ঢাকা : কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে নিজ বাড়ি থেকে স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত দেড়টার দিকে উপজেলার কয়া ইউনিয়নের কয়া আবাসন প্রকল্প থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহতরা হলেন, কয়া আবাসনের জামাল শেখের ছেলে সুমন শেখ (২৫) ও তার স্ত্রী সোনিয়া খাতুন (২০)।
রোববার সকালে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পারিবারিক কলহের জেরে তারা আত্মহত্যা করেছেন।
পুলিশ, আবাসনবাসী ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, তিন দিন পর আত্মীয়বাড়ি থেকে শনিবার সন্ধ্যায় নিজবাড়ি ফিরে আসেন সুমন ও সোনিয়া। স্বাভাবিকভাবে রাতে ঘুমিয়ে পড়েন তারা। এরপর রাত পৌনে ১২টার দিকে তাদের একমাত্র সন্তান সোহানের (৩) কান্না শুনতে পায় বাবা জামাল শেখ। পরে তিনি তাদের ঘরে গিয়ে ডাকাডাকি শুরু করে। ডাকে সারা না পেয়ে জানালা ভেঙে ফেলেন তিনি। এ সময় তিনি দেখেন, সুমন রশির সঙ্গে আঁড়ার ঝুলছে আর সোনিয়া উপুড় হয়ে চৌকিতে শুয়ে আছে।
এরপর তিনি চিৎকার শুরু করেন এবং ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন। পরে প্রতিবেশীরা ছুটে আসলে ঝুলন্ত সুমনকে নামানো হয় এবং পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। এরপর পুলিশ এসে লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে থানায় নিয়ে আসে এবং রোববার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।
তারা আরও জানায়, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে পারিবারিক কলহের জেরে সুমন গলায় রশি পেঁচিয়ে এবং তার স্ত্রী সোনিয়া বৈদ্যুতিক শক নিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
নিহত সুমনের বাবা জামাল শেখ বলেন, রাত পৌনে ১২টার দিকে নাতির কান্নার শব্দ শুনে ঘরের দিকে এগিয়ে যায়। গিয়ে দরজায় ধাক্কাধাক্কি ও ডাকাডাকি করি। সারা না দেওয়ায় ঘরের জানালা ভেঙে দেখি ছেলে ঘরের আঁড়ার সঙ্গে রশিতে ঝুলছে আর ছেলের বউ চৌকিতে পড়ে আছে। এরপর চিৎকার শুরু করলে আবাসনের লোকজন ছুটে আসে এবং ঘরের দরজা ভেঙে ওদের ঘরের বাইরে নিয়ে আনে। পরে স্থানীয় ডাক্তার এসে তাদের মৃত ঘোষণা করে এবং পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।
সোনিয়ার বাবা লিটন বলেন, মোবাইলে খবর পেয়ে রাতেই আবাসনে ছুটে আসি। এসে দেখি আমার মেয়েকে ঘরের বারান্দায় শুইয়ে রাখা হয়েছে আর জামাইকে চিকিৎসা করা হচ্ছে। শনিবার সন্ধ্যায় আত্মীয়বাড়ি বেড়ানো শেষে বাড়ি ফিরেছে। কীভাবে মারা গেছে জানি না। ময়নাতদন্ত করলেই আসল ঘটনা বেরিয়ে আসবে।
কয়া আবাসনের সভাপতি আজিবর রহমান বলেন, রাত ১২টার দিকে খবর পেয়ে দৌড়ে যায়। গিয়ে দেখি মেয়ের গলায় বৈদ্যুতিক তার আর ছেলেটি আঁড়ায় ঝুলছে।
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ একটি কক্ষ থেকে স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করেছে। রোববার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন হাতে পেলেই প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।