নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা ও বাগেরহাট: খুলনায় বিএনপির গণসমাবেশ আজ। সমাবেশ সফল করতে দলীয় কার্যালয়ের সামনে রাত থেকেই জড়ো হয়েছেন বিভিন্ন জেলা থেকে আসা নেতাকর্মীরা। শনিবার (২২ অক্টোবর) ভোর থেকেই মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে আসতে শুরু করেছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। এদিকে খুলনায় টানা দ্বিতীয় দিনের মতো চলছে পরিবহন ও লঞ্চ ধর্মঘট। শুক্রবার রাত থেকে বন্ধ রয়েছে খেয়াঘাটও। ফলে সড়ক ও নৌপথে চলাচল করতে বেগ পেতে হচ্ছে সাধারণ যাত্রীদের। কৌশলে খুলনায় প্রবেশ করছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। তবে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন জরুরি কাজে বের হওয়া মানুষ। বিশেষ করে বাস বন্ধ থাকায় শ্রমিকদের বিকল্প যানবাহনে ব্যয় হচ্ছে কয়েকগুণ টাকা। তবুও নিজ প্রয়োজনে ইজিবাইক, সিএনজি, হেঁটে ছুটছেন সাধারণ মানুষ।
শনিবার সকালে সোনাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে দেখা যায়, ১০-১৫ জন শ্রমিক দাঁড়িয়ে আছেন। কথা হয় তাদের সঙ্গে। তারা জানায়, বাসে ২০ টাকা ভাড়া লাগলেও অটোতে ৫০ টাকা ভাড়া লাগছে। ইব্রাহীম খলিল নামে এক দিন মজুর বলেন, এমনিতেই আমাদের নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা। তারপর ধর্মঘটের কারণে প্রায় তিনগুণ ভাড়া দিয়ে কাজে যেতে হচ্ছে। আওয়ামী লীগ, বিএনপি আমরা বুঝি না। পেটের দায়ে কাজে যাই। আব্দুস সালাম নামে অপর এক শ্রমিক জানান, মাটির কাজ করতে যাচ্ছি। কিন্তু কতক্ষণে পৌঁছাতে পারব বুঝছি না। নাবিদ ইসলাম নামে এক পরীক্ষার্থী জানান, ঝিনাইদহ থেকে আসতে পথে পথে বাধার মুখে পড়তে হয়েছে। কোনো গাড়ি আসতে চায় না। পরীক্ষার্থীদের জন্য অন্তত ছাড় দেওয়া উচিত ছিল।
জানা গেছে, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা থেকে খুলনাগামী বাস বন্ধ রাখা হয়েছে। অন্যদিকে কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, খুলনাগামী বাস থেমে যাচ্ছে যশোরে। বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির দাবি, সরকারের নির্দেশে নয় বরং মহাসড়কে নসিমন-করিমন বন্ধের দাবিতে বাস বন্ধ রেখেছেন তারা। আর বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, পরিকল্পিতভাবে যান চলাচল বন্ধ করা হয়েছে, আটক করা হচ্ছে দলীয় নেতাকর্মীদের।
খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এসএম শফিকুল আলম মনা বলেন, একটা সমাবেশকে কেন্দ্র করে সরকার এবং পুলিশের এমন তাণ্ডব খুলনাবাসী কখনো দেখিনি। পথে-পথে নেতাকর্মীদের বাধা দেওয়া হচ্ছে। আটক করা হচ্ছে। ট্রেনে যারা সমাবেশে এসেছে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। এভাবে সমাবেশ ঠেকানো যাবে না। শত বাধা উপেক্ষা করে সমাবেশের এক দিন আগেই নেতাকর্মীরা খুলনায় প্রবেশ করেছে। দূর-দূরান্ত থেকে আজও আসছে। ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় প্রায় সব নেতা খুলনায় পৌঁছেছেন।
খুলনা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন জানান, শান্তিপূর্ণ ভাবে সমাবেশ সম্পন্ন করতে সিকিউরিটি ক্যামেরা বসানো হচ্ছে। এছাড়া সমাবেশের সময় ড্রোন ক্যামেরায় নজরদারি থাকবে। পাশাপাশি সমাবেশের শৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করবে ৪০০ স্বেচ্ছাসেবক।