মাহবুবুর রহমান,টুঙ্গিপাড়া,গোপালগঞ্জঃ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় স্বামীকে আটকে রেখে এক নববধূকে ৪ বখাটে মিলে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত বৃহস্পতিবার গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার ডুমুরিয়া ইউনিয়নের বাঁশবাড়িয়া চৌরঙ্গী মোড়ে আশ্রয়ন প্রকল্পে রাতে আঁধারে (১৯) বছর বয়সী এক নববধুর ওপর চালানো হয় এমন নির্মম নির্যাতন।
এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই নববধূ বাদী হয়ে ৪ জনের নাম উল্লেখ করে তাদের বিরুদ্ধে টুঙ্গিপাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। নির্যাতিতা ঐ নারীর সঙ্গে গত ২৯ অক্টোবর আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসিন্দা মোঃ আকব্বর মোল্লার ছেলের মোঃ মঈন মোল্লার সাথে বিবাহ হয়।
জানা গেছে বৃহস্পতিবার রাতে ঘরে ঢুকে বাথরুমে আটকানো হয়েছে ভিকটিমের স্বামীকে। জোরপূর্বক খোলা হয়েছে পরনের কাপড়, এরপর নগ্ন করে তোলা হয়েছে অশ্লীল ছবি । দেওয়া হয়েছে হত্যার হুমকি, করা হয় অমানবিক নির্যাতন।
এমন বিভীষিকাময় ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে নীর্যাতিতা নববধূ বলেন, রাতের আঁধারে (আনুমানিক রাত ৩ টায়) আমরা স্বামী-স্ত্রী দুজন ঘরে শুয়ে ছিলাম পানি খাবার কথা বলে জোর পূর্বক ঘরে প্রবেশ করে। পরে ভিতরে ঢুকে আমার স্বামী মঈন মোল্লাকে বাথরুমে আটকে ফেলে। চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে অপর ঘরে থাকা আমার শশুর শাশুড়ি ঠেকাতে আসলে তাদেরকে মারধর করে ও বেঁধে ফেলা হয়। তারপর আমার পরনের কাপড় খুলে ফেলে ওরা হিংস্র পশুর মত আমাকে নির্যাতনের চেষ্টা চালায়। পরে আমাকে জোর করে তাদের মোবাইল দিয়ে নগ্ন ছবি তুলে এবং এ সময় আমাকে হত্যার হুমকি এবং আমার এই নগ্ন ছবি ফেসবুকে ভাইরাল করে দেওয়া হুমকি দেয়। আমি এখন অনিশ্চয়তায় ভুগছি। আমি এর বিচার চাই।
নির্যাতিতার স্বামী মোঃ মঈন মোল্লা(২২) বলেন ওমর তালুকদার এর ছেলে নাইম তালুকদার(২১) ও একই গ্রামের ঠান্ডা তালুকদারের ছেলে মিজু তালুকদার (২২) ও তাদের সাঙ্গপাঙ্গরা আমার ঘরে জোর পূর্বক প্রবেশ করে। পরে আমাকে তারা বাথরুমে আটকে রেখে আমার নববধূকে শ্লীলতাহানি চেষ্টা করে এবং মোবাইল ফোনে অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে। পরে আমার বাবা মা আমাদের চিৎকার শুনে আসলে তাদেরকে মারধর করে।
স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ সাখাওয়াত হোসেন এর স্ত্রী ইয়াসমিন আক্তার বলেন (৩৬) এই এলাকায় একদল নেশাগ্রস্ত বখাটে লোক নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে প্রায়ই এমন অপকর্ম করে থাকে।
স্বামীকে আটকে রাখে এবং অপর দুই জন নববধূকে শ্লীলতাহানি চেষ্টা করে। এ সময় আমরা চিৎকার শুনে এগিয়ে আসলে বখাটেরা পালিয়ে যায়। আমরা বাহির থেকে আসছি। গরীব মানুষ হওয়ায় তাদের কিছু বলতে পারি না। আশ্রয়ন প্রকল্পের সকলে তাদের ভয়ে চুপসে থাকে। আমার ঘরেও দুইটা মেয়ে আছে। এখন এখানকার অবস্থা নিয়ে আমরা শঙ্কিত আছি। আমরা আগে রাস্তার পাশে ছিলাম তখন ই ভালো ছিলাম,সরকার আমাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই দিয়েছে ঠিকই কিন্তু নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়নি। আমরা এখন অনিরাপদে বসবাস করছি। এ ব্যাপারে স্থানীয় মুরব্বিদের কাছে জানালে তারাও গুরুত্ব দেয়নি। এমনকি স্থানীয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেও কোনো কাজ হয়নি।
এ ঘটনার তিন দিন পার হলেও কোন আইনি সহায়তা পায়নি ভুক্তভোগীর পরিবার
টুঙ্গিপাড়া থানা অফিসার ইনচার্জ এস এম কামরুজ্জামানের কাছে মুঠোফোনে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনো আমার কাছে কোনো অভিযোগ আসেনি।
আপনার মতামত লিখুন :