• ঢাকা
  • রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:২১ পূর্বাহ্ন

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় স্ত্রী’র স্বীকৃতি ও পূর্ণমর্যাদা পেতে প্রধানমন্ত্রীর নিকট এক কলেজ ছাত্রীর আবেদন


প্রকাশের সময় : মে ২১, ২০২২, ৮:৫৫ অপরাহ্ন / ১৭২
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় স্ত্রী’র স্বীকৃতি ও পূর্ণমর্যাদা পেতে প্রধানমন্ত্রীর নিকট এক কলেজ ছাত্রীর আবেদন

কে এম সাইফুর রহমান, গোপালগঞ্জঃ গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য দেবদুলাল বসু পল্টুর নিকট স্ত্রীর পূর্ণমর্যাদা পেতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে লিখিত আবেদন করেছে শীলা হালদার (২৮) নামে এক কলেজ শিক্ষার্থী ।

প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদনে উল্লেখ করে শিলা হালদার বলেন, আমার বর্তমান ঠিকানা মিরপুরের পাইকপাড়া। আমার বাসায় বসে হিন্দু ধর্মীয় মতে ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে স্বাক্ষী রেখে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার দেবগ্রামের মৃত পূর্ণচন্দ্র বসুর ছেলে গোপালগঞ্জ জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য দেবদুলাল বসু পল্টুর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই। আমাকে বিবাহ করার সময় তার প্রথম স্ত্রী ও পুত্র কন্যার কথা গোপন রেখে আমাকে বিবাহ করে এবং স্বামী -স্ত্রী হিসেবে বিগত ৪ বছরের অধিক সময় একত্রে বসবাস করে আসছি কিন্তু বিয়ের কিছু দিন পরে জানতে পারি যে তার স্ত্রী, পুত্র, কন্যা সন্তান রয়েছে। বিষয়টি জেনে আমি বিষ্মিত হই এবং কান্নায় ভেঙ্গে পরি। তখন তাকে জিজ্ঞেস করলে আমার কাছে সে ক্ষমা চেয়ে হাত ধরে কান্নাকাটি করলে আমি তাকে ক্ষমা করে দেই। এর পরেও তার সাথে আমার সম্পর্কের কোন ফাটল ধরেনি। এরমধ্যে আমি দুইবার করে মা হওয়ার উপক্রম হই কিন্তু সে দুইবারই আমার পেটের বাচ্চা নষ্ট করে ফেলে এবং আমি বাচ্চা নিতে চাইলে সে অনিহা প্রকাশ করে বাসা ভাড়া ও টেলিফোন বন্ধ করে দিয়ে আমার সঙ্গে যোগাযোগ কমিয়ে দেয়। শিলা হালদার আবেদনে আরো উল্লেখ করে বলেন – দেবদুলাল বসু পল্টু মাসে ২০/২৫ দিন আমার কাছে থাকতো, সকাল দুপুর বিকাল একসঙ্গে খেতাম। বিভিন্ন জায়গায় আমাকে বেড়াতে নিয়ে যেতো। এভাবে আমার সাথে গত ৪ বছরের অধিক সময় ঘর সংসার করেছে।

একপর্যায়ে গত ১৭মার্চ সে তার নিজ বাড়িতে আছে এমন খবর জানতে পেরে আমি নিরুপায় হয়ে তার গ্রামের বাড়ি কোটালীপাড়া উপজেলার দেবগ্রামে যাই। এসময় দেবদুলাল বসু পল্টু তার স্ত্রী এবং তার ভাইয়ের ছেলেরা আমার ওপর লাঠি দিয়ে প্রচন্ড আঘাত করে কিল-ঘুষি মেরে আমার কপালের সিদুঁর মুছে ফেলে এবং হাতের শাখা ভেঙ্গে ফেলে, ভ্যানিটি ব্যাগ ও স্বর্ণালংকার সহ মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। এ ঘটনায় এলাকার অর্ধশত লোক উপস্থিত ছিলো। এ ঘটনার পর থেকে তার প্রথম স্ত্রী এবং তার ভাইয়ের ছেলেরা বিভিন্ন মাধ্যমে আমাকে প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে আসছে। এ অবস্থায় আমি নিরুপায় হয়ে গত ৮ এপ্রিল মিরপুর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করি যাহার নম্বর ৫৭৬।

আবেদনে সর্বশেষে শিলা হালদার বলেন – মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মানবতার- মা জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমার বিনীত প্রার্থনা আমি যাহাতে স্ত্রীর পূর্ণমর্যাদা নিয়ে দেবদুলাল বসু পল্টুর সাথে সংসার করতে পারি তাহার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করতে সদয় আজ্ঞা হন। শিলা হালদার মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে করা আবেদন সচিব মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় তেজগাঁও ঢাকা, মহাপরিচালক ডিজিএফআই ক্যান্টনমেন্ট ঢাকা, মহাপরিচালক এনএসআই ১, সেগুনবাগিচা ঢাকা, ডিসি গোপালগঞ্জ জেলা কার্যালয়ে অনুলিপি প্রদান করেন। শিলা হালদার ঢাকার মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ও গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার রামশীল গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য চিত্তরঞ্জন হালদারের মেয়ে। বর্তমানে ঢাকার মিরপুরের পাইকপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করে আসছেন ।

এ বিষয়ে জানতে গোপালগঞ্জ জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য দেবদুলাল বসু পল্টুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন – এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানিনা, আমি কি বলবো, এরকম কোনো ঘটনা আমার সাথে ঘটে নাই। আপনারা আপনাদের মত কাজ করেন।

এ ঘটনায় মিরপুর মডেল থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই শাহিন আলমের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, একটি অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।