• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৭ পূর্বাহ্ন

আন্তর্জাতিক মানব পাচার চক্রের মূল হোতা ইউরো আশিকসহ ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব


প্রকাশের সময় : জুলাই ১১, ২০২১, ৮:০৪ অপরাহ্ন / ২৫৭
আন্তর্জাতিক মানব পাচার চক্রের মূল হোতা ইউরো আশিকসহ ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব

অপূর্ব /বেলাল দেওয়ান,ঢাকা : র‌্যাবের অভিযানে মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ ও ঢাকা হতে ভূমধ্যসাগর হয়ে ইউরোপে মানব পাচারের আন্তর্জাতিক চক্রের বাংলাদেশি এজেন্ট “রুবেল সিন্ডিকেট” এর প্রধান সমন্বয়ক “ইউরো আশিক”সহ ০৭ সদস্য গ্রেফতার। সাম্প্রতিক সময়ে বিদেশে বাংলাদেশী শ্রমিকদের সুনাম ও চাহিদার প্রেক্ষিতে বিপুল পরিমাণ জনশক্তি বিদেশে কর্মরত রয়েছে এবং দিন দিন এর চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রবাসীদের কষ্টার্জিত আয় আমাদের অর্থনীতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। কিন্তু বাংলাদেশের এক শ্রেণীর অসাধু দালাল চক্র স্বল্প আয়ের মানুষদের প্রলোভন দেখিয়ে আন্তর্জাতিক চক্রের যোগসাজসে বিদেশে অবৈধভাবে মানব পাচার করছে। এ ধরণের প্রতারণার শিকার সাধারণ নিরীহ জনগণ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে মানবেতর জীবন যাপন করছে। এছাড়া জিম্মি/বন্দী দশায় মানব পাচারকারী দ্বারা নির্মমভাবে অত্যাচারিত হচ্ছে। মানব পাচার চক্রের গুলিতেও অনেকে নিহত হয়েছে। এভাবে ঝুঁকিপূর্ণ পথে বিদেশ গমণে মৃত্যুর মুখে পতিত হচ্ছে। এ ধরণের গর্হিত অপরাধের সাথে যুক্তদের আইনের আওতায় আণয়ন ও তাদের মূল উৎপাটনের লক্ষ্যে র‌্যাব সর্বদা সক্রিয় ভূমিকা পালন করে আসছে। অবৈধভাবে বিভিন্ন দেশে মানব পাচারের অপরাধে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এ পর্যন্ত র‌্যাব কর্তৃক ৩৩৩টি অভিযান পরিচালনা করে ৮৯৬ জনকে গ্রেফতার করে এবং ৭৭২ জন পুরুষ ও ২৩৪ জন নারীসহ সর্বমোট ১০০৬ জন ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয়। সাম্প্রতিক সময়ে অবৈধভাবে ইউরোপে গমণের ক্ষেত্রে ভূমধ্যসাগরের নৌপথ ব্যবহƒত হয়ে আসছে। দেশী-বিদেশী বিভিন্ন সিন্ডিকেট এই অবৈধ গমনাগমণের সাথে যুক্ত রয়েছে। এই ঝুঁকিপূর্ণ পথে মাঝে মধ্যেই দূর্ঘটনা, প্রাণহানী ও হত্যার ঘটনা ঘটছে। অতিসম্প্রতি গত ২৮-২৯ জুন ২০২১ তারিখে অবৈধভাবে ইউরোপে গমণকালে ভূমধ্যসাগরের তিউনেশিয়া উপকূলে নৌকা ডুবিতে প্রায় ৪৩ জন নিহত/নিখোঁজ হয়। তিউনিসার উপকূল থেকে বিধ্বস্ত নৌকা হতে ৮৪ জনকে উদ্ধার করা হয়। তন্মধ্যে বাংলাদেশ, সুদান, মিশর, ইরিত্রিয়া ও চাঁদের নাগরিক রয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়। আজও ৪৯ বাংলাদেশী উদ্ধারের সংবাদ জানা গিয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকটি ঘটনায় ঝুঁকিপূর্ণ পথে গমনাগমন ও প্রাণহানীর ঘটনায় আন্তর্জাতিক ও দেশী মিডিয়ায় ব্যাপক নেতিবাচক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। বিগত সময়েও র‌্যাব এহেন বাংলাদেশী মানব পাচার চক্রের বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। এই চক্র প্রতারণার মাধ্যমে ও নিরীহ জনসাধারণ হতে বিপুল পরিমান অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। বর্ণিত প্রতারণার ঘটনার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশে ভিকটিমদের আতœীয়-স্বজন কর্তৃক বিভিন্ন সময়ে মামলা রুজু হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে নিখোঁজ হওয়া বেশ কয়েকটি পরিবারের পক্ষ থেকেও অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। (৩) নং গ্রেফতারকৃত উল্লেখিত ঘটনা সমূহের আলোকে র‌্যাব গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাহিকতায় গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ১০ জুলাই ২০২১ তারিখ রাত ১০০০ ঘটিকা হতে অদ্য ১১ জুলাই ২০২১ তারিখ সকাল ০৬০০ ঘটিকা পর্যন্ত র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-৮ এর যৌথ অভিযানে মাদারীপুর ও গোপালগঞ্জ এবং ঢাকার কেরানীগঞ্জ ও যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে যথাক্রমে ঃ (১) মোঃ আশিক (২৫), পিতা-মোঃ আক্তার হোসেন, গ্রাম-পারগেন্ডারিয়া, পোষ্ট-পারগেন্ডারিয়া, থানা-কেরানীগঞ্জ, জেলা-ঢাকা, (২) মোঃ আজিজুল হক (৩৫), পিতা-আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা, গ্রাম-চরনাচনা, পোষ্ট-চরনাচনা, থানা-মাদারীপুর সদর, জেলা-মাদারীপুর, (৩) মোঃ মিজানুর রহমান মিজান (৪৩), পিতা-মোজাম্মেল হোসেন, গ্রাম-চরনাচনা, পোষ্ট-চরনাচনা, থানা-মাদারীপুর সদর, জেলা-মাদারীপুর, (৪) নাজমুল হুদা (৩১), পিতা-ইদ্রিস মিনা, গ্রাম-পশ্চিম নওখোন্ডা, থানা-মোকসেদপুর, জেলা-গোপালগঞ্জ, (৫) সিমা আক্তার (২৩), স্বামী-মোঃ রুবেল মিয়া, গ্রাম-বড় ডাটারা, পোঃ ননিক্ষির, থানা-মোকসেদপুর, জেলা-গোপালগঞ্জ, (৬) হেলেনা বেগম (৪২) স্বামী-আক্তার হোসেন, গ্রাম-পারগেন্ডারিয়া, পোষ্ট-পারগেন্ডারিয়া, থানা-কেরানীগঞ্জ, জেলা-ঢাকা এবং (৭) পলি আক্তার (৪৩), স্বামী-আরব আলী, গ্রাম-বড়বাট্টা, পোষ্ট-নুনখির, থানা-মোকসেদপুর, জেলা-গোপালগঞ্জ’কে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতদের নিকট হতে উদ্ধার করা হয় ১৭টি পাসপোর্ট, ১৪টি বিভিন্ন ব্যাংকের চেক বই, ০২টি এটিএম কার্ড, ১৫টি বিভিন্ন ব্যাংকে টাকা জমা প্রদানের বই, ০২টি হিসাব নথি, ০২টি এনআইডি, ১০টি মোবাইল ফোন এবং নগদ ৫৬,৬৭০/- টাকা। (৪) নং গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, বিদেশে কর্মসংস্থানের প্রলোভন দেখিয়ে দীর্ঘদিন যাবত এই অপরাধের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে গ্রেফতারকৃতরা। এই সংঘবদ্ধ চক্রটি বিদেশী চক্রের যোগ সাজসে অবৈধভাবে ইউরোপে মানব পাচার করে আসছে। এই সিন্ডিকেটটি নিম্মোক্তভাবে ৩টি ধাপে কাজগুলো করত বলে জানা যায়ঃ(১) বিদেশে গমণেচ্ছুক নির্বাচন। (২) বাংলাদেশ হতে লিবিয়ায় প্রেরণ। (৩) লিবিয়া হতে ইউরোপ প্রেরণ। (৫) নং গ্রেফতারকৃত বিদেশে গমণ ইচ্ছুক নির্বাচন ঃ বিদেশে গমণেচ্ছুক নির্বাচনকালে এই চক্রের দেশীয় এজেন্টরা প্রত্যন্ত অঞ্চলের স্বল্প আয়ের মানুষদের অল্প খরচে উন্নত দেশে গমণের প্রলোভন দেখিয়ে আকৃষ্ট করে থাকে। ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় অনেকেই তাদের প্রস্তাবে সাড়া দেয়। এই বিদেশ গমণেচ্ছুকদের বিদেশে গমণের ক্ষেত্রে পাসপোর্ট তৈরি, ভিসা সংগ্রহ, টিকেট ক্রয় ইত্যাদি কার্যাবলী এই সিন্ডিকেটের তত্ত্বাবধানে সম্পন্ন হয়ে থাকে। পাসপোর্ট ও অন্যান্য নথিগুলো পাচার চক্রের নিয়ন্ত্রণে রেখে দেয়। পরবর্তীতে তাদেরকে এককালীন বা ধাপে ধাপে কিস্তি নির্ধারণ করে ইউরোপের পথে পাড়ি দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। সিন্ডিকেটের সদস্যরা প্রার্থীদের সামর্থ অনুযায়ী ধাপ নির্বাচন করে থাকে। ইউরোপ গমনের ক্ষেত্রে তারা ৭-৮ লক্ষ টাকার অধিক অর্থ নিয়ে থাকে; তন্মধ্যে সাড়ে ৪ লক্ষ-৫ লক্ষ টাকা লিবিয়ায় গমণের পূর্বে এবং বাকি ২.৫-৩ লক্ষ টাকা লিবিয়ায় গমণের পর ভিকটিমের আতœীয়-স্বজনের নিকট থেকে নেয়। (৬) নং গ্রেফতারকৃত বাংলাদেশ হতে লিবিয়ায় প্রেরণঃ গ্রেফতারকৃত সিন্ডিকেটটি বর্তমানে বাংলাদেশ হতে“মধ্যপ্রাচ্যের মাধ্যমে লিবিয়া” রুট ব্যবহার করছে। বাংলাদেশ হতে গমনের পর মধ্যপ্রাচ্যে তাদেরকে বিদেশী এজেন্টদের যোগসাজসে ৭/৮ দিন অবস্থান করানো হয়ে থাকে। বেনগাজীতে (লিবিয়া) প্রেরণের লক্ষ্যে বেনগাজী হতে এজেন্টরা কথিত “মারাকাপা” নামক একটি ডকুমেন্ট দুবাইতে প্রেরণ করে থাকে। যা লিবিয়াতে যাত্রার পূর্বে দুবাইয়ে অবস্থানরত ইউরোপ গমনাচ্ছুকদের নিকট হস্তান্তর করা হয়। অতঃপর উক্ত ডকুমেন্টসহ বিদেশী এজেন্টদের সহায়তায় তাদেরকে বেনগাজী লিবিয়ায় প্রেরণ করা হয়। অতঃপর তাদেরকে বেনগাজী হতে ত্রিপলীতে স্থানান্তর করে। যারা লিবিয়া পর্যন্ত অর্থ পরিশোধ করে থাকে তাদেরকে স্বল্প সময়ের মধ্যপ্রাচ্যে ট্রানজিট করিয়ে সরাসরি লিবিয়ায় পাঠানো হয়। এই চক্রের বাংলাদেশী সিন্ডিকেটের ‘রুবেল’ দুবাইতে অবস্থান করে এই সিন্ডিকেটের সমস্ত কার্যক্রম মনিটরিং করছে। (৭) নং গ্রেফতারকৃত লিবিয়া হতে ইউরোপ প্রেরণঃ ভিকটিমরা ত্রিপলীতে পৌঁছানোর পর লিবিয়া এজেন্টদের সহায়তায় “গাজী”, “কাজী” ও বাবুল নামের তিন জন বাংলাদেশী তাদের গ্রহণ করে। ভিকটিমদের ত্রিপলীতে বেশ কয়েকদিন অবস্থান করিয়ে থাকে। ত্রিপলীতে অবস্থানকালীন সময়ে সিন্ডিকেটটি বাংলাদেশে অবস্থানরত প্রতিনিধির দ্বারা ইউরোপ গমনাচ্ছুকদের আতœীয়-স্বজন হতে অর্থ আদায় করে থাকে। অতঃপর সিন্ডিকেট সদস্যদের নিকট অর্থের বিনিময়ে ইউরোপে পাচারের উদ্দেশ্যে তাদেরকে হস্তান্তর করা হয়। উক্ত সিন্ডিকেট তাদের নিয়ন্ত্রাধীন একটি নির্দিষ্ট স্থানে অবস্থান করিয়ে থাকে। অতঃপর উক্ত সিন্ডিকেট সমুদ্রপথ অতিক্রম করার জন্য নৌযান চালনা এবং দিক নির্ণয়যন্ত্র পরিচালনা সহ আনুসাঙ্গিক বিষয়ের উপর নানাবিধ প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। একটি নির্দিষ্ট দিনে ভোর রাতে এক সঙ্গে কয়েকটি নৌযান লিবিয়া হয়ে তিউনেশিয়া উপকূলীয় চ্যানেলের হয়ে ইউরোপের পথে রওনা দেয়। এভাবে ঝুঁকিপূর্ণ পথে গমণকালে ভিকটিমরা ভূমধ্যসাগরের মাঝে মধ্যেই দূর্ঘটনার শিকার হয় এবং জীবনাবসানের ঘটনা ঘটে থাকে। ভূমধ্যসাগরে নৌকায় উঠাকে তারা “গেম” বলে অবহিত করে থাকে। অর্থাৎ সেখানে ঝুঁকি আছে, আবার রয়েছে উন্নত জীবনের হাতছানি। (৮) নং গ্রেফতারকৃদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ভূমধ্যসাগরের বিগত কয়েকটি নৌকা ডুবি ও গুলি করে হত্যার ঘটনায় নিখোঁজ/নিহত বাংলাদেশীদের এই চক্র পাচার করেছে বলে । এ চক্রের মাধ্যমে অনেকে অবৈধপথে ইউরোপে গমনাগমন করেছে আবার অনেকেই প্রতারণার শিকার হয়েছে। এ চক্রের গ্রেফতারকৃতরা বাংলাদেশী চক্র “রুবেল” সিন্ডিকেট এর সদস্য বলে জানা যায়। (৯) নং গ্রেফতারকৃত “রুবেল সিন্ডিকেট” এর মূল হোতা রুবেল। সে দুবাইতে অবস্থান করে অবৈধ পাচার চক্রটি নিয়ন্ত্রণ করছে। গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, রুবেল ২০১২-২০১৭ সাল পর্যন্ত লিবিয়া অবস্থানের মাধ্যমে আন্তজার্তিক মানব পাচার চক্রের সাথে বিশেষ যোগসাজস হয়। গ্রেফতারকৃতরা জানায়, বর্তমানে বাংলাদেশ দূতাবাস, লিবিয়াতে মানব পাচার সংক্রান্ত রুবেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে বিধায় রুবেল দুবাইয়ে অবস্থান করে সিন্ডিকেটটি পরিচালনা করছে। রুবেল বাংলাদেশে তার পরিবারের