২৪ সালের ৩০ জুন এই মহাসড়কের নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। এই মহাসড়কের কাজ শেষ হলে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের উপর যানবাহনের চাপ কমবে। ঢাকার সাথে খুলনার দূরত্ব ২৫ কিলোমিটার কমে আসবে। এতে যানবাহনের জ্বালানী খরচ সাশ্রয়ের পাশাপাশি যাতায়াতকারীদের সময়ও কম লাগবে।

জানা গেছে, গোপালগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীনে টেকেরহাট-গোপালগঞ্জ-ঘোনাপাড়া ৪৪ কিলোমিটার আঞ্চলিক মহাসড়ক ৬টি প্যাকেজে ১৮ ফুট থেকে ৩৪ ফুট প্রশস্ত করার কাজ চলছে। ইতোমধ্যে নির্মাণ কাজের ১ বছর পেরিয়েছে। আগামী ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে কাজ শেষ করার তাড়া রয়েছে সংশ্লিষ্ট বিভাগের। কিন্তু, গোপালগঞ্জ অংশে ৫ ও ৬ নম্বর প্যাকেজের বর্ধিত অংশের মধ্যে রয়েছে বিদ্যুত (ওজোপাডিকোর) বিভাগের প্রায় দুই’শ বৈদ্যুতিক খুঁটি। রাস্তা প্রশস্ত কাজ করতে গিয়ে এসব খুঁটি রাস্তার মাঝখানে চলে এসেছে। এসব বৈদ্যুতিক খুঁটি অপসারন না করেই চলছে রাস্তা প্রশস্ত করার কাজ।

রাস্তার মাঝ থেকে খুঁটি না সরানোর কারনে সঠিক মত রোলার দিয়ে মাটি ভরাট করতে পারছেনা শ্রমিকরা। এতে করে ঐ স্থানে মাটি ঠিক মত না বসার কারনে পরবর্তিতে মাটি বসে গিয়ে গর্তের সৃষ্টি হতে পারে বলে মনে করেন তারা। এসব খুঁটির কারনে দুর্ঘটনা বাড়বে বলে এলাকাবাসি ও যানবাহন চালকরা মনে করেন।

সদর উপজেলার গোবরা গ্রামের মো: দিদার শেখ বলেন, দূর্ভোগ কমাতে টেকেরহাট-গোপালগঞ্জ ঘোনাপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়কের প্রশস্তকরণের কাজ চলছে। কিন্তু বিদ্যুতের খুঁটি রেখেই সড়কের কাজ করা হচ্ছে। সড়কের মাঝে যদি খুঁটি থাকে তাহলে এমক দিয়ে চলাচল করতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হবে।

মোলোপাড়া এলাকার মো: রফিকুল ইসলাম বলেন, খুঁটি রেখে সড়কের কাজ করা হচ্ছে এটা একটি হাস্যকর ব্যাপার। খুঁটি রেখে কিভাবে সড়কের কাজ করা হয় তা আমার বুঝে আসে না। আসলে কি সড়কের উন্নয়ন হচ্ছে না কি সাধারণ মানুষের সাথে মশকরা করা হচ্ছে বুঝে উঠতে পারছি না।

অ্যাম্বুলেন্স চালক জিহাদ শেখ বলেন, প্রতিনিয়ত রোগী নিয়ে আমাদের খুলনা যেতে হয়। আর আমরা শহর হয়ে এই সড়কটি ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু সড়কে যদি খুঁটি রেখে কাজ করে তাহলে এ সড়ক দিয়ে যানচলাচল করবে কিভাবে। খুঁটি অপসারন না করে সড়ক বড় করলেও প্রতিনিয়ন দূর্ঘটনার ঘটনার আশংকা থেকে যাবে। দ্রুত খুঁটি অপসারন করার দাবী জানাই।

টেকেরহাট-গোপালগঞ্জ ঘোনাপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়কের উন্নয়ন প্রকল্পের প্রজেক্ট ম্যনেজার বিভূতি ভূষন ভৌমিক ও ঠিকাদার কামরুল ইসলাম বলেন, বৈদ্যুতিক খুঁটি না সরিয়ে কাজ করায় মাটি ঠিকমত বসানো যাচ্ছে না। কাজের পর যদি আবার খুঁটি উঠিয়ে কাজ করা হয় তাহলে ঠিকমত কমপেকশন হবে না। আর এ কারেন কাজের মান ভাল হবে না এবং সময় মতো কাজ শেষ করা সম্ভব হবেনা।

গোপালগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: জাহিদ হোসেন বলেন, সদর উপজেলার হরিদাসপুর এলাকা থেকে ঘোনাপাড়া পর্যন্ত বিদ্যুত বিভাগকে তাদের প্রায় দুই’শ বৈদ্যুতিক খুঁটি সরিয়ে নেয়ার জন্য চিঠি দেয়া হলেও তারা তা করছেন না। যে কারেন কাজের অগ্রগতি কমে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

গোপালগঞ্জ ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানীর (ওজোপাডিকো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো: শফিকুল ইসলাম বলেন, বিদ্যুতের খুঁটি সরোনোর জন্য কোন বরাদ্দ পাওয়া যায় নি। তবে প্রাক্কলিত টাকা হাতে পেলেই সরানোর কাজ হাতে নেয়া হবে।