মোস্তাইন বীন ইদ্রিস চঞ্চল, খুলনাঃ খুলনায় ভেজাল খেজুরের গুড়ে সয়লাব। সাইকেল বা ঝুড়িতে মাটির তৈরি গুড়ের ঠিলা নিয়ে বাড়ী বাড়ী যেয়ে নরম বা পাটালি গুড় বিক্রি করছে ভ্রাম্যমান ব্যবসায়িরা। তবে এসব গুড়ে খেজুরের রসের ঘ্রান থাকলেও এগুলো আসল খেজুরের গুড় না সবই ভেজাল গুড়।
এদিকে খুলনায় খেজুর গাছগুলো গাছির অভাবে অধিকাংশ খেজুর গাছ কাটাতে পারিনি মহাজনেরা যে কারণে এখন খেজুরের রসের চাহিদা বেড়েছে। পাশাপাশি শীতের মৌসুমে বাড়ী বাড়ী শীতের পিঠা তৈরিতে প্রয়োজন খেজুরের গুড় আর এই সুযোগে এক ধরণের অসাধু ব্যবসায়িরা তৈরি করছে ভেজাল গুড়। এই ভেজাল গুড় গুলো ছড়িয়ে পড়ছে খুলনার পাড়া-মহল্লায়।
এছাড়া প্রতি ঠিলা খেজুরের রসের দাম এখন ৩০০ টাকা নির্ধারণ করা থাকলেও পাওয়া যাচ্ছে না সঠিক সময়ে। এদিকে খেজুরের রসের উৎপাদনের থেকে বেশি রয়েছে রসের চাহিদা। যে কারণে গাছিদের সাথে কথা বলে আগাম টাকা দিয়ে কয়েকদিন অপেক্ষা করার পর মেলে কাঙ্খিত খেজুরের রস। এদিকে সরেজমিনে দেখা যায় নগরীর শহীদ শেখ আবু নাসের হাসপাতালে এলাকায় সাইকেলে করে মাটির ঠিলার মধ্যে খেজুরের গুড় বিক্রি করছেন ভ্রাম্যমান গুড় ব্যবসায়ি মোঃ ফারুক খেজুরের গুড়ের কেজি ২২০ টাকা দাবি করলেও তিনি ২০০ টাকায় বিক্রি করতে রাজি হয়। তবে এসব মাটির পাত্রে গুড় থাকলেও এগুলো আসল খেজুরের গুড় না। এক পর্যায়ে অন্য এক ক্রেতার সাথে বাকবিতন্ডা তৈরি হয় তার সাথে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়তে তিনি সত্যি কথা স্বীকার করে বলেন, আমার খেজুরের গুড় ভালো কোন ভেজাল না। তবে ব্যবসায়িরা আছে যারা নষ্ট চিনি দিয়ে তৈরি করে খেজুরের গুড়। আমাদের বাড়ী চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবন নগর এলাকায়।
খুলনায় ১৫ থেকে ২০জনের একটি দল রয়েছে। যারা সারাদিন গ্রামের পাড়া মহল্লায় গুড় বিক্রি করে। আর রাত্রের বেলায় দৌলতপুর কাচাবাজারে ঘুমায়। এছাড়া গুড় বিক্রি শেষ হলে ফোন করলে ট্রেনে করে এই গুড় খুলনায় পাঠিয়ে দেয় ব্যবসায়িরা। আমরা বাড়ী বাড়ী যেয়ে এই গুড় বিক্রি করি। আমরা এসব উৎপাদিত গুড়ের কারখানা থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে ক্রয় করি। এছাড়া আমরা খুব বেশি ভেজাল দিয়ে গুড় তৈরি করি এটা সঠিকনা। খেজুরের রস জালিয়ে যখন একটু রং পরিবর্তন হয় ঠিক তখনই চিনি দেয়া হয়। এছাড়াও ফিটকেরি, ডালডা ও চুনসহ কিছু উপাদান দেয়া হয়। দশ ঠিলা রস দিয়ে আট ঠিলা গুড় তৈরি হয়। এছাড়া এই গুড় খেয়ে কেউ বুঝবেনা যে নকল খেজুরের গুড় যতক্ষন পর্যন্ত পরিক্ষা না করা হয়।
এ বিষয়ে খুলনা ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. শেখ মোহাম্মাদ কামাল হোসেন বলেন, এ ধরণের ভেজাল গুড় তৈরি কোন খাবার বা গুড় খেলে শরিরে বিভিন্ন সমস্যা তৈরি হয়। এর কারণে দীর্ঘ মেয়াদি সমস্যা হতে পারে বমি ববি ভাব,বদ হজম, সহ গ্যাস্ট্রলজি সমস্যা হয় এগুলো শরিরের জন্য মারত্মক ক্ষতিকর। এবিষয়ে খুলনা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণের বিভাগীয় উপ পরিচালক মো.ইব্রাহিম হোসেন বলেন, আমরা চুয়াডাঙ্গা অভিযান পরিচালনা করেছি। যেহেতু খুলনায় উৎপাদন হচ্ছেনা অন্য জেলা থেকে এখানে সরবারাহ করছে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি দ্রুত ব্যবস্থা নিব।