নিজস্ব প্রতিবেদক: নাম মো. শরীফ হোসেন। বয়স সবে মাত্র ২২। তবে এই বয়সেই তিনি উত্তরার আজমপুর থেকে আব্দুল্লাহপুর বাসস্ট্যান্ড হয়ে টঙ্গী স্টেশন রোড পর্যন্ত সড়কের ছিনতাই চক্রের দলনেতা হয়েছেন। আর এই চক্রেরই আরেক সদস্য ফোন সেটের আইএমইআই পরিবর্তনের কাজ করতেন ৫০০ থেকে এক হাজার টাকায়। এছাড়া তার নেতৃত্বে এই দলের সদস্যরা সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলন্ত গাড়ি থেকে থাবা দিয়ে কিংবা অন্ধকারে নিরীহ পথচারীদের জিম্মি করে মোবাইল ফোন ছিনতাই করে। এরপর সেগুলো প্রথমে শরীফের কাছে জমা রাখা হয়। এরপর শরীফ এসব মোবাইল কম দামে কিনে আব্দুল্লাহ বাবু ও শ্যামলের মাধ্যমে বাজারে বিক্রি করতেন। দীর্ঘদিন থেকেই তারা এই কাজে জড়িত। এর মাঝেই চুরি বা ছিনতাই করেছেন অসংখ্য মোবাইল ফোন।
র্যাব সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শরিফ জানান, একদিনে সর্বোচ্চ ৫০টি পর্যন্ত ছিনতাই মোবাইল ফোন সংগ্রহ করেছেন তিনি। শুক্রবার দুপুরে র্যাব-১ এর সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন এ সব কথা বলেন। টঙ্গী-আব্দুল্লাহপুর থেকে দিনে ৫০ মোবাইল ছিনতাই করতো চক্রটি। ছিনতাইয়ের অভিযোগে এই পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। টঙ্গী ও রাজধানীর আব্দুল্লাহপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকার ছিনতাই চক্রের অন্যতম মূলহোতা শরীফ হোসেন।
এই কাজে তাকে সাহায্য করতো চক্রের অন্যান্য সদস্যরা। এই ঘটনায় দলনেতা শরীফ ছাড়াও গ্রেপ্তার অন্য আসামিরা হলেন, আব্দুল্লাহ বাবু ও মো. শ্যামল হোসেন ওরফে রাব্বি নাছির রাজ, ও সাজেদুল আলম ওরফে শাওন। তাদের কাছ থেকে ছিনতাই করা একটি মোটর সাইকেল, ৫৯টি মোবাইল ফোন, একটি হাতঘড়ি এবং কম্পিউটারের দুটি সিপিইউ, দুটি মনিটর, একটি সিসি ক্যামেরা, একটি ডিভিআর, দুটি ভিসা কার্ড এবং ২৯ হাজার ৩৮৫ টাকা উদ্ধার করা হয়।পরবর্তীতে তাদের দেওয়া তথ্যে টঙ্গী বাজার এলাকা থেকে নাছির রাজ ও সাজেদুল আলম ওরফে শাওনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন বলেন, গ্রেপ্তার আব্দুল্লাহ বাবু ও শ্যামল ছিনতাই করা মোবাইল ও অন্যান্য মালামাল বিক্রির কাজে জড়িত। তারা বিভিন্ন দোকান, অনলাইন প্লাটফর্ম ও বিভিন্ন লোকের কাছে খুচরা হিসেবে এসব মোবাইল বিক্রি করেন। বাজার মূল্যের চাইতে প্রায় অর্ধেকেরও কম দামে এসব মোবাইল বিক্রি করা হয়।
অন্যদিকে গ্রেপ্তার নাছির মোবাইল ইঞ্জিনিয়ার। টঙ্গী বাজারে তার একটি মোবাইল মেরামতের দোকান রয়েছে। ওই দোকানে বৈধ ব্যবসার আড়ালে চোরাই মোবাইলের লক খোলা ও আইএমইআই পরিবর্তনের কাজ করতেন তিনি। নাছির তিন বছর ধরে নিজস্ব দোকানে ব্যবসা করে আসছেন। ব্যবসা শুরুর আগে নাছির অন্য একটি দোকানের কর্মচারী ছিলেন বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়।এছাড়া গ্রেপ্তার শাওন একটি মোবাইল মেরামত দোকানের কর্মচারী। তিনি ৫০০ থেকে এক হাজার টাকার বিনিময়ে ছিনতাই মোবাইলের লক খোলা এবং আইএমইআই পরিবর্তনের কাজ করতেন।
আপনার মতামত লিখুন :