নিজস্ব প্রতিবেদক, ভোলা: ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞার ১৩ দিন পেরিয়ে গেলেও পুর্নবাসনের চাল পাননি ভোলার বেশিরভাগ জেলে। এতে অভাব অনাটন আর অনিশ্চয়তার মধ্যে বেকার সময় পার করতে হচ্ছে তাদের। দেনা আর মহাজনের দাদনের দায় মাথায় নিয়ে তাদের সময়টা পার হচ্ছে অনেকটা কষ্টের মধ্যে। তাদের সংকট দূর করতে ইলিশ নিষেধাজ্ঞার সময়ে যে সরকারি চাল পাওয়ার কথা ছিল সেটিও মিলছে না। তবে মৎস্য কর্মকর্তারা বলছেন, ১০-১২টি ইউনিয়নে চাল বিতরণ শুরু হয়েছে। আগামী ১০ দিনের মধ্যে বিতরণ কার্যক্রম শেষ হয়ে যাবে।
জানা গেছে, প্রধান প্রজনন মৌসুমে নদী ও সাগর মোহনায় ইলিশ সংরক্ষনের লক্ষ্যে ৭ অক্টোবর থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন সব ধরনের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এতে বেকার হয়ে পড়েছেন জেলার দুই লক্ষাধিক জেলে। তবে জেলার সাত উপজেলার নিবন্ধিত এক লাখ ৫৭ হাজার জেলের মধ্যে পুর্নবাসনের চাল পাবেন এক লাখ ৩২ হাজার জেলে। জেলেদের অভিযোগ, প্রত্যেক জেলেকে ২৫ কেজি করে চাল দ্রুত সময়ের মধ্যে দেওয়ার কথা থাকলেও তা এখনও পৌঁছানো হয়নি। এতে চরম সংকটে পড়েছেন উপকূলের জেলেরা। এনজিও কিস্তি এবং ঋনের দায় মাথায় নিয়ে চরম কষ্টে দিন পার করছেন তারা।
ভোলা সদর উপজেলার শিবপুরের দুলাল মাঝি বলেন, আমরা এখনও চাল পাইনি। কবে পাবো তাও জানি না। দ্রুত চাল না পেলে দিন কাটানো অনেক কষ্টের হয়ে যাবে। ভেদুরিয়া ইউনিয়নের জেলে লালমিয়া ও রুবেল বলেন, আমরা জেলের কাজ করি। ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞায় আমরা বেকার হয়ে পড়েছি। পরিবার-পরিজন নিয়ে অনেক কষ্টে দিন পার করছি। ওদিকে আবার এনজিওর কিস্তি চিন্তা তো আছেই। আমাদের যেন দ্রুতই চাল দেওয়া হয় সেই দাবি জানাই। উপকূলের জেলে হজরত অলী ও নুর উদ্দিনসহ অনেকেই জানান, ইলিশ না ধরতে পেরে জেলেদের উপার্জনও বন্ধ হয়ে গেছে। আমাদের মধ্যে অনেকেরই ধার-দেনা করে দিন কাটছে। বেশিরভাগ জেলেই কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। তাই সব জেলেদের দ্রুত চাল দিয়ে দেওয়ার দাবি জানাই।
উপকূলের বিভিন্ন ঘাট ঘুরে দেখা গেছে, বেকার জেলেদের কেউ জাল বুনে বা নৌকা-ট্রলার মেরামতের কাজে সময় পার করছেন। কিন্তু তারপরেও তাদের চোখ-মুখে যেন দুশ্চিন্তার ছাপ। নিষেধাজ্ঞার এ সময়ের মধ্যে সরকারি সহায়তা চান জেলেরা।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্যাহ বলেন, নিবন্ধিত জেলেদের আগামি ১০ দিনের মধ্যে চাল বিতরণ কাজ শেষ হবে। ইতোমধ্যে বিতরণ কাজ শুরু হয়ে গেছে।
আপনার মতামত লিখুন :