বিশেষ প্রতিনিধিঃ নাম তার শিল্পী আক্তার। কাগজে-কলমে পদ-পদবি নেই তবুও তিনি স্ব-ঘোষিত যুব মহিলা লীগ নেত্রী। টঙ্গীর ‘পাপিয়া’ খ্যাত শিল্পি আক্তার যুব মহিলালীগের নাম ভাঙিয়ে নিরীহ লোকদের জিম্মি ও অপহরণ করে অর্থ আদায়, বাড়ি দখলসহ বহু অপরাধ অপকর্মের নায়িকা সে। তার বিরুদ্ধে এবার গাজীপুর মহানগর যুব মহিলা লীগের আহ্বায়ক ও যুগ্ন আহবায়কের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে টঙ্গী পূর্ব থানার ভুয়া কমিটি বানানো ও বিভ্রান্তমূলক সংবাদ সম্মেলন করে দলীয় ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার অভিযোগ উঠেছে।
গত ২ জুলাই, ২০২১ ইং নিজ বাড়ীতে একটি সংবাদ সম্মেলন করেন শিল্পী আক্তার। এতে তিনি টঙ্গী পূর্ব থানা যুব মহিলা লীগের কমিটি বাতিল, তাকে দল থেকে বহিষ্কার ও কমিটি দেওয়ার জন্য আর্থিক লেনেদেনের বিষয় তুলে ধরেন। এ সময় তিনি স্বামী জাহাঙ্গীর মারা যাওয়ার পর মহানগরের কোন নেত্রী সান্তনা দিতে তার বাড়ীতে না আসায়ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এর দুই দিন পর সে ফেসবুক লাইভে এসে মহানগেরের ওই নেত্রীদের ৭/৭/২০২১ ইং পর্যন্ত ৭ দিনের আল্টিমেটাম দেন।
তদন্তে ও বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, শিল্পী আক্তারের কমিটির কাগজটিতে উল্লেখ তারিখ ১/১/২০২১ ইং। কিন্ত একই মাসের ১৩ তারিখে টঙ্গী পূর্ব ও পশ্চিম থানা যুব মহিলা লীগের কোন কমিটি দেয়া হয়নি বলে ফেসবুকে ষ্টেটাস দেন গাজীপুর মহানগর যুব মহিলা লীগের আহবায়ক রুহুন নেছা রুনা। তিনি সেই সময় এর প্রতিবাদ না করে হঠাৎ সংবাদ সম্মেলনের বিষয়টি হাস্যকর বলে মনে করছেন দলীয় নেতৃবৃন্দ। এছাড়া তার স্বামী গাজীপুর মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর মারা যায় ৯ এপ্রিল, ২০২১ ইং। মারা যাওয়ার প্রায় ২/৩ বছর পূর্বে মাদক মামলায় জেল হাজতে থাকা অবস্থায় তাদের মধ্যে আইনগত ভাবে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। তালাক দেওয়া স্বামীর জন্য ক্ষোভ প্রকাশ ও তার কমিটির সভাপতির অনুপুস্থিতিতে এ সংবাদ সম্মেলন দলের ভাবমূর্তী ক্ষুন্ন করার অপ-কৌশল বলেই মনে করছেন সচেতন মহল। গত ২ জুলাই, ২০২০ ইং জালাল, খোকন ও রনি নামের ৩ নিরীহ যুবককে অপহরণ করে মুক্তিপনের দাবির মামলা থেকে বাচার জন্যও ঘটনার মূল হোতা শিল্পী আক্তার ছল-চাতুরীর আশ্রয় নিয়ে ভুক্তভোগীদের বিরুদ্ধে অনুরূপ একটি সংবাদ সম্মেলন করেন।
টঙ্গী থানা যুব মহিলা লীগের কোনো কমিটি দেওয়া হয়নি মর্মে যুব মহিলা লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক (গাজীপুর মহানগরের দায়িত্ব প্রাপ্ত) ফারজানা ইয়াসমিন বিপ্লবী তার ফেস বুক ষ্টেটাস দেন। ষ্টেটাসে তিনি, গাজীপুর মহানগর যুব মহিলা লীগের কিছু মেয়ে কেন্দ্রীয় কমিটির নাম বিক্রি করে এবং আমার সাইন নকল করে যারা নিজেদেরকে থানার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দাবি করে, তাদের কথায় কেউ বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য টঙ্গী থানার যুব মহিলা লীগকে আহবান জানান।
এ বিষয়ে সুলতানা শোভা জানান, খুব শীঘ্রই এ বিষয়ে আমি সাংবাদিকদের সামনে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরব।
শিল্পী আক্তার জানান, তারা টাকা নিয়ে কমিটি দিয়েছে। এখন বিরুদ্ধে সংগঠন বিরোধী ও অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগ এনে আমাকে বহি:স্কার করেছে। তদন্ত সাপেক্ষে আমি এর বিচার চাই।
গাজীপুর মহানগর যুব মহিলা লীগের যুগ্ম আহবায়ক আনোয়ারা সরকার আনু অর্থ লেনদেনের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, যার দলে কোন পদ নেই তাকে বহিস্কার করার কিছু নেই। বিভিন্ন অনৈতিক কাজে জড়িত থাকায় তাকে দলীয় সাংগঠনিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ফেসবুক লাইভে এসে হুমকিমূলক কথা বলায় তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণের প্রকৃয়া চলছে।
গাজীপুর মহানগর যুব মহিলা লীগের আহবায়ক রুহুন নেছা রুনা জানান, শিল্পী একটি ভুয়া কমিটি বানিয়ে দলকে বিভ্রান্ত করতে চেষ্টা করছে। আমি একজন জনপ্রতিনিধি। কমিটির কাগজে সীলের উপরে না নিচে কোথায় স্বাক্ষর দিতে হয় তা আমি জানি। জাল-জালিয়াতি করে বানানো কমিটির কাগজে ব্যবহার করা সীল ও স্বাক্ষর পর্যবেক্ষন করলেই জবাব পেয়ে যাবেন।
আপনার মতামত লিখুন :