মোস্তাইন বীন ইদ্রিস (চঞ্চল),খুলনা: নানা বাধা পেরিয়ে অবশেষে খুলনায় বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ শুরু হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বক্তব্য দেবেন। সমাবেশ মঞ্চে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সম্মানে তার জন্য চেয়ার খালি রাখা হয়েছে। এর আগে গণসমাবেশে যোগ দিতে গতকাল শুক্রবার (২১ অক্টোবর) রাত থেকে নগরীর ডাকবাংলো চত্বরে সমাবেশস্থলে আসতে শুরু করেন দলীয় ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। সড়ক ও নৌপথে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় হেঁটে, মাইক্রোবাসে কিংবা ট্রাকে আসেন তারা।
সমাবেশস্থল থেকে শিববাড়ী মোড় পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকাজুড়ে লাগানো হয়েছে ১২০টির মতো মাইক। মঞ্চের নিচে বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা নেতারা বক্তব্য দিচ্ছেন।পাশাপাশি সমাবেশ মঞ্চে কেন্দ্রীয় নেতাদের পাশাপাশি দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জন্য রাখা হয়েছে একটি প্রতীকী চেয়ার। তিনি সমাবেশে যোগ না দিতে পারলেও তার জন্য সংরক্ষিত রাখা হয়েছে চেয়ারটি।
এদিকে বিএনপির গণসমাবেশের আগের দিন বিভাগীয় শহর খুলনাকে সারা দেশ থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়েছে। দুই দিন আগে থেকে সড়কপথে বাসসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। আর গতকাল শুক্রবার থেকে নদীপথে লঞ্চ চলাচলও বন্ধ করে দিলে খুলনা মহানগর অনেকটা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। সমাবেশকে কেন্দ্র করে খুলনার অন্যান্য এলাকার সড়ক এখন অনেকটাই ফাঁকা। অজানা আতঙ্কে রয়েছেন নগরবাসী, প্রয়োজন ছাড়া বাসা থেকে বের হননি। সমাবেশকে ঘিরে পিকচার প্যালেস, ডাকবাংলো, থানা মোড়, ক্লে রোড, মহেন্দ্র দাসের মোড়, স্টেশন রোডসহ আশপাশের এলাকার প্রায় সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। নাশকতা এড়াতে আশপাশের এলাকায় নেওয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
বিএনপির গণসমাবেশ উপলক্ষে গঠিত উপকমিটির সদস্য মিজানুর রহমান মিল্টন বলেন, সমাবেশ স্থলে আসার পথে বিভিন্ন জায়গায় বিএনপির নেতাকর্মীদের বাধা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সব বাধা উপেক্ষা করে জনতার ঢল নেমেছে।খুলনা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন বিপ্লব বলেন, বুধবার খুলনা জেলা বাস-মিনিবাস কোচ মালিক সমিতির জরুরি সভায় পরিবহন দুদিন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।সমিতির কর্মকর্তা, শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ ও মালিকদের উপস্থিতিতে সভায় বলা হয়, হাইকোর্টের সিদ্ধান্ত অমান্য করে সড়ক-মহাসড়কে নসিমন-করিমন, মহেন্দ্র, ইজিবাইক ও বিটিআরসির গাড়িগুলো চলাচল করছে। তাই এসব যান বন্ধের দাবিতে ২১ থেকে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত দুদিন মালিক সমিতির সব গাড়ি বন্ধ রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি, নির্বাচনকালীন সরকার, জ্বালানিসহ নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, পুলিশের গুলিতে নেতাকর্মী হত্যা ও মামলার প্রতিবাদে দেশের বিভাগীয় শহরগুলোতে গণসমাবেশের কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহের পর আজ খুলনা বিভাগীয় শহরে তৃতীয় গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :