বিশেষ প্রতিনিধিঃ বিশ্লেষণ ও ফটো বিশেষজ্ঞদের মতামতঃ বিদেশে গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুরের সঙ্গে ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ-এর সদস্য মেন্দি এন সাফাদির ছবিটি বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনার বিষয়।
ছবিটি সম্পর্কে জানতে চাইলে গণমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাৎকারে নুর জানান, এটি এডিট করা এবং মেন্দি এন সাফাদিকে তা তিনি জানেন না। ফলে প্রশ্ন ওঠে ছবিটি আসলেই এডিট করা কিনা।
এ ছবিটি এডিট করা হয়েছে কিনা জানতে ফটোগ্রাফি বিভাগে দীর্ঘদিন কর্মরত একাধিক সাংবাদিকের কাছে প্রেরণ করা হয়। এর পাশাপাশি সিমিলার ইমেজ, রিভার্স ইমেজ সার্চ থেকে শুরু করে ওয়েব্যাক মেশিনেও চেক করা হয়।
এ বিষয়ে ফটোগ্রাফি বিভাগ থেকে চারটি পয়েন্ট উল্লেখ করা হয়।
– প্রথমটি হলো ‘সাবজেক্ট এজ’ সাধারণ অর্থে বললে, যেই ব্যক্তির ছবি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে তার শরীরের বাহিরের বর্ডার লাইনের সঙ্গে ব্যাকগ্রাউন্ড ছবি পিক্সেল পারফেক্ট হবে না। এ ক্ষেত্রে লক্ষণীয় হলো চুল। সেটা পুরোপুরি মিলে যাচ্ছে। যা প্রমাণ করে এই ছবিটি এডিট করা নয়।
– অপর বিষয়টি হলো সূর্যের আলো। ছবিটিতে বামপাশ থেকে সূর্যের আলো প্রথমে মেন্দি এন সাফাদির গায়ে পড়েছে এবং এই ব্যক্তির শরীরের ছায়া স্পষ্টভাবে পড়েছে নূরের শরীরে যা আসলে এডিট করে বসানো সম্ভব নয়। এমনকি নূরের পায়ের জুতাটিতেও ছিলো সূর্যের ছটা। অর্থাৎ এভাবে ছবির আলো এডিট করা সম্ভব নয়।
– তৃতীয় বিষয়ে বলা হয়েছে তাদের উভয়ের দাঁড়ানোর ভঙ্গি। এ ক্ষেত্রে ছবিটিতে স্পষ্ট বোঝা যায়, উভয় দাঁড়িয়েছে পাশে কাউকে রেখে। ধরে নেয়া হোক এটি এডিট করা ছবি। সেক্ষেত্রে নূরকে যটি দি অন্যকারো ছবির ওপর প্রতিস্থাপন করা হয়, তাহলে এটি অসম্ভব যে একই দৈর্ঘ্য, প্রস্থ এবং ভঙ্গিমায় হুবহু আরেক ছবি মিলবে যা এভাবে শতভাগ মিলে যাবে।
– সর্বশেষ পয়েন্টে বলা হয়েছে, তাদের উভয়ের দৃষ্টিকে। ছবিটি জুম করলে বোঝা যায়, উভয়ে একই ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে আছে। কিন্তু এডিট করা ছবিতে যত বেশি জুম করা হবে ততই তাদের তাকানোর পার্থক্য বোঝা যাওয়া উচিত। এখানে সেটি হচ্ছে না।
এদিকে সিমিলার ইমেজ এবং রিভার্স ইমেজ সার্চ করে নূরের বা সাফাদির এমন একক বা অন্যকারো সঙ্গে ছবি মেলেনি। এমনকি তাদের নাম পৃথক পৃথক সার্চ ইঞ্জিনে খুঁজেও এ ধরনের কোন একক বা অন্য ব্যক্তির সঙ্গে ছবি মেলেনি।
অপর এক ব্যাখ্যায় ছবিটি এডিটেড নয় বলে জানিয়েছেন অপর একজন ফটোগ্রাফি বিশেষজ্ঞ। তিনি বলেন, সম্প্রতি সময়ে নূরের তোলা ছবিগুলোতেই এই শার্ট পরা অবস্থায় তাকে দেখা গেছে। একটু ভালো করে লক্ষ্য করলে বোঝা যাবে, তার জুতো এবং শার্ট এক। কিন্তু এ ধরণের ভঙ্গিমায় দাঁড়ানো ও এই পোশাক পরা নূরের কোন ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নেই। ফলে এই ছবিটি প্রকৃত ছবি। এডিট করা নয়।
আপনার মতামত লিখুন :