খুলনা অফিসঃ খুলনা সিভিল সার্জন অফিসের আওতায় ৪৪ জন আউটসোর্সিং জনবল নিয়োগের দরপত্রে পিপিআর বহির্ভূত ও উদ্দেশ্যমূলক শর্ত দেওয়া ক্ষুব্দ ঠিকাদাররা।
দুর্নীতি তদন্ত চেয়ে স্বাস্থ্য পরিচালকের দপ্তরে চিঠি দিয়েছেন তারা। এতে বলা হয় আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে নির্দিষ্ট একজন ঠিকাদারকে কাজ দিতে উদ্দেশ্য মূলক এই শর্ত দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়েছে।
স্বাস্থ্য পরিচালকের দপ্তরের দেওয়া ওই চিঠিতে বলা হয় পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১১জন এবং চারটি উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ৪৪ জন জনবল সরবরাহের দরপত্র শর্তযুক্ত করা হয়েছে,যা পিপিআর বহির্ভূত এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে নির্দিষ্ট কোম্পানিকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য। চিঠিতে উল্লেখ হয়েছে, সিভিল সার্জন অফিসের হিসাব রক্ষক মাহফুজুর রহমানের সঙ্গে ঠিকাদাররা এ বিষয়ে কথা বললে তিনি জানান, এই শর্তাবলী দেওয়ার জন্য শুধু আমি না,সিএস স্যারের কথা মতোই এই শর্তাবলি দিয়েছি। সবাই শুধু শুধু আমাকে দোষারোপ করছেন কেন? সিএস স্যারের কথার বাইরে আমি কিছু করি না। অভিযোগ রয়েছে অর্থের বিনিময়ে উদ্দেশ্যমুলক শর্ত দিয়ে নির্দিষ্ট একজন ঠিকাদারকে কাজ দিয়ে ঘুষ গ্রহণের প্রথা চালু করেছে সিভিল সার্জন দপ্তর। একই সাথে সরকারি প্রতিষ্ঠানে ঘুষখোর কর্মকর্তারা এই ধরনের অনৈতিক কাজের মাধ্যমে সরকারি স্বাস্থ্যসেবা খাতকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছে।
জানা যায়, এর আগে ঠিকাদারদের অসন্তোষের মধ্যে ৭ মার্চ বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জাকির উদ্দিন আহমেদ লিগ্যাল নোটিশ দিয়ে খুলনা সিভিল সার্জনকে ওই দরপত্র বাতিলের আহবান জানান। তিনি লিগ্যাল নোটিশে উল্লেখ করেন ৯টি পদের বিপরীতে ৪৪ জনবল সরবরাহ বিজ্ঞপ্তিতে বেআইনী
উদ্দেশ্য মূলক ভাবে বিশেষ ব্যক্তিকে কাজ পাইয়ে দিতে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন (পিপিআই) ২০০৩ ও
পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা (পিপিআর) ২০০৮ লঙ্ঘন করে দরপত্র দাখিলের ঠিকাদারদের ‘বি’ ক্যাটাগরির নবায়নকৃত লাইসেন্স দাখিল করতে বলা হয়।
পিপিআর অনুযায়ী ১-২০০ জন জনবল নরবরাহের ক্ষেত্রে ‘এ’ ক্যাটাগরির লাইসেন্স ও ১-৫০০ সরবরাহের ক্ষেত্রে ‘বি’ ক্যাটাগরির লাইসেন্স প্রয়োজন হয়। সেক্ষেত্রে স্মারক
নং- সিএসকে/আউট সোর্সিং/-শা- জন জনবল
৩/২০২৩/৩৬০-এ জনবল সরবরাহের বিজ্ঞপ্তিটি মাত্র ৪৪ জন জনবল সরবরাহের জন্য উদ্দেশ্যমূলক ক্যাটাগরি লাইসেন্স দাখিলের জন্য বলা হয়েছে। যাতে ‘এ’ ক্যাটাপরি
বি লাইসেসধারীরা উক্ত দরপত্রে অংশগ্রহণ করতে না পারে। একই সাথে ২০২১-২২ এবং চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের
মধ্যে মোট ৪টি সরকারি প্রতিষ্ঠানে জনবল সরবরাহ্ কার্যাদেশ ও চলতি অর্থবছরসহ ২০২১-২২ অর্থবছরের মধ্যে আউটসোর্সিং খাত থেকে প্রাপ্য অর্থ কমপক্ষে চার কোটি টাকা থাকার উদ্দেশ্যমূলক শর্ত দেয়া হয়েছে। সিএস দপ্তরের ঘনিষ্ঠ বি ‘বি’ ক্যাটগরির লাইসেন্সধারী ঠিকাদারকে কাজটি দেয়ার জন্য দরপত্র বিজ্ঞপ্তির ৪ ও ৫নং শর্ত
পক্ষপাত দুষ্ট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত, ৮নং ব শর্ত পিপিআর-এর আইন বহির্ভূত এবং ১০নং শর্ত পিপিআর-এর বিধি বহির্ভূত। এতে অনেক ঠিকাদার দরপত্র কিনতে পারেনি। ফলে সরকার রাজস্ব হতে বঞ্চিত হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :