নিজস্ব প্রতিবেদক, নাঙ্গলকোট, কুমিল্লাঃ কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে টেন্ডার ছাড়াই বিদ্যালের গাছ বিক্রিসহ নানা অনিয়ম দুনীতির অভিযোগ উঠেছে মো. রবিউল হোসেন নামের এক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।উপজেলার দৌলখাঁড় ইউপির সোন্দাইল উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, চতুর্দিকে ছায়া ঘেরা সোন্দাইল উচ্চ বিদ্যালয়। মনোরম পরিবেশে চলে শিক্ষার্থীদের ক্লাস। উন্নয়নের কথা বলে বিদ্যালয়ের বিশাল আকৃতির বিভিন্ন প্রজাতির ৯০টি গাছ ২ লাখ ৭৫ হাজার টাকায় অভিভাবক সদস্য আব্দুর রফের কাছে বিক্রি করেন প্রধান শিক্ষক। যার বর্তমান বাজার মূল সাড়ে তিন লাখ থেকে সাড়ে চার লাখ টাকা হবে বলে দাবি স্থানীয় লোকজনের।
গত বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) বিদ্যালয়ের গাছ কাটা শুরু করেন আব্দুর রফ। পরে উপজেলা প্রশাসন খরব পেয়ে গাছ কাটার বন্ধ করে দেন। এরি মধ্যে ৬টি গাছ কেটে ফেলেন তিনি।
এর আগে প্রধান শিক্ষক মো. রবিউল হোসেনের বিরুদ্ধে উন্নয়নের কথা বলে বছরের শুরুতে ভর্তি ফি বাবত ৭ থেকে ৮ লাখ টাকা ও নিলাম ছাড়া ৯০টি গাছ ২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা বিক্রি করে। ওই টাকা প্রধান শিক্ষক ম্যানেজিকং কমিটির সদস্যদের নিয়ে ভাগ বাটোয়ারা করে নেয়ার অভিযোগ এনে স্থানীয় হামিদুল হক চৌধুরী নামের এক ব্যাক্তি গত ১৭ জানুয়ারি কুমিল্লা জেলা প্রশাসক খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমানের নিকট একটি লিখিত অভিযোগ দেন। যার অনুলিপি বিভিন্ন দপ্তরেও পাঠান।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, ৯ শত ১০ টাকা দিয়ে বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছি। এ টাকার কোন রিসিট পাইনি। বিদে কি না তাও জানি না। গত এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ফরম পিলাফ বাবত ৪ হাজার ৫ শত টকা থেকে ৫ হাজার টাকা করে নিয়েছে প্রধান শিক্ষক। এখন দেখতেছি বড় বড় গাছগুলো বিক্রি করে দিয়েছে। গরমের সময়ে ওই গাছের নিচে বসে একটু বাতাস খেতাম। গাছগুলো কেটে ফেলে তাও আর হবে না।
এ বিষয়ে হামিদুল হক চৌধুরী বলেন, এ প্রধান শিক্ষক ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের হাত করে বিভিন্ন অনিয়ম দুনীতি করে যাচ্ছে। তা বন্ধ করতে তিনি কুমিল্লা জেলা প্রশাসক সহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য আব্দুর রফ বলেন, রাতের বেলায় মাদক কারবারি বিদ্যালয়ের ভিতরে আড্ডা দেয়। তাই বিদ্যালয়ের সীমানার দেওয়াল নির্মাণ করতে গাছ গুলো বিক্রি করা হয়। গাছ গুলো কে ক্রয় করেছেন জানতে চাইলে তিনি কোন উত্তর দেননি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মো. রবিউল হোসেন বলেন, ভর্তি ফি আর এসএসসি ফরম পূরণে যে টাকা আসে তা দিয়ে শিক্ষকের বেতন ভাতা দেয়া হয়। বিদ্যালয়ের উন্নয়ন কাজের জন্য গাছ গুলো বিক্রি করা হয়েছে। ৪-৫টি গাছ কাটা হয়েছে। এখন গাছ কাটা বন্ধ রয়েছে। গাছ কাটার আইন যে রয়েছে তা আমার জানা ছিলো না। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বন বিভাগের সঙ্গে আলোচনা করে টেন্ডারের মাধ্যমে গাছ কাটা হবে।
এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত বন কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, অভিযোগের আলোকে গাছ কাটা বন্ধ করে দিয়েছি। প্রতিবেদন তৈরি করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট দাখিল করা হবে।
এ বিষয়ে নাঙ্গলকোট উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইসমাইল হোসেন বলেন, এ ঘটনার অভিযোগের আলোকে বন কর্মকর্তাকে তদন্ত করে একটি প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। তদন্তের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আপনার মতামত লিখুন :