সদস্য ও নিকট আত্মীয়-স্বজনের মাধ্যমে মূল নেটওয়ার্কটি পরিচালনা করছে। এ চক্রের কেন্দ্র বিন্দুতে জড়িত রয়েছে রুবেলের স্ত্রী গ্রেফতারকৃত সীমা, রুবেলের ভাগিনা গ্রেফতারকৃত আশিক, দুই বোন যথাক্রমে গ্রেফতারকৃত হেলেনা ও পলি। গ্রেফতারকৃত এই সদস্যরা পাসপোর্ট মুজুদ, সংগ্রহ ও অর্থ লেনদেনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।(১০) নং গ্রেফতারকৃত “রুবেল সিন্ডিকেট” এর বাংলাদেশে মানবপাচারকারীর মূল হোতা ও প্রধান সমন্বয়ক গ্রেফতারকৃত আশিক। সে বাংলাদেশ সিন্ডিকেটটি পরিচালনা করছে। গ্রেফতারকৃত আশিক এসএসসি পাস করে এইসএসসিতে অকৃতকার্য হয়। পরবর্তীতে ২ বছর মধ্যপ্রাচ্যে ছিল। ২০১৯ হতে সে ঢাকার কেরানীগঞ্জে অবস্থান করে অবৈধ মানব পাচারের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে। গ্রেফতারকৃত আশিক মূলত তার মামা রুবেল হতে ভিসা সংগ্রহ করে থাকে। তার মূল দায়িত্ব গমনাচ্ছুকদের বাংলাদেশ হতে দুবাই প্রেরণ করা। এ চক্রের বাংলাদেশী সিন্ডিকেট প্রায় ২০-২৫ জন সদস্য রয়েছে। চক্রটি বিগত প্রায় দুই বছর যাবত কার্যক্রম পরিচালনা করছে বলে গ্রেফতারকৃতরা জানায়।বাংলাদেশের মাদারীপুর, শরিয়তপুর, গোপালগঞ্জ ও ফরিদপুর ইত্যাদি এলাকায় চক্রটি বিশেষভাবে সক্রিয়। এছাড়া সিলেট, সুনামগঞ্জ, নোয়াখালী, বি-বাড়িয়াও তাদের এজেন্ট রয়েছে বলে জানায়। সাম্প্রতিক সময়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মানব পাচার বিরোধী অভিযান বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই চক্রটি বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পাসপোর্ট বহনের ক্ষেত্রে কৌশলগত কারনে সাধারণত কুরিয়ার সার্ভিস ব্যবহার করে থাকে। এই সিন্ডিকেট সদস্যদের বিভিন্ন ব্যাংকে বেশ কয়েকটি একাউন্ট আছে বলে জানা যায়। এছাড়া কয়েকজনের মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবসা রয়েছে। (১১) নং গ্রেফতারকৃত সদস্যদের মধ্যে আজিজ মোবাইল ব্যাংকিং ও ইলেকট্রনিক ব্যবসার সাথে জড়িত। সে মাদারীপুরের মাঠ পর্যায়ের বিদেশে গমণে ইচ্ছুকদের নির্বাচন করে থাকে। গ্রেফতারকৃত মিজান এসএসসি পাস ও ওয়ার্কশপ ব্যবসা রয়েছে। গ্রেফতারকৃত মিজান মাঠ পর্যায়ে এজেন্টের সাথে আঞ্চলিক এজেন্ট গ্রেফতারকৃত নাজমুলের সাথে সমন্বয় সাধন করে থাকে। গ্রেফতারকৃত নাজমুল হুদা বিএ পাস এবং মোবাইল ব্যাংকিং ও কসমেটিক্স ব্যবসা সাথে জড়িত। সে মাদারীপুর, শরিয়তপুর, মোকসেদপুর ও তদসংলগ্ন এলাকার আঞ্চলিক পর্যায়ের কার্যক্রম তদারকি করে থাকে। মূলত তারা বর্ণিত পেশার আড়ালে এহেন অবৈধ মানবপাচার চক্রের সাথে জড়িত।