• ঢাকা
  • শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫, ১১:৪০ পূর্বাহ্ন

গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের বামন ডাঙ্গা গ্রামের প্রভাবশালী জাফর শেখ গং-দের বিরুদ্ধে হামলা :  লুটপাট ও গর্ভের সন্তান নষ্টের অভিযোগ


প্রকাশের সময় : মার্চ ১৩, ২০২৫, ৯:৩১ অপরাহ্ন / ২১
গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের বামন ডাঙ্গা গ্রামের প্রভাবশালী জাফর শেখ গং-দের বিরুদ্ধে হামলা :  লুটপাট ও গর্ভের সন্তান নষ্টের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, গোপালগঞ্জঃ গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার গোহালা ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের বামন ডাঙ্গা গ্রামে পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত শরীকি সম্পত্তি নিয়ে পূর্ব বিরোধের জের ধরে একই বংশের মৃত মজিবুর রহমানের ছেলে ওবায়দুর রহমান ও পুত্রবধু সেলিনা বেগমের ওপর হামলা, লুটপাট ও গর্ভের সন্তান নষ্টের অভিযোগ পাওয়া গেছে প্রতিপক্ষের জাফর শেখ, পুত্র রফিক শেখ ও জাফর শেখের স্ত্রী লাইলী বেগমের বিরুদ্ধে।

পরে এ ঘটনায় ভুক্তভোগী সেলিনা বেগম (৩৪) ন্যায় বিচার চেয়ে মুকসুদপুর আমলী আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং – মুকসুদপুর সি.আর ১৩৩/২০২৫ ইং মোকঃ দঃ বিঃ ১৪৭/৪৪৮/৩১৩/
৩২৩/৩২৪/৩২৫/৩০৭/৩৭৯/৫০৬(২)/১১৪ ধারা। বিজ্ঞ বিচারিক আদালত গোপালগঞ্জ পিবিআইকে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দিয়েছেন। ভুক্তভোগীর পরিবার ও অভিযোগ সূত্রে খবর পেয়ে একাধিক গণমাধ্যমকর্মী বুধবার (১২ মার্চ) সকালে ঘটনাস্থল গোহালা ইউনিয়নের বামনডাঙ্গায় সরেজমিনে গিয়ে ভুক্তভোগীর পরিবার, ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, জনপ্রতিনিধি সহ এলাকার একাধিক গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সাথে এ বিষয়ে কথা বলে ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পান। মামলার বাদী ভুক্তভোগী সেলিনা বেগম বলেন, অভিযুক্তদের সাথে শরীকি সম্পত্তি নিয়ে আমাদের দীর্ঘদিনের বিরোধ চলমান রয়েছে। গত বছরের ১২ ডিসেম্বর দুপুর আনুমানিক ১টার দিকে আমার স্বামী ওবায়দুর রহমান মাল বোঝাই ভ্যানগাড়ি নিয়ে সরু রাস্তা দিয়ে আমাদের বাড়িতে ফেরার সময় ভ্যান ঢোকানোর তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রথমে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে আমার স্বামীকে এলোপাথাড়ি ভাবে মারধর করে জাফর শেখ ও রফিক শেখ। স্বামীর আত্মচিৎকার শুনে তাকে রক্ষার জন্য দ্রুত সেখানে গিয়ে বাঁধা দিলে অভিযুক্তরা একত্রিত হয়ে আমার ওপরও হামলা চালিয়ে আমাকে বাঁশের লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করে, চুলের মুঠি ধরে টেনে মাটিতে ফেলে তলপেটে লাথি মারে। পরে রফিক শেখও আমার তলপেটে এলোপাথাড়িভাবে লাথি মারে ও বাঁশ দিয়ে আঘাত করে। আমাদের চিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজন ও আত্মীয়-স্বজন আমাদেরকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য মুকসুদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে জরুরী চিকিৎসা দেয়। বাড়িতে ফেরার কয়েক মাস পর আমার তলপেটে তীব্র ব্যথা ও অস্বাভাবিকভাবে রক্তক্ষরণ হলে পুনরায় আমি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলে আমার “এবরশন” হয়। আমার বড় ছেলে সাজিদুর রহমান সাজিদ (১৩) মাদ্রাসায় পড়ে সে একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী, ছোট ছেলে সাহিদুর রহমান সাহিদ (৯) সেও মাদ্রাসায় পড়ে। আমরা অত্যন্ত গরিব ও সহজ-সরল মানুষ। ঘটনার পর রিমার্চ শেখ ও শাহ আলম মুন্সী সহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ অভিযুক্ত রফিক শেখকে দিয়ে এ ঘটনায় আমার চিকিৎসার জন্য শাহ আলম মুন্সী জোর করে আমার হাতে ৫ হাজার টাকা দেয় আমি আপত্তি জানালে তারা আমাদের শরীকি সম্পত্তি সঠিকভাবে পরিমাপ করে দেবে মর্মে অঙ্গীকার করেন। কিন্তু পরবর্তীতে, অভিযুক্তরা জমি পরিমাপ না করে দিয়ে আমাদেরকে হুমকি-ধমকি দিতে থাকে। অভিযুক্তরা সুদে কারবারি ও এলাকার প্রভাবশালী হওয়ায় এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গও কোন সুরাহা না দেওয়ায় আমি আদালতের শরণাপন্ন হয়েছি। তাদের হামলায় আমার গর্ভের সন্তান নষ্ট হয়েছে। আমি আপনাদের মাধ্যমে সরকারের নিকট দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত জাফর শেখ, রফিক শেখ ও জাফর শেখের স্ত্রী লাইলী বেগমের বাড়িতে গিয়ে তাদেরকে না পাওয়ায় প্রতিবেদনে তাদের বক্তব্য দেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে মুঠোফোনে অভিযুক্ত রফিক শেখের ব্যবহৃত ০১৭…২০০ নম্বরে যোগাযোগ হলে তিনি রিমার্চ শেখ ও শাহ আলম মুন্সীর সাথে কথা বলে তাদের শরীকি সম্পত্তি দ্রুত বুঝিয়ে দিবেন বলে আমাদের প্রতিনিধিকে আশ্বস্ত করেন।

এ বিষয়ে শাহ আলম মুন্সী মুঠোফোনে আমাদের প্রতিনিধিকে ঈদের পরে শরিকী সম্পত্তি আমিন দিয়ে সঠিকভাবে মেপে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

গোহালা ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ইস্রাফিল শেখ জমি সংক্রান্তে বিরোধের জেরে হামলা-মামলার এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বিষয়টি দ্রুত মীমাংসার পক্ষে মত প্রকাশ করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গোপালগঞ্জ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) -এর পুলিশ পরিদর্শক মোঃ জালাল উদ্দিন বলেন, আমরা বিজ্ঞ আদালতের আদেশ পেয়েছি। তবে হাসপাতাল থেকে এখনও রোগীর এমসি পৌঁছায়নি। এ বিষয়ে তদন্ত চলমান রয়েছে।