মোস্তাইন বীন ইদ্রিস (চঞ্চল),খুলনা: প্রায় ১ বছর পর দায়িত্ব ফিরে পেতে চলেছেন বিএনপির সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা নজরুল ইসলাম মঞ্জু। তিনি একা নন, তার অনুসারীরাও ফিরতে পারেন দলে। ২২ অক্টোবর বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সমাবেশের মঞ্চেও দেখা যেতে পারে খুলনা মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও খুলনা-২ আসনের সাবেক এই সংসদ সদস্যকে। খুলনা বিএনপির রাজনীতিতে এটি এখন টক অব দ্য টাউনে পরিণত হয়েছে। বিএনপি নেতারা বলছেন, এটা শুধু এখন সময়ের ব্যাপার।বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভায়ও এ ধরনের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে।
দলীয় সূত্র অনুযায়ী, ২০২১ সালের ৯ ডিসেম্বর খুলনা মহানগর বিএনপির ৩ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে কমিটি থেকে বাদ পড়েন নজরুল ইসলাম মঞ্জু ও তার অনুসারীরা। পরে ১২ ডিসেম্বর দলের এই সিদ্ধান্ত পুর্নবিবেচনার দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। ফলাফল হিসেবে ২ দিন পর ১৪ ডিসেম্বর শোকজ করা হয় মঞ্জুকে। ২৫ ডিসেম্বর তাকে বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। অব্যাহতির পর নিজেকে গুটিয়ে নেন তিনি। তার অব্যাহতির পর খুলনা মহানগরীর প্রায় ৫৫০ জন নেতা ঘোষণা দিয়ে বিএনপি থেকে পদত্যাগ করেন। এর মধ্যে ছিলেন খুলনা মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি, যুগ্ম সম্পাদক, ৫ থানার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক এবং ওয়ার্ড কমিটির নেতারা। দল থেকে অব্যাহতি পাওয়ার পর নজরুল ইসলাম মঞ্জু নিজেকে বিএনপির একজন কর্মী হিসেবে পরিচয় দিয়ে তার অনুসারীদের নিয়ে বিভিন্ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেন। সারাদেশে সমাবেশের অংশ হিসেবে আগামী ২২ অক্টোবর খুলনায় দলটির বিভাগীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। দলের বৃহৎ একটি অংশকে বাইরে রেখে এত বড় সমাবেশ আয়োজন নিয়ে দলের মধ্যে সৃষ্টি হয় ক্ষোভ ও অসন্তুষ্টি। বিষয়টি কেন্দ্রীয় নেতাদেরও অবহিত করা হয়।
কেন্দ্রীয় নেতারা বিষয়টি অবগত হওয়ার পর নজরুল ইসলাম মঞ্জু ও তার সঙ্গে পদত্যাগকারীদের নিয়েই বিভাগীয় সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নেন। কেন্দ্রীয় নেতারা বিষয়টি নিয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলোচনা করেন। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এ বিষয়ে সম্মতি দিয়েছেন বলে দলীয় সূত্রে জানা যায়। এ ব্যাপারে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, অনেক চমক আছে। সময় হলেই সব জানতে পারবেন।
অবশ্য নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, বিগত প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে খুলনায় বিএনপিকে যারা নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাদের কাউকেই আহ্বায়ক কমিটিতে রাখা হয়নি। খুলনায় বিএনপিকে আজকের পর্যায়ে আনতে যারা শ্রম দিয়েছেন, জেল খেটেছেন তারা আজ দলে উপেক্ষিত। তাদের বাদ দিয়ে রাজনীতিতে ফেরা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। বিষয়গুলো লিখিত ভাবে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানসহ নেতাদের জানানো হয়েছে। তাদের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছি।
মঞ্জু বলেন, কেন্দ্রীয় নেতারা হয়তো সমাবেশের আগেই বিষয়টি সুরাহা করবেন। দলের জন্য যারা সারাজীবন শ্রম দিয়েছেন, তাদের বাদ দিয়ে এই আয়োজন-তৃণমূলের কষ্ট বাড়াচ্ছে।