• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:১৫ অপরাহ্ন

খুলনার পাইকগাছায় জমে উঠেছে সুপারির বাজার


প্রকাশের সময় : অক্টোবর ১৮, ২০২৪, ৬:০১ অপরাহ্ন / ৩৭
খুলনার পাইকগাছায় জমে উঠেছে সুপারির বাজার

মানছুর রহমান জাহিদ, পাইকগাছা, খুলনাঃ খুলনার পাইকগাছার হাট-বাজারে জমে উঠেছে সুপারির বেচাকেনা। সুপারি বাংলাদেশের একটি অর্থকারী ফসল। কাঁচা, শুকনা ও মজানো সুপারি পান পাতা দিয়ে মুড়িয়ে খিলি বানিয়ে খাওয়া হয়। সুপারি ছাড়া পানের পূর্ণতার কথা ভাবাই যায় না। এছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানেও সুপারির ব্যবহার অন্যতম। বর্তমানে সুপারির ফলন কমে যাওয়ায় খুলনার পাইকগাছায় হাট-বাজার গুলোতে সুপারির সরবরাহের পাশাপাশি বেচাকেনা কমে গেছে। উপজেলার উঁচু অঞ্চলখ্যাত এলাকায় এমন কোন পরিবার ছিলনা যার বাড়ীতে একসময় সুপারি বাগান ছিলনা। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে সুপারির চাষ কমে গেছে। বিগত আমল অপেক্ষা সুপারির মুল্য অনেক বেশি। অজানা কারণে গাছ মরে যাওয়ায় ফলন কমে গেছে। এক সময়ে বাজারে সারি সারি বসতো কাদি কাদি কাঁচা সুপারির বাজার। তখন কাঁচা সুপারির মৌসুম চলে গেলেও বিক্রি হতো শুকনা ও ভািজা বা মজানো সুপারি। ঝাঁকে ঝাঁকে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসতো সুপারির ব্যাপারিরা। বর্তমানে সুপারির বাগান কমে যাওয়ায় সেসব এলাকায় গড়ে উঠছে বসত বাড়ী। আর সেখানে লাগাচ্ছে আম, জাম সহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ।

উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় ২১৫ হেক্টর জমিতে সুপারির বাগান রয়েছে। গাছের সংখ্যা প্রায় ৪০ হাজার ৪’শ টি। গাছ প্রতি গড়ে ফলন ৪’শ ৪০টি। প্রায় গাছে ৩ থেকে ৪ কাধি সুপারির ফলন ধরে। সর্বনিম্ন ৫০ থেকে ১৫০ আবার কোনো গাছে ৬ থেকে ৭শ সুপারি ধরে। লবণাক্ত এ উপজেলায় ভূমির অবস্থান উঁচু ও বিলান এবং নিচু ও বিলান জমির পরিমাণ বেশী। উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার মধ্যে হরিঢালী, কপিলমুনি, গদাইপুর ও রাড়ুলীতে সুপারি গাছের পরিমাণ বেশী। উৎপাদিত সুপারি বাণিজ্যিক শহর কপিলমুনি, আগড়ঘাটা, গদাইপুর ও বাঁকা বাজারে বেশি বেচা- বিক্রি চলে। চাঁদখালী ইউনিয়ন ও পৌরসভার আংশিক এলাকায় সুপারি গাছ রয়েছে। বর্তমানে সুপারির হাট-বাজারে প্রচুর পরিমাণ সুপারি বিক্রি হচ্ছে। বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন হাট থেকে সুপারি সরবরাহ করছে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বাজার থেকে পাইকারী সুপারি ক্রয় করে এলাকার বাইরে মোকাম গুলোতে বিক্রি করছে। তাছাড়া স্থানীয় কিছু ব্যবসায়ীরা সুপারি ক্রয় করে গুদামজাত করছে। যা পরে শুকিয়ে বা পানিতে মজিয়ে পরবর্তীতে বিক্রি করবেন। উপজেলার গদাইপুর বাজারের এক সুপারি ব্যবসায়ী জানান, এ বছর সুপারির ফলন খুব ভাল হয়েছে তবে আগের তুলনায় কম এবং বাজার মূল্য ভালো হলেও বেচা কেনা কম এতেও তিনি খুশি। স্থানীয় সুপারি ব্যবসায়ীরা জানান, অন্য বছরের তুলনায় এ বছর বাজারে প্রচুর পরিমাণ সুপারি উঠেনি। তারা আরও জানান, স্থানীয় হাট-বাজার থেকে পাইকারী সুপারি কিনে তারা বড়দল, সোলাদানা, শান্তাসহ পাশ্ববর্তী হাট-বাজারের আড়ত গুলোতে সুপারি বিক্রয় করে। সুপারির হিসাব অঞ্চল ভিত্তিক হিসাবে ভিন্ন। এ এলাকায় এক কুড়ি (৫৫গোন্ডা) অর্থাৎ ২২০টি সুপারি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ অসিম কুমার দাস জানান, সুপারি এ অঞ্চলের একটি অর্থকারী গুরুত্বপূর্ণ ফসল। তাছাড়াও এ এলাকার সুপারির মানও ভালো। তবে লম্বা সুপারি গাছ গুলো মরে যাওয়ায় অথবা কেঁটে ফেলায় নতুন করে সুপারির বাগান তেমন একটা গড়ে উঠছে না। তাই কৃষি অফিস থেকে নতুন করে সুপারি বাগান তৈরীর জন্য বাগান মালিক ও কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।