আজিজুল ইসলামঃ লেখাপড়া শিখে সবাই যখন চাকরির পেছনে ছুটছে সেরকম একটা সময়ে ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে চাকুরির পেছনে না ছুটে যশোরের ঝিকরগাছা পৌরসদরের মোর্শেদ ড্রাগন চাষ করে অর্জন করেছেন সফলতা, ঘুচিয়েছে নিজের বেকারত্ব, কর্মসংস্থানের ব্যবস্হা করেছেন আরও কয়েকজনের। ঝিকরগাছা পৌরসভার কৃষ্ণনগর (উত্তর পাড়া) গ্রামের মোজাম আলী এবং ফাতেমা খাতুন দম্পতির দুই ছেলের মধ্যে ছোট ছেলে জে এম রিয়াজ মোর্শেদ। ২০০৭ সালে যশোর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে রহিম আফরোজ কোম্পানিতে কর্মজীবন শুরু করেন। ২০১৭ সালে একটি দুর্ঘটনায় আহত হয়ে চাকরি ছেড়ে বাড়ি চলে আসেন। এরপর ২০১৮ সালে বাড়ির পাশে পৈত্রিক এক বিঘা জমিতে ২২০ টি পিলার পুঁতে শুরু করেন বিদেশি ফল ড্রাগন এর চাষ। তখন এই অঞ্চলে এই চাষের খুব বেশি প্রচলন ছিল না। কি হবে সেসব না ভেবে নিজের মেধা আর পরিশ্রম দিয়ে বাগানের পরিচর্যা করে যান। পরের বছরই ধরা দেয় সফলতা। ২য় বছরে বাগানে যে ফলন হয় তাতে তার খরচের টাকা উঠে আসে। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। এখন মোর্শেদের দুটি ড্রাগন বাগানে খুঁটির সংখ্যা ৫০০। এ বছর তিনি ৫ থেকে ৬ লক্ষ টাকার ড্রাগন ফল বেচবেন বলে আশাবাদী। সরজমিন পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায় কয়েকজন শ্রমিককে সাথে নিয়ে বাগান পরিচর্যার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন ইঞ্জিনিয়ার মোর্শেদ। বাগান জুড়ে গাছে গাছে লাল, সবুজ ড্রাগন ঝুলছে। কিছু গাছে ফলের সাথে ফুলও ফুটে আছে। মোর্শেদ জানান এটি একটি লাভজনক প্রজেক্ট। ১ম বছরে একবার টাকা বিনিয়োগ করলে পরবর্তী ১৫ বছর এই বাগান থেকে অর্থ উপার্জন করা সম্ভব। চাকরির পেছনে না ছুটে কৃষি উদ্যোক্তা হয়ে নিজের সংসার চালানোর পাশাপাশি অন্য লোকেরও কর্মসংস্থান করার সুযোগ আছে এখানে। তিনি আরও বলেন, তার বাগান দেখে এখন অনেকেই ড্রাগন চাষে এগিয়ে এসেছেন। তিনি অনেককেই নিজের ড্রাগন কান্ড দিয়ে বাগান করতে সহযোগিতা করেছেন। তবে সরকারি কোনো সহযোগিতা বা কৃষি কর্মকর্তাদের সহযোগিতা পাননি বলে তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, কৃষি কর্মকর্তারা যদি মাঝেমধ্যে বাগান পরিদর্শনে আসে এবং সুপরামর্শ দান করে তবে ভবিষ্যতে আরও ভালো কিছু করা সম্ভব এখান থেকে। বর্তমানে বাগান থেকেই পাইকারী ব্যবসায়ীরা ২০০ টাকা দরে ড্রাগন কিনে নিয়ে যাচ্ছেন এবং বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে অত্যান্ত পুষ্টি গুন সম্পন্ন সুস্বাদু এই ফলের।
আপনার মতামত লিখুন :