
এ জেড আমিনুজ্জামান রিপনঃ “তামাক কোম্পানির কূটকৌশল উন্মোচন করি, তামাক ও নিকোটিনযুক্ত বাংলাদেশ গড়ি” এই প্রতিপাদ্য নিয়ে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় পালিত হয় বিশ্ব তামাক মুক্ত দিবস।
টুঙ্গিপাড়া স্ত্রী স্টার অর্গানাইজেশনের নির্বাহী প্রধান ইলিয়াছ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হারুন আর রসিদ উপ-পরিচালক, সমাজসেবা অধিদপ্তর গোপালগঞ্জ।
অনুষ্ঠানটির উদ্বোধন কালে চরবয়রা ঘোনাপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওহিদুল ইসলাম বিশ্ব তামাক মুক্ত দিবসে বিদ্যালয়ের ছাত্রদের উদ্দেশ্যে বলেন, তামাক ব্যবহারের কুফল সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা, তামাকমুক্ত জীবনযাপনের জন্য উৎসাহিত করা, তামাক কোম্পানিগুলোর কূটকৌশল উন্মোচন করা, তামাক ও নিকোটিন মুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলা, তিনি তার বিদ্যালয়ের উপস্থিত সকল শিক্ষার্থীদের তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে কঠোর নির্দেশ দেন এবং তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারের ফলে ক্ষতিকর বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। তিনি আরও বলেন দেশকে মাদক মুক্ত করতে হলে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ও গ্রাম পর্যায়ে এরকম আলোচনা সভার বাস্তবায়ন করার একান্ত প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি গোপালগঞ্জ জেলা সমাজ সেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক হারুন আর রসিদ বলেন, আগামী ৩১ মে বুধবার বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস। বিকল্প খাদ্য উৎপাদন ও বিপণনের সুযোগ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং টেকসই ও পুষ্টিকর ফসল চাষে তামাক চাষিদের উৎসাহিত করতে এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে গ্রো ফুড, নট টোব্যাকো। তামাক উৎপাদনে কোম্পানির কূটকৌশল উন্মোচনও এবারের বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবসের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য। বাংলাদেশে দিবসটি উদ্যাপিত হতে যাচ্ছে তামাক নয়, খাদ্য ফলানু এই প্রতিপাদ্য নিয়ে।তামাক চাষ কৃষকের স্বাস্থ্য, মাটির স্বাস্থ্য এবং সার্বিকভাবে গোটা জনস্বাস্থ্য ও পৃথিবীর স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে। দীর্ঘমেয়াদে বৈশ্বিক প্রতিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং খাদ্য সংকট সৃষ্টিতেও ভূমিকা রাখে তামাক। প্রজ্ঞা থেকে পাঠানো তথ্যচিত্রে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী ক্রমবর্ধমান খাদ্য সংকটের পেছনে সংঘাত-যুদ্ধ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং কোভিড-১৯ মহামারির অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রভাবের পাশাপাশি তামাক চাষের একটি প্রভাব রয়েছে।
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া স্ত্রী স্টার অর্গানাইজেশনের নির্বাহী প্রধান ইলিয়াছ হোসেন বলেন, বিশ্ব তামাকমুক্ত বিশ্বজুড়ে তামাক ও তামাকজাত পণ্যের ক্ষতিকর দিক এবং তামাক ব্যবহারের কুফল সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা হয়। বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবসে আসুন আমরা সকলে মিলে তামাক ও নিকোটিন মুক্ত বাংলাদেশ গড়তে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হই। তামাক ও তামাকজাত পণ্যের কুফল সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করি এবং তামাকমুক্ত জীবনযাপন করি। ধূমপান ও তামাক মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। তামাকের কুফল থেকে বাঁচতে ধূমপান ও তামাক সেবন পরিহার করতে হবে। নামাকমুক্ত জীবন স্বাস্থ্যকর জীবন।
তিনি আরও বলেন, ২৪ ঘণ্টা সময়সীমা ধরে তামাক সেবনের সমস্ত প্রক্রিয়া থেকে বিরত থাকতে উৎসাহিত করার উদ্দেশ্যে দিবসটি প্রচলিত হয়। এছাড়াও দিবসটির উদ্দেশ্য তামাক ব্যবহারের ব্যাপক প্রাদুর্ভাব এবং স্বাস্থ্যের উপর এর নেতিবাচক প্রভাবের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করানো যা বর্তমানে প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী প্রায় ৬০ লক্ষ মানুষের মৃত্যুর কারণ হিসেবে বিবেচিত এবং যার মধ্যে ধূমপানের পরোক্ষ ধোঁয়ার প্রভাবের কারণে প্রায় ৬,০০,০০০ অ-ধূমপায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) সদস্য রাষ্ট্রসমূহ ১৯৮৭ সালে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস চালু করে। বিগত বিশ বছরে, দিবসটি সরকার, জনস্বাস্থ্য সংগঠন, ধূমপায়ী, উৎপাদনকারী, এবং তামাক শিল্পের কাছ থেকে উদ্যম এবং প্রতিরোধ উভয়ের মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে পালিত হয়ে আসছে।
আপনার মতামত লিখুন :