নিজস্ব প্রতিবেদকঃ সারা দেশের ন্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় গত বেশ কিছুদিন ধরে বইছে তীব্র দাবদাহ। এতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। স্বস্তির নিঃশ্বাস পেতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে মানুষকে। ক্লান্তি আর অবসাদ ভাব কাটাতে সামান্য প্রশান্তির খোঁজে তারা ছুটে চলেছেন ভ্রাম্যমাণ শরবতের দোকানে। তৃষ্ণার্ত মানুষের এখন প্রাণ জুড়াচ্ছে শরবত। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এসব দোকানে মানুষের ভিড় বাড়ছে। পৌর শহরসহ উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারে ফুটপাতে বসে অনেকেই শরবত বিক্রি করছেন। এদিকে গত এক সপ্তাহ ধরে উপজেলার কোথাও বৃষ্টিপাত হয়নি। প্রতিদিন বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে দিনের তাপমাত্রা।
সরেজমিনে পৌর শহরের সড়ক বাজার, রেলওয়ে স্টেশন, খড়মপুর, উপজেলার মোগড়া বাজারসহ বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে দেখা যায়- ভ্রাম্যমাণ শরবতের দোকান বসেছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এসব দোকানে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের শরবত। তৃষ্ণার্ত লোকজনরা শরবত পান করে তাদের প্রাণ জুড়াচ্ছেন। একাধিক শরবত বিক্রেতা জানান- মানুষের তৃষ্ণা মেটাতে চিনি, লেবু, তোকমা, ইসবগুলের ভুসি, শাহিদানা, অ্যালোভেরা ও উলটকম্বল দিয়ে শরবত তৈরি করা হয়। তাছাড়া ফিল্টারের পানির সঙ্গে বরফ দেওয়া হয়। ঐ সব দিয়ে তৈরি করছেন স্বাস্থ্যসম্মত শরবত। এই গরমে এ শরবতের চাহিদা কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতি গ্লাস শরবত বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকায়। প্রত্যেক শরবতওয়ালা দিনে প্রায় ২০০-২৫০ গ্লাস শরবত বিক্রি করছেন।
কলেজ ছাত্র মো. এনামুল কবির বলেন, গত কয়েকদিন ধরে ভ্যাপসা গরমে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। গরমের কারণে ঠিকমতো ক্লাস করা যাচ্ছে না। বাড়িতে পড়াশোনাও করতে পারছি না। তাছাড়া এই তীব্র গরমে বাইসাইকেল চালিয়ে কলেজে আসতে খুবই কষ্ট লাগছে। তাই কলেজ শেষে লেবুর শরবত খেয়ে তৃষ্ণা মেটাচ্ছি।
অটোরিকশাচালক মো. সুরুজ মিয়া বলেন, এই গরমে রিকশা চালানো খুবই কষ্টকর। রিকশা চালালে প্রচুর পিপাসা লাগে। এই গরমে টিউবওয়েলের পানির পাশাপাশি ভিন্ন স্বাদের এই শরবত আমি পান করি।
মো. আলী মিয়া নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, এই গরমে খোলা আকাশের নিচে ফুটপাতে বসে মালামাল বিক্রি করলে খুবই পিপাসা লাগে। শরীরের ক্লান্তি দূর করতে প্রতিদিন শরবত পান করি।
শ্রমিক মো. বাবুল মিয়া বলেন, তীব্র গরমে লেবুর শরবত শরীরে অন্যরকম আমেজ নিয়ে আসে। এক গ্লাস পান করলেই প্রশান্তি পাই।
শরবত বিক্রেতা আল-আমিন বলেন, এই গরমে তার শরবত বিক্রি বেড়েছে। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পযর্ন্ত ২০০-২৫০ শরবত বিক্রি করি। গরমের কারণে লেবু ও ট্যাংক মিশ্রিত শরবতের চাহিদা বেড়েছে। তাই বিক্রিও হচ্ছে বেশি।
শরবত বিক্রেতা কুদ্দুস মিয়া বলেন, গত কয়েক মাস ধরে হাট-বাজারে ভ্যান গাড়িতে করে শরবত বিক্রি করছি। গরম বেশি থাকলে শরবতের চাহিদা ভালো থাকে। বিক্রিও ভালো হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. হিমেল খান বলেন, গরমে পানি খাওয়া আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। তবে অস্বাস্থ্যকর পানি পান করলে শরীরে নানা রোগ হওয়ার সম্ভব না রয়েছে। লেবুর যে শরবত রাস্তার পাশে কিংবা ফুটপাতে বিক্রি হচ্ছে অনেকাংশে সেগুলো স্বাস্থ্যসম্মত নয়। তাই এ ধরনের পানীয় এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন তিনি।
আপনার মতামত লিখুন :