মোস্তাইন বীন ইদ্রিস (চঞ্চল),খুলনা: খুলনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে আবারও নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হারুনুর রশিদ। সোমবার (১৭ অক্টোবর) দুপুরে ভোট গণনা শেষে বেসরকারি ফলাফলে তিনি মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৫৩৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এম এম মোর্ত্তজা রশিদী দারা পেয়েছেন ৪০৩ ভোট। ভোটের ব্যবধান ১৩৩।
এর আগে উৎসবমুখর পরিবেশে সকাল ৯টা থেকে জেলার ১০টি কেন্দ্রে এক সঙ্গে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। দিনের প্রথম ঘণ্টায় বিভিন্ন কেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি কম থাকলেও বেলা ১১টার পর থেকে ভোটারদের উপস্থিতি বাড়তে থাকে। প্রতিটি কেন্দ্রের ভেতরে ও বাইরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ভোটাররা কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই ভোট দিয়েছেন।
নির্বাচনের রির্টানিং কর্মকর্তা ও খুলনা জেলা প্রশাসক মো, মনিরুজ্জামান তালুকদার সকাল ৯টা থেকে বিভিন্ন ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি ভোটকেন্দ্রের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন।
জানা যায়, নির্বাচিত চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশিদ খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রায় ১১ বছর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। নির্বাচিত ঘোষণার পর তিনি তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতা, আওয়ামী লীগের সবস্তরের কর্মী-সমর্থক ও ভোটারদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে জেলা পরিষদের অসমাপ্ত উন্নয়ন কাজ শেষ করার প্রতিশ্রুতি দেন। সেই সঙ্গে খুলনা জেলা পরিষদকে ‘মডেল জেলা পরিষদ’ করার অঙ্গীকার করেন।
শেখ হারুনুর রশীদ দীর্ঘ ৬১ বছরের রাজনৈতিক জীবনে ১৯৯১ সালের পর থেকে সাত বার খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। দুবার জাতীয় সংসদ সদস্য, বিরোধীদলীয় হুইপ, প্রায় ১১ বছর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও প্রশাসক পদে দায়িত্ব পালন করেন।
জানা যায়, ২০১১ সালের ২০ ডিসেম্বর তিনি প্রথমবারের মতো খুলনা জেলা পরিষদের প্রশাসক নির্বাচিত হন। ২০১৭ সালের ২৯ জানুয়ারি তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষে ২০২২ সালে শেখ হারুনুর রশীদ আবারও জেলা পরিষদের প্রশাসক মনোনীত হন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ হারুনুর রশিদ ১৯৪৮ সালের ২ জানুয়ারি বটিয়াঘাটার কাতিয়ানাংলার ডেউয়াতলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম মৃত শেখ মুজিবুর রহমান ও মা মৃত ফাতেমা খাতুন। তিনি ১৯৬২ সালে খুলনা মডেল স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন, ১৯৬৪ সালে বিএল কলেজ থেকে আইএসসি ও ১৯৬৯ মজিদ মেমোরিয়াল সিটি কলেজ থেকে স্নাতক পাস করেন। রাজনৈতিক জীবনে ১৯৬২ সালের শিক্ষা কমিশন বাতিল আন্দোলনে খুলনা ছাত্রলীগের সভাপতি, স্বাধীনতার পর খুলনা যুবলীগের পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির সদস্য, বাংলাদেশ কৃষকলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ কৃষকলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি, বটিয়াঘাটা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি (৮ বছর), জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে অংশগ্রহণ (১৯৭১), খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক (১৯৭৬), খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক (১৯৭৮), জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক (১৯৮২), জাতীয় সংসদ সদস্য খুলনা-১ (১৯৮৬), জাতীয় সংসদ সদস্য খুলনা-১ (১৯৯১), বিরোধী দলীয় হুইপ, পঞ্চম জাতীয় সংসদ (১৯৯১), বন ও পরিবেশ, শিক্ষা এবং বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য (১৯৯১), খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পরে খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি (১৯৯৬), কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন।
আপনার মতামত লিখুন :