মনিরুজ্জামান অপূর্ব,ঢাকা : সম্প্রতি গুলশান, বনানী, প্রগতি সরণী, হাতির ঝিল, এয়ারপোর্ট রোড, মানিক মিয়া এভিনিউসহ ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় কিছু যুবকের উচ্চ শব্দে হর্ণ বাজিয়ে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালিয়ে দুর্ঘটনা বৃদ্ধি, জনসাধারণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি ও শান্তি শৃঙ্খলা বিঘ্নের তথ্য জানিয়ে বাংলাদেশ পুলিশের মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং পরিচালিত বাংলাদেশ পুলিশ ফেইসবুক পেইজের ইনবক্সে একটি বার্তা প্রেরন করেন এক সচেতন নাগরিক। এই বার্তা পেয়ে মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং মাঠ পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণের সাথে যোগাযোগ করে এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেয়।
এ নির্দেশনার প্রেক্ষিতে পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট, বিশেষতঃ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গুলশান বিভাগ ও ট্রাফিক গুলশান বিভাগ বেপরোয়া গতি ও উচ্চ শব্দে হর্ণ বাজিয়ে জন উপদ্রব সৃষ্টিকারী এসব গাড়ির বিরুদ্ধে যৌথভাবে অভিযান শুরু করে। উক্ত বিশেষ অভিযানে ২০ জুন ২০২১ তারিখ হতে ২৪ জুন ২০২১ তারিখ পর্যন্ত মোট ২১টি গাড়ির বিরুদ্ধে সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। এছাড়া, আরো প্রায় ৮০ টি গাড়িকে বিভিন্ন ছোট-খাটো বিচ্যুতির জন্য সতর্ক কার হয়।
পরবর্তীতে, ড. বেনজীর আহমেদ, বিপিএম (বার), ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ মহোদয় সংশ্লিষ্ট সমস্যাটির প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানপূর্বক এ সংক্রান্তে একটি যুগোপযোগী সমাধানের লক্ষ্যে আজ ২৭ জুন ২০২১ খ্রি. পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স এর শাপলা সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশের কার রেসার, স্পোর্টস কার ওনার, কার এনথুজিয়াস্ট, কার ব্লগারসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মহলের প্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময় করেন।
সভায় আইজিপি বলেন, দেশে ক্রমবর্ধমান হারে বেড়ে উঠা এ সকল গ্রুপ এ দেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিরই একটি নিদর্শণ। তবে, যেহেতু বাংলাদেশ এ মুহূর্তে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের একটি পটপরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে এবং এ ধরনের সংস্কৃতি আমাদের দেশে এখনো ব্যাপকভাবে গ্রহণযোগ্যতা পায়নি, তাই এক্ষেত্রে এখনো যথেষ্ট অবকাঠামো এবং শৃঙ্খলা গড়ে উঠেনি যার ফলে নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে, প্রশিক্ষিত জনবলের মাধ্যমে, কার রেসিংয়ের আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে, সুনির্ধারিত ট্র্যাকে এ ধরণের কার্যক্রম পরিচালনার উদ্যোগ গ্রহনের উপর তিনি সবিশেষ গুরুত্বারোপ করেন। পাশাপাশি জনবহুল আবাসিক ও বাণিজ্যিক এলাকায় উচ্চগতিতে ও উচ্চ শব্দে হর্ণ বাজিয়ে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালনা বন্ধ করতে পুলিশের সংশ্লিষ্ট ইউনিট সমূহকে তিনি কঠোর নির্দেশনা দেন।
সভায় ট্রাফিক আইন প্রতিপালনে গাড়ি চালকদের আরো উৎসাহিত করা, বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো বন্ধ করা, ট্রাফিক আইন বিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধিতে গণমাধ্যমের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রচারণা চালানো, রাস্তায় চলাচলের সময় পথচারীদেরে করনীয় সম্পর্কে সচেতন করা ইত্যাদি বিষয়েও আলোচনা হয়।