• ঢাকা
  • সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:৪০ পূর্বাহ্ন

গোপালগঞ্জে জেনারেল হাসপাতালে সার্টিফিকেট বানিজ্যের অভিযোগ, প্রতিবাদে মানববন্ধন


প্রকাশের সময় : মার্চ ৩০, ২০২৩, ২:২৮ অপরাহ্ন / ১২৫
গোপালগঞ্জে জেনারেল হাসপাতালে সার্টিফিকেট বানিজ্যের অভিযোগ, প্রতিবাদে মানববন্ধন

নিজস্ব প্রতিবেদক, গোপালগঞ্জঃ গোপালগঞ্জে ২৫০শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের সহকারি পরিচালক, আবাসিক মেডিকেল অফিসার, ওয়ার্ড মাস্টারসহ কয়েকজন কর্মচারীর বিরুদ্ধে লাগামহীন দুর্ণীতি ও সার্টিফিকেট বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। দুর্ণীতি ও সার্টিফিকেট বাণিজ্যের প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে বিভিন্ন সংগঠনের শ্রমিকবৃন্দ ও সাধারন মানুষ।

বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় স্থানীয় প্রেসক্লাবের সামনে বঙ্গবন্ধু সড়কের উপর দাঁড়িয়ে হাতে হাত ধরে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। এসময় অংশ গ্রহণকারীরা হাসপাতালের কতিপয় কর্মকর্তা ও কর্মচারীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও সার্টিফিকেট বাণিজ্য বন্ধসহ বিভিন্ন দাবীতে শ্লোগান দেন। মানববন্ধন চলাকালে দেলোয়ার মোল্লা, রাজিব মোল্লা, দিলারা বেগম, মিটু কাজী ও কামাল হোসেন বক্তব্য রাখেন।

মানববন্ধনে দেলোয়ার মোল্লা বলেন, গোপালগঞ্জে ২৫০ শয্যা বিশিস্ট জেনারেল হাসপাতালে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি রয়েছে। কিন্তু এ হাসপাতালের ডাক্তাররা রোগ নির্ণয়ে সেসব যন্ত্রপাতি ব্যবহার না করে খুলনা, ঢাকায় পাঠিয়ে দেন। ফলে এ খানে চিকিসা নিতে আসা রোগীরা যেমন ভোগান্তিতে পড়েন তেমনি অর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি হন।

দিলারা বেগম বলেন, আমার ছেলেকে মারাধর করা হয়। পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করি। কিন্তু প্রতিপক্ষরা আমার ছেলে একটি প্রতিবন্ধিকে ধর্ষণ করে বলে হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে হাসপাতালের সহকারি পরিচালক ও আবাসিক মেডিকেল অফিসারকে টাকা দিয়ে ধর্ষন করার সার্টিফিটেন নেয়। আমরা ছেলে গুরুত্ব অসুস্থ তাহলে সে কি ভাবে ধর্ষন করে। টাকার বিনিময়ে হাসপাতালের সহকারি পরিচালক ও আবাসিক মেডিকেল অফিসার এ সার্টিফেকেট দেয়। ফলে আমরা সুবিচার থেকে বঞ্চিত হই।

মিটু কাজী ও কামাল হোসেন বলেন, হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা: অসিত কুমার মল্লিক, আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা: ফারুক আহমেদ, ডা: শ্যামল চন্দ্র বাড়ৈ, ডা: হিটলার বিশ্বাস, ওয়ার্ড মাষ্টার সোহেল সিকদার, ওয়ার্ড বয় মিজান মোল্যাসহ একটি দালাল চক্র দীর্ঘদিন যাবৎ ভূয়া চিকিৎসা সনদ দিয়ে সাধারন মানুষকে হয়রানি করছে। এই হাসপাতালে কোটি কোটি টাকার ভাউচার দেখিয়ে মেশিনপত্র কেনা হলেও তা আদৌ চালু হয়নি। ফলে সাধারন মানুষ বাধ্য হয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা, খুলনা, বরিশাল যেতে হচ্ছে। দ্রুত এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিকার করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট দাবী জানান তারা।

নাম না প্রকাশ করার শর্তে একাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বলেন, গোপালগঞ্জে ২৫০ শয্যা বিশিস্ট জেনারেল হাসপাতালে রোগী দেখা ও সার্টিফিকেট বাণিজ্যের একটি চক্র গড়ে উঠেছে। ওই চক্রটি ২০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকার বিনিমেয়ে হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা: অসিত কুমার মল্লিক, আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা: ফারুক আহমেদসহ অন্যান্য ডাক্তারদের মাধ্যমে সার্টিফিকেট বাণিজ্য করে। সার্টিফিকেট দেয়ার পর পাওয়া টাকা থেকে বিভিন্ন হারে কমিশন পান তারা। এছাড়া হাসপাতালে আসা রোগীদের চিকিৎসা না দিয়ে প্রাইভেট ক্লিনিকে যেতে বলেন। তাছাড়া পছন্দের বিভিন্ন ক্লিনিক থেকে পরীক্ষা করাতে বলেন। সেখান থেকেও তারা বিভিন্ন হারে কমিশন নেন।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা: ফারুক আহমেদ বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি এর সাথে জড়িত নই।

গোপালগঞ্জে ২৫০-শয্যাবিশিস্ট জেনারেল হাসপাতালে সহকারী পরিচালক ডা: অসিত কুমার মল্লিক বলেন, আমার বিরুদ্ধে সার্টিফেকেচ বাণিজ্যের অভিযোগ সত্য নয়। আরএমও যে প্রতিবেদন দেন তা মিলিয়ে আমি শুধুমাত্র সই করে দেই। সার্টিফিকেট বাণিজ্য করে যে টাকা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে তা আমার জানা নেই।

তিনি আরো বলেন, সার্টিফিকেট দেয়া ও না দেয়া নিয়ে আমরা চাপের মধ্যে থাকি। রাজনৈতিক দলের নেতারা কোন কোন ঘটনায় সার্টিফিকেট দিতে চাপ দেন আবার না দেয়ার জন্য চাপ দেন। তখন আমাদের আর কিছু করার থাকে না।