নিজস্ব প্রতিবেদক, গোপালগঞ্জঃ গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে জমি বিরোধের জের ধরে খোকন আরাফাতের বসত বাড়ীর প্রায় ৪ লাখ টাকার ফলজসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশী মৈয়ার আরাফাত ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে।
সোমবার বিকালে উপজেলার পশারগাতী ইউনিয়নের পশারগাতী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ওই দিনই মৈয়ার আরাফাত (৭০), বিনা বেগম (৪৫), তিহামসহ (২২) মোট ৫ জনকে অভিযুক্ত করে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
ভুক্তভোগী মোছা: বিছু বেগম মোবাইল ফোনে জানান, ২০০৬ সালে আমার চাচা শ্বশুর একটি জমি দেন। জমিটি গর্ত ছিল। পরে দেড় লাখ টাকা খরচ করে জমিটি ভরাট করে বাড়ী তৈরী করে থাকি। এসময় জমির বাকী অংশে আম, জাম, কাঁঠাল, আমলকি, জলপাই, খেজুর ও পেয়ারা গাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফলের গাছ লাগাছ। প্রত্যেকটি গাছে ফল ধরেছে। আমার স্বামী ঢাকায় সিএনজি চালায়। বেশি কিছু দিন হলো আমরা ঢাকায় রয়েছি। এ সুযোগে প্রতিবেশী মৈয়ার আরাফাত ও তার লোকজনের এই জমি নিজের দাবী করে আমার সব গাছগুলো কেটে ফেলে।
ভুক্তভোগীর স্বামী মো: খোকন আরাফাত বলেন, আমি একদিন সিএনজি না চালালে সংসার চালাতে কষ্ট হয়। ফলে আমাকে ঢাকায় থাকতে হয়। আমার স্ত্রী বেশ কিছু ফলদ গাছ লাগিয়েছিল। তা কেটে ফেলেছে। এটা শুনে আমার পরিবার নিয়ে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে ছুটে আসি। আমি ও আমার পরিবারের লোকজন জমি দখলে বাঁধা দিলে মৈয়ার আরাফাত ও তার লোকজন আমাকে এবং আমার পরিবারের সদস্যদের অশ্লীল ভাষায় গালাগালি করতে থাকে। প্রতিবাদ করলে এক পর্যায়ে অভিযুক্তরা মারতে আসে এবং প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এ ঘটনায় আমি মৈয়ার আরাফাত (৭০), বিনা বেগম (৪৫), তিহাম (২২) সহ মোট ৫ জনকে অভিযুক্ত করে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মৈয়ার আরাফাতের বক্তব্য পাওয়া সম্ভব না হলেও তার স্ত্রী বিনা বেগম বলেন, জায়গাটি আমাদের। তাই আমরা আমাদের জায়গার গাছ কেটে নিয়েছি এতে কার কি? জমি নিয়ে আগে সালিশ বৈঠক হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সালিশ বৈঠকের রায় আমরা মানি না।
এ ব্যাপারে তদন্তকারী কর্মকর্তা মুকসুদপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) খায়রুল বাশার জানান, অভিযোগ পেয়ে পুলিশের একটি টিম নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করি। ফলদ গাছগুলো কেটে ফেলা হয়েছে। পরবর্তীতে তারা আর গাছ কাটতে পারেনি। যে সকল গাছ কেটেছে সবগুলো গাছ ঘটনাস্থলে রয়েছে। জমির কাগজপত্র নিয়ে স্থানীয় গণ্যমান্য লোকজনের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের জন্য ইউপি চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
পশারগাতী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আ: রহমান মীর বলেন, ধারনা করা হচ্ছে কয়েক লাখ টাকার গাছ কেটে মারাত্মক ক্ষতিসাধন করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ইতিপূর্বে বেশ কয়েকবার বিচার শালিস হয়েছিল। কিন্তু কাগজপত্র দেখে শালিসের রায় দিলেও মৈয়ার আরাফাত ও তার লোকজন মানেনি। তবে তারা চাইলে বিষয়টি মিমাংসার জন্য আমি আবারও চেষ্টা করবো।
আপনার মতামত লিখুন :