কে এম সাইফুর রহমান,গোপালগঞ্জ প্রতিনিধিঃ গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার জলিরপার ইউনিয়নের কলিগ্রাম বাজারের ওপর সরকারি জায়গার একটি রেইনট্রি গাছ কেটে নিলেন সদ্য নির্বাচিত এক ইউপি চেয়ারম্যান। স্থানীরা বাঁধা দিতে এলে তাদেরকে হামলা করেন ওই ইউপি সদস্য। অভিযুক্ত চেয়ারম্যানের দাবী সাংবাদিক ও পুলিশের কারণে কেটে নেওয়া গাছটি গত ২৪ জানুয়ারি জলিরপাড় তহশিলদারের নিকট রাখা হয়েছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগে জানাগেছে, উপজেলার জলিরপার ইউনিয়নের কলিগ্রাম বাজারের ওপরে হিমাংসু কুন্দার দোকানের সামনে সরকারি খাস খতিয়ানের ৩০৮ নং দাগে বেড়ে ওঠা একটি রেইনট্রি গাছ কেটে নেয় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মিহির কান্তি রায় ও স্থানীয় মেম্বার ইলিয়াকিম কুন্দা। গাছটির দাম আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ২০ হাজার টাকা।
স্থানীয় বাসিন্দা দুলাল বৈরাগী জানান, গত ২৩ জানুয়ারি বিকালে সরকারি গাছ কেন কাটা হচ্ছে একথা জানতে চাইলে ওইখানে উপস্থিত ৫নং ওয়ার্ড মেম্বার ইলিয়াকিন কুন্দা (৪৫) তার ওপরে তেড়ে আসেন। তাকে আক্রমন করেন।
এ বিষয়ে তিনি প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও মুকসুদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেছেন। দুলাল বৈরাগী আরও জানান, পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন এসে আমাকে তাদের হাত থেকে রক্ষা করে। আরো উল্লেখ্য যে মিহির কান্তি রায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে তার বাহিনী দিয়ে বিভিন্ন আইনবিরোধী কাজ করে চলছে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত জলিরপার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিহির কান্তি রায় জানান, ওই স্থানদিয়ে একটি রাস্তা নির্মাণ হবে। সেই জন্য বাজারের ওপরের ওইগাছটি কাটা হয়েছে, এলাকাবাসী ও সাংবাদিকদের কারণে ওই গাছের ডালপালা সমেত স্থানীয় তহশিলদারের কাছে জমা রেখেছি। কি প্রকল্প ওখানে নেওয়া হয়েছে তা জানতে চাইলে তিনি একবার বলেন এলজিইডি ওই রাস্তা নির্মাণ করছে, ঠিকাদারের নাম জানতে চাইলে বলেন কাবিখা প্রকল্পে রাস্তা নির্মিত হচ্ছে। প্রকল্প চেয়ারম্যান (সিপিসি) নাম জানতে চাইলে বলেন এলজিএসপি টাকা দিয়ে রাস্তা সংস্কার করা হচ্ছে।
অবশ্য ইউপি সচিব কানুরাম বালা জানান, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ওই স্থানে কোন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়নি।
জলিরপার ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকতা (তহশিলদার) জানান, আমি সরকারি কাজে উপজেলা সদরে অবস্থানকালে স্থানীয় লোকদের মাধ্যমে সরকারি গাছ কাটার সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষনিকভাবে অফিসের স্টাফ দিয়ে ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে গাছকাটতে নিষেধ করলেও তারা ওই নিষেধ অমান্য করে গাছ কেটে ফেলে। আমি সহকারি কমিশনার (ভূমি) এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে ঘটনাটি মৌখিক ভাবে জানিয়েছি। তাদের পরবর্তী নির্দেশনা অনুয়ায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জোবায়ের রহমান রাশেদ জানান, একটি গাছ কাটেতে সরকারি অনেক বিধি বিধান মানতে হয়। চেয়ারম্যান যদি আইনের তোয়াক্কা না করেন তাহলে কিছু করার নেই। সরকারি জায়গার গাছ কাটায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আপনার মতামত লিখুন :